ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

প্রেমিকার বিয়ের দিনে প্রেমিকের ‘রহস্যজনক’ মৃত্যু

জেলা প্রতিনিধি | নড়াইল | প্রকাশিত: ১১:১৯ এএম, ০২ আগস্ট ২০২৫

নড়াইলের লোহাগড়ায় প্রেমিকার বিয়ের দিনে সৈয়দ মাসুম বিল্লাহর (২০) যুবকের ‘রহস্যজনক’ মৃত্যু হয়েছে।

শুক্রবার (১ আগস্ট) বেলা ১১টার পর গোপালগঞ্জ ও নড়াইলের সীমান্তবর্তী কাশিয়ানী এলাকার মধুমতি সেতু থেকে অচেতন অবস্থায় তাকে পাওয়ার পর প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

জানা যায়, অচেতন অবস্থায় মাসুমকে উদ্ধার করেন সুজন নামে এক অটোরিকশার চালক। পরে তাকে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান ওই চালক। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় নেওয়ার প্রস্তুতিকালে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মাসুম মারা যান।

মাসুম বিল্লাহ লোহাগড়া উপজেলার শালনগর ইউনিয়নের মাকড়াইল (মধ্যপাড়া) গ্রামের মৃত সৈয়দ রকিবুল ইসলামের ছেলে।

জানা যায়, মাসুমের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছিল আঘাতের চিহ্ন ছিল। বাম হাতের একটি আঙুলের নখ তুলে নেওয়া হয়েছে। পরিবারের দাবি এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।

স্বজনরা জানান, উপজেলার লাহুড়িয়া ইউনিয়নের এক কিশোরীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল মাসুমের। পারিবারিকভাবে মেনে না নেওয়ায় তাদের সম্পর্কে ভাটা পড়ে। এরমধ্যে বুধবার (৩০ জুলাই) মাসুম এলাকা ছেড়ে ঢাকায় কাজের সন্ধানে বড় বোনের বাসায় গিয়ে ওঠেন। প্রেমিকার বিয়ের খবরে শুক্রবার (১ আগস্ট) সকাল ৬টার পর লোহাগড়া পৌঁছান মাসুম। সকাল ৯টার দিকে চাচাতো ভাই তরিকুল মোবাইলফোনে কল করে জানতে পারেন মাসুম লোহাগড়ায়। তরিকুল তাকে অনুরোধ করেন বাড়িতে ফেরার জন্য। এরপর পরিবারের সঙ্গে আর কোনো যোগাযোগ হয়নি মাসুমের।

এদিকে খবর পেয়ে লোহাগড়া থানার পুলিশ সদস্যরা মাসুমের মরদেহ হেফাজতে নিয়েছেন। এরপর রহস্যজনক এ মৃত্যু নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়, প্রশ্ন ওঠে দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু নাকি হত্যা?

অটোরিকশাচালক সুজন জানান, ঘটনাস্থলে দুর্ঘটনার কোনো চিহ্ন দেখিনি। জিজ্ঞেস করছিলাম, আশপাশের কোনো মানুষ দুর্ঘটনার কথা শোনেননি। সুজনের মতে, মাসুমের আহত শরীর দেখে মনে হয়েছে সম্ভবত তাকে কেউ গাড়ি থেকে ফেলে রেখে গেছে।

এদিকে মাসুম সকালে ঢাকা থেকে ফিরে প্রেমিকার বিয়ে আটকানোর চেষ্টা করেছিল বলে জানিয়েছেন চাচা শরিফুল ইসলাম। এ কারণে তাকে হত্যা করা হতে পারে বলে ধারণা তার।

তিনি বলেন, গ্রামের সাইফুল মোল্যার কাছে প্রেমিকার বাবা সকালে ফোন দিয়ে জানান মাসুম ঝামেলা করছে। তার ছেলেপেলেরা মাসুমকে পেলে অবস্থা খারাপ হবে। আমরা খবর পাই মানিকগঞ্জ বাজারের এক পার্লারে প্রেমিকার সঙ্গে মাসুম দেখা করে কথা বলেছে। ওইদিকে হুমকির খবরে আমরা মাসুমকে খুঁজতে বের হই, কিন্তু তার ফোন বন্ধ ছিল। পরে হাসপাতাল থেকে একজন ফোন করে তার খবর জানান।

শরিফুল ইসলামের মতে, বড় গাড়িতে অ্যাক্সিডেন্ট হলে হাত-পা অক্ষত থাকার কথা না। তার মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন ছিল, তার বাম হাতের একটা আঙুলের নখ উপড়ে ফেলা হয়েছে। পরিকল্পিতভাবে প্রেমিকার পরিবারের সদস্যরা মাসুমকে হত্যা করেছে।

এ ঘটনায় মাসুমের প্রেমিকার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, আমরা মাসুম বিল্লাহকে মৃত অবস্থায় লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে থানায় নিয়ে আসি। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, তিনি দুর্ঘটনায় নিহত হন। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নড়াইল সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।

হাফিজুল নিলু/এমএন/এমএস