৪৮ লাখ টাকা দিয়েও মুক্তি মেলেনি লিবিয়ায় বন্দি আসলামের
ভুক্তভোগী আসলাম চৌকিদার ও প্রতারক জামাল প্রামাণিক ( বাঁ থেকে)
ইতালি যাওয়ার স্বপ্ন নিয়ে অবৈধ পথে যাত্রা করে দেড় বছরের বেশি সময় ধরে লিবিয়ায় বন্দি মাদারীপুরের এক যুবক। পরিবারের পক্ষ থেকে দফায় দফায় ৪৮ লাখ টাকা পরিশোধ করা হলেও তার মুক্তি মেলেনি। উল্টো আরও টাকা দাবি করা হচ্ছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর পরিবার মানবপাচারকারী দালালের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
লিবিয়ায় বন্দি ওই যুবক মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার কাজী বাকাই ইউনিয়নের পূর্ব মাইজপাড়া গ্রামের আব্দুল হালিম চৌকিদারের ছেলে আসলাম চৌকিদার। তিনি চার ভাই ও দুই বোনের মধ্যে সবার বড়। দেশে থাকতে দিনমজুরের কাজ করতেন।
মামলা ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মাদারীপুর সদর উপজেলার কুনিয়া ইউনিয়নের হুগলি গ্রামের মানবপাচারকারী দালাল জামাল প্রামাণিকের প্রলোভনে পড়েন দিনমজুর আসলাম চৌকিদার। ইতালি যাওয়ার জন্য দালালের সঙ্গে ১৫ লাখ টাকার চুক্তি হয়। ২০২৪ সালের ৩ জানুয়ারি বাড়ি থেকে বের হন আসলাম। তবে যাত্রাপথে লিবিয়া পৌঁছালে তিনি মাফিয়াদের হাতে বন্দি হন। এরপর শুরু হয় তার ওপর অমানবিক নির্যাতন। আসলামকে বাঁচাতে ধারদেনা ও জমি বিক্রি করে দালালের মাধ্যমে দফায় দফায় ৪৮ লাখ টাকা পরিশোধ করে আসলামের পরিবার। কিন্তু এতেও তার মুক্তি মেলেনি। উল্টো আরও টাকা দাবি করছেন তারা।
এমন পরিস্থিতিতে কোনো উপায় না পেয়ে আসলাম চৌকিদারের মা আসমা বেগম বাদী হয়ে আদালতে দালালসহ চারজনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। তিনি সরকারের কাছে এই দালালের সুষ্ঠু বিচার ও তার সন্তানকে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করার জন্য আকুল আবেদন জানিয়েছেন।
আসমা বেগম বলেন, জানুয়ারি মাস এলে দুই বছর হবে। কিন্তু এখনো তাকে ইতালি পৌঁছানো হয়নি। উল্টো তাকে নির্যাতন করা হচ্ছে। দালালের কাছে আমার সন্তানের কথা জিজ্ঞেস করলেই সে আমাদের কাছে আরও টাকা চায়। টাকা না দিলে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখায়।
এদিকে মানবপাচারকারী দালাল জামাল প্রামাণিককে তার বাড়িতে গিয়ে পাওয়া যায়নি। তার ঘর তালাবদ্ধ ছিল। এছাড়া ফোনে একাধিকবার কল করলেও তার কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এসব ঘটনায় মামলা হলে আমরা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি। মানবপাচারের বিষয়গুলো আমরা গুরুত্ব সহকারে দেখছি।
আয়শা সিদ্দিকা আকাশী/কেএইচকে/জেআইএম