জোড়াতালির ব্রিজে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার
ছবি: ভবানীপুর-চাঁদপুরা সংযোগের জরাজীর্ণ ব্রিজ
ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার নাচনমহল ইউনিয়নে ৩০ বছর আগে নির্মিত ভবানীপুর-চাঁদপুরাসহ চার ইউনিয়নের সংযোগস্থল আয়রন ব্রিজটির এখন বেহাল দশা। দুই যুগ পেরিয়ে গেলেও জরাজীর্ণ ব্রিজটি সংস্কারে কোনো উদ্যোগ নেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। বর্তমান পরিস্থিতিতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেতুটি পার হচ্ছে সাধারণ মানুষ।
স্থানীয়রা জানান, নাচনমহল ইউনিয়নের ভবানীপুর এবং চাঁদপুরা গ্রামের খোকন হাওলাদারের বাড়ি সংলগ্ন খালের ওপর ৩০ বছর আগে আয়রন ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়। নির্মাণের বেশ কয়েকবছর পর বন্যার পানির চাপে ব্রিজের ওপর দুই পাশে সিমেন্টের তৈরি পাটাতন ধসে পড়ে ও লোহার খুঁটিগুলো বাঁকা হয়ে যায়। সিমেন্টের পাটাতনের স্থানে কাঠের পাটাতন দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে, সেগুলোও বাঁকা হয়ে ফাঁকা হয়ে আছে। বর্তমানে স্থানটি মরণফাঁদে রূপ নিয়েছে।
এলাকাবাসীর আশঙ্কা, যেকোনো মুহূর্তে ব্রিজটি ধসে প্রাণহানিসহ বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তবে বিকল্প কোনো যাতায়াত পথ না থাকায় ঝুঁকি জেনেও শিশু শিক্ষার্থীসহ সব বয়সী লোকজন ব্রিজটি ব্যবহার করছেন। ব্রিজের চাঁদপুরা অংশে অবস্থিত চাঁদপুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ভবানিপুর অংশে ভবানিপুর আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, জামে মসজিদ, সনাতনী ধর্মাবলম্বীদের মন্দির এবং ঐতিহ্যবাহী ভবানিপুর বাজার।
চাঁদপুরা গ্রামের বাসিন্দা রাকিব হাসান বাবু বলেন, ভাঙা ব্রিজটি নিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের (চেয়ারম্যান) তেমন কোনো তৎপরতা নেই। দুই পাশের নড়বড়ে রেলিং ধরে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমাদের পারাপার হতে হয়। কখন যেন ভাঙা সিমেন্টের পাটাতনের মধ্যে পা আটকে যায়।

ভবানিপুর গ্রামের সজিব হাওলাদার জানান, ব্রিজটিতে মানুষ উঠলে কখনো ডানে অথবা কখনো বামে কাঁত হয়ে যায়। ব্রিজটি মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরের কোনো মাথাব্যথা নেই। ১০-১৫ বছর ধরে শুনছি ব্রিজটি মেরামত করা হবে। কিন্তু কবে তা শুরু হবে, কেউ বলতে পারে না।
স্থানীয় সমাজসেবক ও বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার মো. রুবেল মোল্লা বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ আয়রন ব্রিজটি সংস্কার না হওয়ায় জেলা শহরসহ ৪ ইউনিয়নের মানুষ ভোগান্তিতে আছে। জনগণের স্বার্থে ব্রিজটি সংস্কার জরুরি।
ইউপি সদস্য মো. নান্না মিয়া হাওলাদার জানান, বন্যায় যখন ব্রিজটি ক্ষতিগ্রস্ত হয় তার কিছুদিন পর আমি ও এলাকাবাসী টাকা তুলে কিছুটা মেরামত করি। সেটাও বেশিদিন টেকেনি। মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে এ ব্রিজ দিয়ে মানুষ চলাচল করে।
নাচনমহল ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. শাহ আলম খোকন বলেন, ভবানিপুর-চাঁদপুরা গ্রামের সংযোগস্থলে নির্মিত ব্রিজটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ ব্রিজটি দিয়ে নলছিটি উপজেলার ৪টি ইউনিয়নসহ জেলা শহরের সঙ্গে যোগাযোগ খুবই সহজ। কিন্তু এটা চলাচলের অনুপযোগী হয়ে আছে। উপজেলা প্রকৌশলী ভিজিট করে গেছেন। আমরা আশা করি কর্তৃপক্ষ অচিরেই এ সমস্যার সমাধান করবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী মো. ইকবাল কবীর বলেন, ব্রিজটির অবস্থা বেহাল, সেটা আমরা জানি। সরেজমিনে পরিদর্শন করেছি। সংস্কারের জন্য প্রক্রিয়াধীন আছে।
মো. আতিকুর রহমান/এফএ/জেআইএম