নওগাঁয় পৃথক মামলায় দুজনের মৃত্যুদণ্ড, দুজনের যাবজ্জীবন
নওগাঁয় পৃথক মামলায় দুজনের মৃত্যুদণ্ড ও দুজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তদের এক লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয়মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মেহেদী হাসান তালুকদার এ রায় দেন। এসময় মৃত্যুদণ্ড ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, মিশু (১৯) ও পিংকি (৩০)। এ মামলায় দুই আসামি হুজাইফা ও সাজু আহমেদের বয়স ১৮ না হওয়ায় তাদের ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, মোরশেদ (৩৫) ও রবিউল (৩৮)। এ মামলায় সুলতানা পারভিন নামে এক নারীকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের ৭ নভেম্বর নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার খাদাইল গ্রামের নাজমুল নামের এক স্কুলছাত্রকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে অপহরণ করা হয়। পরে তার বাবার কাছে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন কয়েকজন যুবক। টাকা না পেয়ে পরদিন আসামিরা নাজমুলকে হত্যা করে প্লাস্টিকের বস্তায় ভরে আক্কেলপুর রেলগেটের পাশে ডোবায় ফেলে দেয়। পরে নাজমুলের বাবা বদলগাছী থানায় মামলা করলে তদন্ত শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। ২০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বৃহস্পতিবার দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড দেন বিচারক। একই সঙ্গে তাদের ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এ মামলার আরও দুজনকে ১০ বছর করে সাজা দেন।
এদিকে একই আদালত ২০১০ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি মান্দা উপজেলার চকদেবীরাম গ্রামের এক তরুণীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করে রবিউল ইসলাম। এসময় তিনি মোবাইলে ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করেন। পরে ওই মেয়েকে রবিউল বিয়ে না করলে পরিবার তাকে অন্য জায়গায় বিয়ে দিলে রবিউল ওই মেয়ের স্বামীর কাছে ধর্ষণের ভিডিও পাঠায়। সে ভিডিও ও ছবি দেখে ওই তরুণীকে তালাক দেন তার স্বামী। কিছুদিন পর ঢাকার বিক্রমপুরে ওই তরুণীর দ্বিতীয় বিয়ে হলে রবিউল তার দ্বিতীয় স্বামীর কাছেও সেই ভিডিও পাঠায়। তখন তার দ্বিতীয় স্বামী আইনি পরামর্শের কথা বলে ওই মেয়েকে তার বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেন।
পরে ওই তরুণী ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দিলে পুলিশ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগে সংশ্লিষ্টতা থাকার রিপোর্ট প্রদান করেন। দীর্ঘদিন ধরে চলা এ মামলায় ১২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে মোরশেদ এবং রবিউল ইসলামকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত। একইসঙ্গে তাদের ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে ছয়মাসের কারাদণ্ড দেন। মামলায় সুলতানা পারভিন নামে আরেক আসামির অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত তাকে খালাস দেন।
আরমান হোসেন রুমন/আরএইচ/জিকেএস