রোগীতে ঠাসা, শয্যার অভাবে বারান্দায় চিকিৎসা
শয্যা সংকটে বারান্দায় চিকিৎসা নিচ্ছেন রোগীরা/ছবি-জাগো নিউজ
পটুয়াখালী ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, ডেঙ্গুসহ বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাবে রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। বর্তমানে ধারণক্ষমতার তিনগুণ বেশি রোগী ভর্তি রয়েছে হাসপাতালে। রোগী সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। শয্যা সংকটে রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বারান্দায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, শিশু ওয়ার্ডে ৪০ শয্যার স্থলে ভর্তি রয়েছে ১৩০ জনের বেশি শিশু। একেকটি শয্যায় ৩-৪ চারজন করে শিশু শুয়ে আছে। শয্যা না পেয়ে অনেকে বারান্দা, এমনকি চলাচলের রাস্তাতেও অবস্থান করছে।
একই চিত্র মেডিসিন ওয়ার্ডেও। দেড় শতাধিক রোগী ভর্তি রয়েছে সেখানে। যা শয্যা সংখ্যার দ্বিগুণেরও বেশি।

রোগীর স্বজন মিনহাজ উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘গতকাল হাসপাতালে এসেছি, কিন্তু থাকাটাই এখন কষ্টকর। জায়গা নেই, ডাক্তার নেই। একটি বেডে চারটি শিশু নিয়ে থাকতে হচ্ছে। চরম ভোগান্তির মধ্যে আছি।’
আমতলী থেকে আসা রফিক মিয়া বলেন, ‘তালই অসুস্থ হয়ে পড়ায় হাসপাতালে এনেছি। কিন্তু বারান্দার পাশে চলাচলের রাস্তায় বিছানা করতে হয়েছে। দুই দিনে মাত্র একবার ডাক্তার এসেছেন। সারাদিন শুধু স্যালাইন চলছে। গরমে দম বন্ধ হয়ে আসছে।’
উপজেলার ছোট বিঘাই ইউনিয়নের বাসিন্দা রহিমা বেগম। তার সন্তান জ্বরে আক্রান্ত। এজন্য হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছেন। তবে শয্যা সংকটে অনেক কষ্ট করে থাকছেন তিনি।
রহিমা বেগম জাগো নিউজকে বলেন, ‘এক বেডে তিন চারজন করে থাকতে হচ্ছে। এতে অনেক কষ্ট হচ্ছে।’
ডিবুয়াপুর ইউনিয়নের সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘এখানের অনেকেই বেড পাননি। বারান্দায় ঠাসাঠাসি করে থাকছেন। সবাই মানবতা দেখিয়ে এক বেডে ৩-৪ জন থাকছেন। তবে এভাবে থাকা উচিত না। সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।’

পটুয়াখালী শহরের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা হেলেনা বেগম। তিনিও শয্যা পাননি। বারান্দায় থাকছেন। হেলেনা বেগম বলেন, ‘ছেলেকে নিয়ে এসেছি। বেড না পেয়ে ময়লা-আবর্জনার মধ্যে থাকছি।’
সদর উপজেলার ট্যাংরাখালি গ্রামের মসজিদ মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, ‘সকালে হাসপাতালে এসেছি। তবে এখন পর্যন্ত কোনো বেড পাইনি। বারান্দায় খুব কষ্টে আছি। গরমে জান বের হয়ে যাচ্ছে।’
এ বিষয়ে পটুয়াখালী ২৫০ শয্যা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. দিলরুবা ইয়াসমিন লিজা বলেন, আমাদের পক্ষে সীমিত জনবল আর অবকাঠামো দিয়ে এই বিশাল চাপ সামলানো কষ্ট। তারপরও রোগীদের সেবা দিতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।’
মাহমুদ হাসান রায়হান/এসআর/জিকেএস