ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

পূজার ছুটিতে ভোগাবে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক

নাজমুল হুদা | রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) | প্রকাশিত: ০৪:২৫ পিএম, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ অংশে প্রতিদিনই তৈরি হচ্ছে থেমে থেমে যানজট। এতে প্রতিনিয়ত দুর্ভোগ মাথায় নিয়ে মহাসড়কের এ অংশ পাড়ি দিচ্ছেন যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকরা। এ অবস্থা চলমান থাকলে আসন্ন শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে টানা চার দিনের সরকারি ছুটিতে ঘরমুখী মানুষের চাপে ভয়াবহ যানজটের শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

এই সড়কে নিয়মিত চলাচলকারী যানবাহনের চালক ও যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কাঁচপুর থেকে ভুলতা গাউছিয়া পর্যন্ত প্রায় ১২ কিলোমিটার অংশে থেমে থেমে প্রতিনিয়তই যানজট দেখা দিচ্ছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে বসে থেকে নাকাল এই সড়কে চলাচলকারীরা। সড়কের বিভিন্ন অংশে খানাখন্দ ও গর্তে গাড়ি আটকে যাওয়া, যত্রতত্র যাত্রী ওঠানামা করাসহ বিভিন্ন কারণে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে।

পূজার ছুটিতে ভোগাবে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের রূপগঞ্জ অংশে যানজটের নেপথ্যে রয়েছে পাঁচটি স্পট। যেখান থেকে প্রতিদিনই থেমে থেমে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। এরমধ্যে অন্যতম যানজট সৃষ্টিকারী স্পট হচ্ছে বরাবো বাসস্ট্যান্ড। সড়কের খানাখন্দ আর উভয় দিকের লিংক রোডের মুখে লেগুনা, ইজিবাইক ও রিকশার জটের কারণে যানজট হচ্ছে। রূপসি বাসস্ট্যান্ডে কাঞ্চন সড়কে শত শত মালবাহী ট্রাক, অটোরিকশা মহাসড়কে ঢুকছে ও বের হচ্ছে। এতে মহাসড়কে চলাচলকারী যানবাহনগুলো আটকা পড়ে সৃষ্টি হচ্ছে যানজট।

মহাসড়কের বরপা বাসস্ট্যান্ডে বরপা-মহজমপুর সড়কের মুখে ১০০ গজের ভেতর ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের প্রবেশমুখ বন্ধ করে গড়ে উঠেছে কয়েকটি স্ট্যান্ড। মহাসড়কের লিংক রোডের পশ্চিম পাশে লেগুনা স্ট্যান্ড, বরপা-মহজম সড়কের মুখে দুপাশ দখল করে গড়ে উঠেছে ইজিবাইক স্ট্যান্ড। পাশাপাশি বিভিন্ন পরিবহনের স্টপেজের কারণেও থেমে যানজট তৈরি হচ্ছে।

পূজার ছুটিতে ভোগাবে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক

আউখাব এলাকায় কয়েকটি পোশাক কারখানার শ্রমিক পারাপারে দিনে ৪-৫ বার মহাসড়ক আটকে দেওয়া হয়। এখান থেকে যানজট সৃষ্টি হয়ে মাঝেমধ্যেই মাইলের পর মাইল বিস্তৃত হয়। গোলাকান্দাইল থেকে ভুলতা গোলচত্বর পর্যন্ত মহাসড়কের অনেকটা জায়গা দখল করে হকাররা অস্থায়ীভাবে ব্যবসার পসরা বসানোয় সারাদিনই এখানে লেগে থাকে যানজট। এসব স্পট থেকে হরহামেশাই যানজট সৃষ্টি হয়ে কাচপুর থেকে ভুলতা গাউছিয়া পর্যন্ত তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।

এই সড়কে প্রায় ১০ বছর ধরে বাস চালান জাকির হোসেন। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‌‘রূপগঞ্জ অংশের ভুলতা গাউছিয়া থেকে কাচপুর এলাকায় এলেই আর গাড়ি চালাতে ইচ্ছে হয় না। খানাখন্দ আর অব্যবস্থাপনার কারণে এমন কোনো দিন নেই এখানে ৩০ মিনিট থেকে এক ঘন্টার আগে বাস নিয়ে যেতে পেরেছি।’

আরও পড়ুন
রাজধানীর ৭০ মোড়ে পরিবর্তন, গতি ফিরছে সড়কে
শেরপুর শহরজুড়ে ইজিবাইক ভোগান্তি

তিনি বলেন, ‘সামনে দুর্গাপূজার ছুটি যাত্রী পারাপারে যানবাহনের চাপও বাড়বে। তখন আরও বেশি জ্যাম থাকবে। এতে আরও বেশি ভোগান্তির শঙ্কা রয়েছে। তাই পূজার আগেই ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।’

সিদ্ধিরগঞ্জের শিমড়াইল এলাকায় একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন লোকমান হোসেন। ভুলতা গাউছিয়া থেকে প্রতিদিন সকাল-বিকেল আসা-যাওয়া করতে হয় তাকে।

পূজার ছুটিতে ভোগাবে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক

তিনি বলেন, ‘ভুলতা থেকে কাচপুর পর্যন্তই যানজট প্রবণএলাকা। তবে বরাবো ও রূপসী স্ট্যান্ডে প্রতিনিয়তই লেগে থাকে যানজট। প্রতিদিন ভোগান্তি নিয়েই যাতায়াত করতে হয়।’

লেগুনাচালক বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘প্রতিদিন কাচপুর থেকে গাউছিয়া ৮-১০ ট্রিপ মারি। যানজট না থাকলে আরও অনেক বেশি ট্রিপ মারতে পারতাম।’

একইভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ঢাকা-সিলেট সড়কে চলাচলকারী মেঘালয় পরিবহনের যাত্রী ইয়াসিন শিকদার। তিনি বলেন, ‘ঢাকা থেকে কিশোরগঞ্জ যেতে আমার তিন ঘণ্টা সময় লাগার কথা। তবে ভুলতা গাউছিয়া আসতেই লেগেছে সাড়ে তিন ঘণ্টা। কখন গন্তব্যে যেতে পারবো জানি না।’

নিজের প্রাইভেটকারে করে ঢাকায় যাচ্ছিলেন জিতু কবির। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘ভুলতা গাউছিয়া, বরপা, রূপসী ও বরাবো স্ট্যান্ড থেকে প্রতিদিনই যানজট থাকে। সড়কে ট্রাফিক পুলিশের উপস্থিতি তেমন চোখে পড়ে না। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের নজর দেওয়া উচিত। তা নাহলে আসন্ন পূজার ছুটিতে যাত্রীদের ভোগান্তির শেষ থাকবে না।’

এ বিষয়ে শিমড়াইল ট্রাফিক পুলিশের ইন্সপেক্টর (টিআই) জুলহাস উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, আসন্ন পূজার ছুটির বিষয়টি আমলে নিয়ে হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে শিমরাইল পুলিশ বক্সে অতিরিক্ত তিন পুলিশ সদস্য দেওয়ার কথা রয়েছে। হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে পূজার ছুটিতে সড়ক নির্বিঘ্ন রাখতে কাজ চলছে।

এসআর/জিকেএস