ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ক্যাম্পাস

জাবিতে সিনিয়রদের বিরুদ্ধে জুনিয়রকে চড়-থাপ্পড়ের অভিযোগ

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক | জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় | প্রকাশিত: ০৯:২১ পিএম, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) হলের কক্ষে রুমমেটদের ধূমপান করা, উচ্চস্বরে গান বাজানোসহ নানা উৎপাতের প্রতিবাদ করার ক্ষোভে জুনিয়রকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে কয়েকজন সিনিয়র শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে।

গত রোববার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনির্মিত শেখ রাসেল হলের ৮১৬ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। পরে মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) হল প্রাধ্যক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।

ভুক্তভোগী মো. মাহিবি রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের (৫০তম ব্যাচ) শিক্ষার্থী। অন্যদিকে অভিযুক্তরা হলেন কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের ৪৮তম ব্যাচের প্রিতম সাহা ও প্রকাশ মিত্র, নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের ৪৮তম ব্যাচের মাহবুব রহমান উৎসব, নৃবিজ্ঞান বিভাগের ৪৮তম ব্যাচের মির্জা তৌফিক রায়হান এবং পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের ৪৯তম ব্যাচের মুশফিকুর রহমান পরশ। তারা সবাই শেখ রাসেল হলে অবস্থান করেন। এদের মধ্যে প্রিতম ও প্রকাশ ভুক্তভোগী মাহিবির রুমমেট।

লিখিত অভিযোগে ভুক্তভোগী উল্লেখ করেন, হলের ৮১৬ নম্বর কক্ষে পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের ৫০তম ব্যাচের দুইজন ও সিএসই বিভাগের ৫০তম ব্যাচের দুইজনকে বরাদ্দ দেওয়া হয়। তবে হল চালু হওয়ার পর সিএসই বিভাগের ১৫ থেকে ২০ জন শিক্ষার্থী ওই কক্ষে গিয়ে পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের দুইজনকে অন্য কক্ষে উঠতে বলেন। তখন তারা অন্য কক্ষে যেতে অস্বীকৃতি জানান। পরে সিএসই বিভাগের দুজনকে অন্য কক্ষে পাঠিয়ে একই বিভাগের ৪৮তম ব্যাচের প্রিতম সাহা ও প্রকাশ মিত্র ৮১৬ নম্বর কক্ষে ওঠেন। এরপর থেকে প্রিতম ও প্রকাশ নিয়মিত কক্ষে ধূমপান করে আসছেন। এছাড়া অন্য কক্ষের বন্ধুদের ডেকে এনে কার্ড খেলা, রাতভর সাউন্ডবক্সে গান বাজানো ও মাদক সেবন করেন যাতে বিরক্ত হয়ে পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের দুইজন ওই কক্ষ ছেড়ে দেন।

অভিযোগে আরও বলা হয়, গত সোমবার রাতে ইউটিউবে ভিডিও দেখে অ্যাসাইনমেন্ট করছিলেন মাহিবি। এসময় প্রিতম সাহা তাকে হেডফোন ব্যবহার করতে বললেও আগের ক্ষোভের ফলে তিনি কথা শোনেননি। তখন প্রিতম সাহা অভিযুক্ত অন্য তিনজনকে তাদের কক্ষে ডেকে আনেন। কক্ষে ঢুকেই মাহিবিকে দুটি থাপ্পড় মারেন মুশফিকুর রহমান পরশ। পরে উৎসব গালিগালাজ করে তাকে আরও দুটি থাপ্পড় মারেন। এছাড়া এ বিষয়ে কোথাও অভিযোগ করলে অবস্থা আরও খারাপ হবে বলে হুমকি দেন। এমনকি তারা হলের প্রাধ্যক্ষকে গালিগালাজ করেন।

ভুক্তভোগী মো. মাহিবি রহমান বলেন, আমাদের পরীক্ষা ও অ্যাসাইনমেন্ট থাকলেও তারা কক্ষে ধূমপান ও উচ্চস্বরে গান বাজান। আমরা প্রতিবাদ করলেও তারা কর্ণপাত করেন না। তাদের খারাপ ব্যবহার ও হুমকির জন্য আমরা সবসময় মানসিক যন্ত্রণায় থাকি। আমাদের পরীক্ষার আগের দিন তারা ইচ্ছাকৃতভাবে বন্ধুবান্ধবকে ডেকে এনে সাউন্ডবক্সে গান বাজান ও বিরক্ত করেন। তাই সেদিন আমাকে হেডফোন ব্যবহার করতে বললেও আমি শুনিনি। ফলে তারা অন্য বন্ধুদের ডেকে এনে আমাকে মারধর করেন।

এদিকে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে মুশফিকুর রহমান পরশ বলেন, একসঙ্গে খেলাধুলা করার কারণে প্রিতম ভাইয়ের সঙ্গে আমাদের ভালো সম্পর্ক ছিল। গতকাল রাতে ভাই যখন জানালেন যে তার জুনিয়র রুমমেট কথা শুনছে না, তখন আমরা গিয়ে তাকে বুঝিয়েছি ও সতর্ক করেছি। তার গায়ে হাত তোলার মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি।

আরেক অভিযুক্ত প্রিতম সাহা বলেন, মাহিবির আচরণে যথেষ্ট সমস্যা ছিল। আমরা রুমে ধূমপান করি এটা সত্য, তবে মাদক সেবন করি না। জোরে শব্দ হওয়ায় তাকে হেডফোন ব্যবহার করতে বলি। সে না শোনায় আমার বন্ধুরা তাকে উচ্চস্বরে ধমক দিয়েছে। তবে তাকে একদমই মারধরের ঘটনা ঘটেনি।

এ বিষয়ে হলের প্রাধ্যক্ষ তাজউদ্দিন শিকদার বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। হলের ওয়ার্ডেন ও অন্য কর্মকর্তাদের বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি। মারধরের ঘটনা ঘটলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মাহবুব সরদার/এমআরআর/এমএস