ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

পদ্মা সেতুর সুবাদে মোংলায় গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানির নতুন দিগন্ত

আবু হোসাইন সুমন | মোংলা (বাগেরহাট) | প্রকাশিত: ১১:৩০ এএম, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

পদ্মা সেতুর সুফলের প্রভাব পড়েছে মোংলা বন্দরে। একসময় মোংলা বন্দরের মাধ্যমে ঢাকার গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানি না হলেও সেই চিত্র এখন পাল্টেছে। সেতু চালু হওয়ার পর ঢাকার সঙ্গে মোংলা বন্দরের সড়ক যোগাযোগ উন্নত হওয়ায় এই বন্দর দিয়ে এখন গার্মেন্টস পণ্যও রপ্তানি হচ্ছে।

ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম বন্দরের দূরত্ব যেখানে ২৬০ কিলোমিটার আর পায়রা বন্দরের দূরত্ব ২৪৭ কিলোমিটার। সেখানে ঢাকা থেকে মোংলা বন্দরের দূরত্ব ১৭০ কিলোমিটার। ফলে স্বল্প দূরত্ব, খরচে সাশ্রয়ী আর কম সময়ে বন্দরে পণ্য বোঝাই-খালাস হওয়ায় ঢাকার ব্যবসায়ীরা মোংলা বন্দর ব্যবহারে এখন আগ্রহী হচ্ছেন।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিকল্পনা প্রধান মো. জহিরুল হক জানান, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত মোংলা বন্দর দিয়ে ঢাকা ও তার আশপাশের বিভিন্ন গার্মেন্টসের ১ হাজার ৪৪৪ টিইইউ পণ্য রপ্তানি হয়েছে। কনটেইনার পণ্যের আমদানি-রপ্তানি বাড়াতে নতুন তিনটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে আপগ্রেডেশন অব মোংলা পোর্ট, এলওসি ইন্ডিয়ার অর্থায়নে ২টি আধুনিক কনটেইনার জেটি নির্মাণ করা হবে।

পদ্মা সেতুর সুবাদে মোংলায় গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানির নতুন দিগন্ত

তিনি আরও জানান, মোংলা বন্দর সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন প্রকল্পটি চাইনিজ অর্থায়নে জি টু জি ভিত্তিতে মর্ডান ইকুইপমেন্টসহ বাস্তবায়ন করা হবে। এটি বাস্তবায়ন হলে অটোমেটেড পোর্ট হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে। তাতে ৪ লাখ টিইইউ কনটেইনার হ্যান্ডেলিং করা যাবে। আর অসমাপ্ত দুইটি জেটি পিপিপি মডেলে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এটি বাস্তবায়ন হলে ২ লাখ টিইইউ কনটেইনার হ্যান্ডেলিং করা সম্ভব হবে। এসবের সুফল পাবে বন্দর ব্যবহারকারীরা।

আরও পড়ুন:

বাঘের তাড়া খেয়ে নদী সাঁতরে লোকালয়ে দুই হরিণ

এদিকে পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় মোংলা বন্দর দিয়ে আমদানিকৃত রিকন্ডিশন্ড গাড়ি ঢাকায় পৌঁছানো সহজ হয়েছে। আগে ফেরিঘাটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হতো। আর সেতু চালু হওয়ায় বন্দর থেকে একটানে চলে যাচ্ছে আমদানিকারকের শোরুমে। আমদানিকৃত গাড়ির প্রায় ৮০ ভাগই খালাস হচ্ছে মোংলা বন্দর দিয়ে।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের উপ-পরিচালক (বোর্ড ও জনসংযোগ বিভাগ) মো. মাকরুজ্জামান বলেন, পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় রাজধানীর সঙ্গে মোংলা বন্দরের দূরত্ব কমেছে। তাই সময় সাশ্রয়ী হওয়ার পাশাপাশি অর্থের সাশ্রয় হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। এতে ঢাকার ব্যবসায়ীদের আগ্রহ বাড়ছে মোংলা বন্দরের প্রতি। মূলত সেতুর সুফল পাচ্ছে ঢাকার ব্যবসায়ীরা।

বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট এ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান ক্যাপ্টেন মো. রফিকুল ইসলাম এবং মোংলা বন্দর বার্থ ও শিপ অপারেটর এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সৈয়দ জাহিদ হোসেন বলেন, পদ্মা সেতুর সুফলে আমরা এখন কনটেইনার পণ্য খুব সহজেই পরিবহণ করতে পারছি। কিন্তু চ্যানেলের নাব্যতা কম থাকার কারণে কনটেইনারবাহী বড় জাহাজ আমরা সরাসরি মোংলা বন্দরে আনতে পারছি না। এতে আমরা অল্প কনটেইনারবাহী জাহাজ আনতে পারছি। এটা একটা সমস্যা।

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে বন্দর চ্যানেলে নাব্যতা সংরক্ষণের কাজ চলছে। এটি সম্পন্ন হলে আমরা বড় জাহাজ আনতে পারবো, এতে আমাদের খরচও কমবে।

বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিক্যালস ইমপোর্টার্স অ্যান্ড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বারভিডা) সভাপতি আব্দুল হক বলেন, পদ্মা সেতুর আগে আমাদের ঢাকায় গাড়ি আনতে চরম ভোগান্তি হতো। আগে সময় বেশি লাগতো, খরচও বেশি হতো। এখন সেতুর সুফল পাচ্ছি আমরা। এছাড়া এই বন্দরের মহাসড়ক ফোর-লেন হয়ে গেলে আরও বেশি সুবিধা ভোগ করতে পারবো।

এনএইচআর/এফএ/এমএস