নোবিপ্রবির উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারের পদত্যাগ দাবিতে ভিসির বাসভবন ঘেরাও করে জুতা মিছিল করেছে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
রোববার (১৮ আগস্ট) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ‘স্টেপ ডাউন ভিসি’ কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী অংশ নেয়।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক জাহিদুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর তার দোসর নোবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. দিদার-উল-আলম, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুল বাকি ও রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিনের পদত্যাগ দাবিতে গত দুই সপ্তাহ ধরে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করে আসছে। এর মধ্যে তাদের ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণার পরও পদত্যাগ করেনি। আমরা তাদের পদত্যাগের দাবিতে আজ ‘স্টেপ ডাউন ভিসি’ কর্মসূচি পালন করা হয়।

এর আগে সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছে সাধারণ শিক্ষকরা। এতে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারের পদত্যাগ দাবি করেছে তারা। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের হুমকি দেন শিক্ষকরা।
বিবৃতির বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ফার্মেসি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম ও অ্যাপ্লাইড ম্যাথমেটিকস বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হানিফ।
এতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ প্রশাসন উপাচার্য অধ্যাপক ড. দিদার-উল-আলম, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুল বাকি, রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন গত তিন সপ্তাহ ধরে ক্যাম্পাসে অনুপস্থিত। তারা বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সময় পাশে না থেকে উল্টো অসহযোগিতা ও হয়রানি করেছেন। এমনকি সরকারের পক্ষে থাকার জন্য শত শত শহীদের রক্ত মাড়িয়ে তারা মাসব্যাপী শোকের কর্মসূচিও ঘোষণা করেন। তাই এসব কর্মকর্তা বর্তমান পদে থাকার কোনো যৌক্তিকতা নেই।
অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হানিফ জাগো নিউজকে বলেন, প্রশাসনের তিন কর্মকর্তার পদত্যাগে শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবিকে শিক্ষকরা পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছে। আমরা মনে করি বিগত সরকারের দালালি করা ভিসি প্রোভিসি ও রেজিস্ট্রারের এখনই পদত্যাগ করা উচিত। নৈতিকভাবে তাদের এ পদে থাকার কোনো সুযোগ নেই।
অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেন, শিক্ষকদের সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. দিদার-উল-আলম, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুল বাকি, রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন পদত্যাগ না করলে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সবাইকে সঙ্গে নিয়ে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
এর আগে গত ১০ আগস্ট (শনিবার) বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুরসহ নয় প্রক্টর পদত্যাগ করেন। অন্যদিকে রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিনকে ওএসডি করে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে সংযুক্ত করা হয়েছে। তবুও এ রেজিস্ট্রারের পদত্যাগ নিশ্চিত করতে চান শিক্ষার্থীরা।
এসব বিষয়ে জানতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. দিদার-উল-আলম, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুল বাকিকে বারবার ফোন দেওয়া হলেও তারা রিসিভ করেননি।
ইকবাল হোসেন মজনু/আরএইচ/জিকেএস