বিজেএ’র সভায় বক্তারা
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় অলিখিতভাবে পাট রপ্তানির নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে
বাংলাদেশ জুট এসোসিয়েশনের বার্ষিক সাধারণ সভা
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় শর্তসাপেক্ষ রপ্তানির অনুমতি দিয়ে মূলত অলিখিত পাটের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে বলে মন্তব্য করেছেন পাট রপ্তানিকারকরা। এতে করে কৃষক, ব্যপারী, পাট শ্রমিক ও রপ্তানিকারকরা অনেক ক্ষতির মধ্যে পড়ে গেছে বলেও জানান তারা।
বাংলাদেশ জুট এসোসিয়েশনের (বিজেএ) ৫৮তম বার্ষিক সাধারণ সভায় পাট ব্যবসায়ীরা এমন মন্তব্য করেন।
রোববার (২ নভেম্বর) দুপুরে বিজেএ’র নারায়ণগঞ্জ অফিসের আফজাল হোসেন মিলনায়তনে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের প্রায় ৫ শতাধিক ব্যবসায়ী ও রপ্তানিকারকরা অংশগ্রহণ করেন।
সভায় দেশের সেরা পাট রপ্তানিকারক ইন্টারন্যাশনাল জুট ট্রেডার্সের কর্ণধার গণেষ চন্দ্র সাহা বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় শর্তসাপেক্ষ রপ্তানি দিয়ে মূলত অলিখিত পাটের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। ফলে পাট ব্যবসায়ীরা এখনও রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার আগে যে এলসি ছিল সেই এলসির মালামাল রপ্তানি করতে পারেনি। ১৯১০ ও ১৯১৫ সালে পাট মন্ত্রণালয় থেকে পাট নিষেধাজ্ঞা হয়েছিল। তখন কাটজুট পাট নিষেধাজ্ঞার আওতার বাইরে ছিল। এবার এই কাটজুট আওতামুক্ত রাখেনি।
তিনি আরও বলেন, অনতিবিলম্বে শর্তসাপেক্ষ আদায় প্রত্যাহার করতে হবে। নতুবা পাটের বাজার যে কোনো সময় পড়ে যেতে পারে। পাটের উৎপাদন কম হয়েছে, পাট ঘাটতির কথা বলে বাংলাদেশের জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশন এবং বাংলাদেশ জুট স্পিনার্স অ্যাসোসিয়েশন দাবি তুলে ৭ থেকে ৮ লাখ বেল পাট রপ্তানি ব্যাহত করছে। অনতিবিলম্বে কৃষকের স্বার্থে পাট ব্যবসায়ীদের স্বার্থে এবং পাট শ্রমিকদের স্বার্থে এই প্রত্যাহার করার জোর দাবি জানাচ্ছি।
সভায় সভাপতিত্ব করেন বিজেএ’র সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান মো. আফজাল হোসেন আকন্দ। তিনি সভা শেষে নতুন কার্যনির্বাহী কমিটিকে অভ্যর্থনা ও দায়িত্ব হস্তান্তর করেন। সেই সঙ্গে সভায় বিগত অর্থ বছরের চূড়ান্ত নিরীক্ষা প্রতিবেদন উপস্থাপন ও সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদিত হয়।
নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান খন্দকার আলমগীর কবির বলেন, বর্তমানে কাঁচাপাট রপ্তানি বন্ধ থাকায় কাঁচাপাট ব্যবসায়ী রপ্তানিকারকরা সংকটে রয়েছেন। অনেক কাঁচাপাট ব্যবসায়ি ঋণে জর্জরিত হয়ে পড়েছেন। ২ মাসে আমরা এক বেলও কাঁচাপাট রপ্তানি করতে পারিনি। শ্রমিকদেরকে বসিয়ে বসিয়ে মজুরি দিতে হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, রপ্তানি বন্ধ থাকায় হাজার হাজার ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কৃষকরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আমরা শিগগির উপদেষ্টা ও মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে কথা বলবো। আগামী ১০ দিনের মধ্যে রপ্তানি বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না হলে আমরা কঠোর পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবো। এটার সমাধান না হলে কঠিনতম অবস্থানে যেতে বাধ্য হতে হবে।
মোবাশ্বির শ্রাবণ/এনএইচআর/জিকেএস