বান্দরবানের পাহাড়জুড়ে প্রবারণা পূর্ণিমায় উৎসবের আমেজ
বান্দরবানে শুরু হচ্ছে মারমা সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসব ওয়াগ্যোয়াই পোয়ে (শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা)। তিন দিনব্যাপী নানা ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক আয়োজনে মুখর হয়ে উঠেছে পাহাড়ি জেলা বান্দরবান।
উৎসব উদযাপন পরিষদের তথ্য অনুযায়ী, আগামীকাল ৫ অক্টোবর থেকে ৭ অক্টোবর পর্যন্ত এ অনুষ্ঠান পালন করা হবে। এবারের উৎসবের প্রধান আকর্ষণ মঙ্গল রথযাত্রা। রাজহংসী আকৃতির বিশাল রথে বুদ্ধ মূর্তি স্থাপন করে তা শহর প্রদক্ষিণ শেষে সাঙ্গু নদীতে বিসর্জন দেওয়া হবে।
অনুষ্ঠানকে বর্ণিল করে তুলতে তৈরি করা হয়েছে ভয়ঙ্কর আকৃতির পুতুল। শোভাযাত্রায় বৌদ্ধ ভক্তরা প্রদীপ হাতে দেশনা গান পরিবেশন করবেন।
৬ অক্টোবর রাতে শহরের বিভিন্ন পাড়ায় হবে পিঠা উৎসব। তরুণ-তরুণীরা দল বেঁধে পিঠা তৈরি করবে, যা ভোরে বুদ্ধকে দান করা হবে এবং প্রতিবেশীদের মধ্যেও বিতরণ করা হবে।
বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা জানান, প্রাচীনকাল থেকেই বর্ষাবাস (উপোস) শেষে আশ্বিনী পূর্ণিমায় ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে এই উৎসব পালন করা হয়।
কথিত আছে, গৌতম বুদ্ধ এই দিনে তার মাথার চুল আকাশে উড়িয়ে দিয়েছিলেন। সেই স্মরণে ভক্তরা শতশত রঙিন ফানুস আকাশে উড়িয়ে বুদ্ধকে উৎসর্গ করেন।
তিন পার্বত্য জেলার মধ্যে সবচেয়ে বড় সামাজিক উৎসব হিসেবে পরিচিত ওয়াগ্যোয়াই পোয়ে ঘিরে বান্দরবানের বিহারগুলোতে চলছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, ফানুস ও রথ তৈরির শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি।
রথ কারিগর ক্যওয়ান মারমা বলেন, আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে রাজহংসীর আদলে রথ ও পাঁচটি পুতুল তৈরি করেছি। প্রবারণার প্রথমদিন রথটি বিহারে নেওয়া হবে, পরদিন শোভাযাত্রার পর সাঙ্গু নদীতে বিসর্জন দেওয়া হবে।
ফানুস শিল্পী চহ্লামং, এসিংমং ও অংচিংমংসহ তরুণরা জানান, তারা নানান রঙের ফানুস তৈরি করেছেন, যা প্রবারণা পূর্ণিমার রাতে ভগবান বুদ্ধের উদ্দেশ্যে আকাশে উড়ানো হবে।
উৎসব উদযাপন পরিষদের সভাপতি চনুমং মারমা জানান, এবারের আয়োজনের মধ্যে রয়েছে মঙ্গল রথযাত্রা, হাজার প্রদীপ প্রজ্বলন, পিঠা উৎসব, ফানুস উড়ানো, পঞ্চশীল গ্রহণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
তিনি বলেন, ৫ অক্টোবর রাজা মাঠে গুরু ভান্তেদের দেশনা ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মধ্য দিয়ে উৎসবের উদ্বোধন হবে। এই অনুষ্ঠানে পার্বত্য উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা উপস্থিত থাকবেন।
নিরাপত্তা নিয়ে বান্দরবান জেলা পুলিশ সুপার মো. শহিদুল্লাহ কাওছার বলেন, প্রবারণা পূর্ণিমা উৎসবকে ঘিরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। গোয়েন্দা নজরদারি ও সাদা পোশাকের টিম মোতায়েন থাকবে।
তিনি আরও বলেন, খাগড়াছড়ির সাম্প্রতিক ঘটনায় বান্দরবানে কোনো প্রভাব পড়েনি। পাহাড়ি-বাঙালি সবাই সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ, তাই উৎসব নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হবে।
নয়ন চক্রবর্তী/এনএইচআর/জেআইএম
সর্বশেষ - দেশজুড়ে
- ১ স্বাস্থ্যের ডিজির সঙ্গে তর্কে জড়ানো চিকিৎসককে অব্যাহতি ও শোকজ
- ২ মৃতের বাড়ি থেকে ফেরার পথে সড়কে লাশ হলেন শাশুড়ি-পুত্রবধূ
- ৩ গাজীপুরে ভাড়া ফ্ল্যাটের দরোজা ভেঙে প্রধান শিক্ষিকার মরদেহ উদ্ধার
- ৪ নির্বাচন কমিশন মেরুদণ্ডহীন, ইউনূসের হাত রক্তে রঞ্জিত
- ৫ ঠাকুরগাঁওয়ে সারের ডিলারশিপ বাঁচাতে পদ ছাড়লেন ইউপি চেয়ারম্যান