ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

কিশোরগঞ্জ-১

জামায়াতসহ ৫ দলে একজন করে প্রার্থী, বিএনপিতে ছড়াছড়ি

এসকে রাসেল | প্রকাশিত: ০৯:২৫ এএম, ০২ অক্টোবর ২০২৫
  • সদর কেন্দ্রিক এই আসনে নজর সবার
  • সম্ভাব্য প্রার্থীরা চালাচ্ছেন সামাজিক কার্যক্রম
  • সরব দলগুলোর নেতাকর্মী ও সমর্থকরা

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে কিশোরগঞ্জের রাজনৈতিক মাঠের ভোটের হিসাব-নিকাশ নতুন মোড় নিয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে ভোটের সম্ভাব্য তারিখ সামনে রেখে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও অন্য দলগুলোর নেতাকর্মীরা এখন সরব। দীর্ঘদিন ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত মানুষ এবার নিজেদের মত প্রকাশে মুখিয়ে আছেন।

১৯৯১ সালের নির্বাচনে কিশোরগঞ্জের সাত আসনের মধ্যে বিএনপি পেয়েছিল পাঁচটি, আওয়ামী লীগ পেয়েছিল দুটি। ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে বিএনপি দুটি আসনে জয়ী হয়। আওয়ামী লীগ ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ এবং সর্বশেষ ২০২৪ সালের নির্বাচনে সদর আসনসহ বেশ কয়েকটিতে শক্ত অবস্থান ধরে রাখে। বর্তমানে জেলার মোট আসন সংখ্যা ছয়টি। এখন পর্যন্ত কিশোরগঞ্জের কোনো আসন থেকে জামায়াতে ইসলামী জয়লাভ করতে না পারলেও বর্তমানে দলটির শক্ত অবস্থান রয়েছে জেলায়। এরইমধ্যে ছয়টি আসনে একক প্রার্থী ঘোষণা করেছে দলটি।

‘যারা আন্দোলনের মাঠে ছিলেন, জেল-জুলুম সহ্য করেছেন এবং ক্লিন ইমেজের, তাদের মধ্য থেকেই দল প্রার্থী দেবে বলে আমরা বিশ্বস করি।’

বিএনপিতে প্রার্থীর ছড়াছড়ি

কিশোরগঞ্জ-১ (সদর-হোসেনপুর) আসনে বিএনপির অর্ধডজনের বেশি নেতা মনোনয়ন প্রত্যাশী। তাদের মধ্যে আছেন সাবেক স্পেশাল জজ ও জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মো. রেজাউল করিম খান চুন্নু, সাবেক এমপি ও জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাসুদ হিলালী, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আ. ঈ. ম. ওয়ালী উল্লাহ রাব্বানী (দীর্ঘদিন ধরে কিশোরগঞ্জের প্রকাশ্য রাজনীতিতে অনুপস্থিত থাকলেও তার সমর্থকেরা সম্প্রতি বড় শোডাউন করেছেন), জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি খালেদ সাইফুল্লাহ সোহেল, জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক ও সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইসরাইল মিয়া, জেলা বিএনপির সদস্য ব্যারিস্টার আতিকুর রহমান, সাবেক পৌর মেয়র আলহ্বাজ আবু তাহের মিয়া এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম সুপ্রিম কোর্টের যুগ্ম সম্পাদক মো. ওমর ফারুক। দলীয় সমর্থনের জন্য তারা প্রত্যেকেই গণসংযোগ, সামাজিক ও সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।

৫ দলে একক প্রার্থী

জামায়াতে ইসলামী এরইমধ্যে জেলার সাবেক নায়েবে আমির অধ্যক্ষ মোসাদ্দেক ভূঁইয়াকে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। গণঅধিকার পরিষদ থেকে কেন্দ্রীয় কমিটির উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও মিডিয়া সমন্বয়ক আবু হানিফ প্রার্থী হচ্ছেন। তিনি নিয়মিত মাঠে কাজ করছেন।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনয়ন দিয়েছে প্রফেসর মাওলানা আজিজুর রহমানকে। খেলাফত মজলিসের প্রার্থী হচ্ছেন মাওলানা হিফজুর রহমান খান। জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম মনোনয়ন দিয়েছে কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও জেলা সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদুল্লাহ জামীকে।

‘আমরা এবার সুসংগঠিত হয়ে নামছি। আশা করি জনগণ আমাদের ভোট দিয়ে বিজয়ী করবে। সেই লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছি। নিয়মিতই আমরা গণসংযোগ করছি।’

অন্য দলগুলোর মধ্যে জাসদ (রব) ও বামপন্থিদের তৎপরতা এখনো চোখে পড়েনি। এছাড়া জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এখনো প্রার্থী ঘোষণা করেনি।

কিশোরগঞ্জ-১ আসনে মোট ভোটার ৫ লাখ ১৫ হাজার ৫১১ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৬১ হাজার ৪১৩, নারী ভোটার ২ লাখ ৫৪ হাজার ৯৬ এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার আছেন ২ জন। সদর কেন্দ্রিক এ আসনটি সব দলের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ।

আরও পড়ুন-
অভ্যন্তরীণ সংস্কারে কেন এত মনোযোগী জামায়াত?
এনসিপির প্রতীক নিশ্চিত করবে ইসি, বাছাইয়ে ৭ দল বাদ
বিএনপির মনোনয়ন চান চার নেতা, একক প্রার্থীতে উজ্জীবিত জামায়াত

এই আসনে অতীতে বিজয়ী হয়েছেন ১৯৭০ ও ১৯৭৩ সালে আওয়ামী লীগের সৈয়দ নজরুল ইসলাম, ১৯৭৯ সালে বিএনপির ডা. ফজলুল করিম, ১৯৮৬ সালে আওয়ামী লীগের অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান, ১৯৮৮ সালে জাতীয় পার্টির মো. আলমগীর হোসাইন, ১৯৯১ সালে বিএনপির মাওলানা আতাউর রহমান খান, ১৯৯৬, ২০০১, ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এবং ২০১৯ (উপনির্বাচন) ও ২০২৪ সালে আওয়ামী লীগের ডা. জাকিয়া নূর লিপি।

দলীয় বক্তব্য

জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খালেদ সাইফুল্লাহ সোহেল বলেন, ‘যারা আন্দোলনের মাঠে ছিলেন, জেল-জুলুম সহ্য করেছেন এবং ক্লিন ইমেজের, তাদের মধ্য থেকেই দল প্রার্থী দেবে বলে আমরা বিশ্বস করি। দলীয় সমর্থন পাওয়ার জন্য মাঠে কাজ করে যাচ্ছি।’

জামায়াতের প্রার্থী অধ্যক্ষ মোসাদ্দেক ভূঁইয়া বলেন, ‘আমরা এবার সুসংগঠিত হয়ে নামছি। আশা করি জনগণ আমাদের ভোট দিয়ে বিজয়ী করবে। সেই লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছি। নিয়মিতই আমরা গণসংযোগ করছি।’

গণঅধিকার পরিষদের আবু হানিফ বলেন, ‘স্বাধীনতার পর সবচেয়ে দীর্ঘ সময় মানুষ দুই দলের শাসনই দেখেছে। এখন তারা পরিবর্তন চায়। কালো টাকা আর পেশিশক্তির রাজনীতি থেকে দেশকে মুক্ত করতে হবে। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে জনগণ নতুন নেতৃত্বকে বেছে নেবে বলে আমি আশাবাদী।’

এফএ/এমএমএআর/এএসএম