ময়মনসিংহ
সবজিতে ৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে, কমেছে মাছের দাম
সপ্তাহের ব্যবধানে ময়মনসিংহে বেশিরভাগ সবজির দাম বেড়েছে। তবে কমেছে মাছের দাম। কোনো কোনো মাছের দাম কেজিতে ১০ টাকা পর্যন্ত কমেছে।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) সকালে ময়মনসিংহের মেছুয়া বাজারে গিয়ে এ তথ্য জানা যায়।

ক্রেতা-বিক্রেতারা জানিয়েছেন, গত সপ্তাহ কাঁচামরিচ ১২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। অথচ এক লাফে কেজিতে ৫০ টাকা বেড়েছে কাঁচামরিচের দাম। কাঁচামরিচ এখন ১৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। ঢ্যাঁড়সে দাম কেজিতে বেড়েছে ৩০ টাকা। গত সপ্তাহ ঢ্যাঁড়স ৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। তবে এখন বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। দেশি গাজর, করলা, ধুন্দল, চিচিঙ্গার দামও বেড়েছে। গত সপ্তাহ দেশি গাজর ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হলেও এখন ৮০ টাকা, করলা ৬০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ৮০ টাকা, ধুন্দল ৩০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ৫০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ৫০ ও লতা ৩০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া অপরিবর্তিত অবস্থায় চায়না গাজর ১৪০ টাকা, ঝিঙা ৫০ টাকা, বরবটি ৫০ টাকা, শসা ৪০ টাকা, বেগুন ৫০ টাকা, পটোল ৪০ টাকা, কাঁকরোল ৫০ টাকা, টমেটো ১৪০ টাকা, মিষ্টি লাউ ২০ টাকা, কাঁচা পেঁপে ২০ টাকা, লতা ৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। লাউ ৬০ টাকা পিস, কাঁচকলা ৩০ টাকা হালি ও লেবু ১০ টাকা হালিতে বিক্রি হচ্ছে।

একই বাজারে মাছের জাত ও আকার বেধে কেজিতে দাম কমেছে ১০ টাকা। গত সপ্তাহ তেলাপিয়া ১৭০-২৫০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ১৬০-২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া সিলভার কার্প ২২০-২৭০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ২১০-২৬০ টাকা, মৃগেল ২৬০-৩১০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ২৫০-৩০০ টাকা, কাতলা ৩১০-৩৭০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ৩০০-৩৬০ টাকা, কালবাউশ ২৯০-৩৫০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ২৮০-৩৪০, রুই ২৮০-৩৮০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ২৭০-৩৭০ টাকা, পাঙাশ ১৮০-২২০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ১৭০-২১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
অপরিবর্তিত অবস্থায় শোল ৫৪০-৮২০ টাকা, ট্যাংরা ৪৮০-৮০০ টাকা, গুলশা ৫৫০-১০০০ টাকা, টাকি ৪০০-৫৫০ টাকা, শিং ২৮০-৫৭০ টাকা, কৈ ২৩০-৩২০ টাকা, ট্যাংরা ৪৮০-৮০০ টাকা, গুলশা ৪০০-১০০০ টাকা ও পাবদা ৩২০-৪৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে ব্রয়লার মুরগি, কক মুরগি, ফার্মের মুরগির ডিম, দেশি মুরগির ডিম, খাসির মাংস ও গরুর মাংস অপরিবর্তিত অবস্থায় বিক্রি হলেও হাঁসের ডিম হালিতে ৫ টাকা বেড়েছে। ব্রয়লার মুরগি ১৫০ টাকা কেজি, কক মুরগি ৩০০ টাকা কেজি, ফার্মের মুরগির ডিম ৪০ টাকা হালি, দেশি মুরগির ডিম ৭০ টাকা হালি, খাসির মাংস ১০০০ টাকা কেজি ও গরুর মাংস ৭৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহ হাসের ডিম ৬৫ টাকা হালিতে বিক্রি হলেও এখন ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ব্যাগ হাতে ঘুরে ঘুরে সবজি কিনছিলেন শওকত আলী। এসময় কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘বাজারে সবজির প্রচুর সরবরাহ রয়েছে। এর পরও বিক্রেতারা দাম বাড়িয়েছেন। বেশিরভাগ সবজির দাম বাড়ানো হয়েছে। ফলে প্রয়োজনের তুলনায় সবজি কম কিনতে হচ্ছে।’

মাছ কিনতে আসেন মোর্শেদ মিয়া। তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি মাছের দাম কেজিতে বেশি বাড়িয়ে এখন সামান্য কমানো হয়েছে। বিক্রেতারা ইচ্ছে করেই দাম বেশি বাড়িয়ে কিছুদিন পর সামান্য কমিয়ে দেন। এভাবে ক্রেতাদের ঠকিয়ে তারা নিজেদের পকেট ভারী করেন। বাজারে নিয়মিত অভিযান না চালানোয় বিক্রেতারা ইচ্ছামত দামে বিক্রি করতে পারছেন।’
দাম বাড়ার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে সবজি বিক্রেতা মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘বাজারে সবজির পরিমাণ বেশি মনে হলেও ক্রেতাদের চাহিদার তুলনায় সবজির সরবরাহ কম। পাইকাররা খুচরা বিক্রেতাদের কাছে দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছেন। ফলে আমরাও বাধ্য হয়ে ক্রেতাদের কাছে বেশি দামে বিক্রি করছি।’
মাছ বিক্রেতা লিটন মিয়া বলেন, ‘মাছের দাম কেজিতে ১০ টাকা কমেছে। সরবরাহ আরও বাড়লে দাম আরও কমে আসবে। ভালো বেচাকেনা হওয়ায় আমরা খুশি। দামে ক্রেতারা অসন্তুষ্ট হয়েছে বলে আমার মনে হয় না। কারণ, মাছ প্রচুর বিক্রি হচ্ছে।’
এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ময়মনসিংহের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুস ছালাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘বাজার নিয়মিত মনিটরিং করা হচ্ছে। বাজারগুলোতে অভিযান চালানো শুরু হবে।’
কামরুজ্জামান মিন্টু/আরএইচ/জিকেএস