টাঙ্গাইল
নির্বাচন অফিসে ভাঙচুর: বিএনপির ৬ নেতাসহ ১২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা
টাঙ্গাইলের গোপালপুরে নির্বাচন অফিসে বিএনপি নেতাকর্মীদের হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। সোমবার (১০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলা নির্বাচন অফিসার মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
মামলায় বিএনপি ও ছাত্রদলের ৬ নেতার নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় ১০০-১২০ বিএনপি ও যুবদল নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার আসামিরা হলেন- পৌর বিএনপির সভাপতি খালিদ হাসান উথান, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী লিয়াকত আলী, পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক লিটন মিয়া, পৌর বিএনপির যুগ্ম-সম্পাদক মহির উদ্দিন, পৌর ছাত্রদলের সভাপতি তুহিন ও বিএনপি নেতা কামরুল ইসলাম।
এদিকে নির্বাচন অফিসে হামলার পর থেকে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন উপজেলা নির্বাচন অফিসের কর্মকর্তারা। আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রতিটি নির্বাচন অফিসে আইনশৃঙ্খলা জোড়দারের দাবি জানিয়েছেন তারা।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়- সোমবার সকালে উপজেলা নির্বাচন অফিসার নজরুল ইসলামের অফিস রুমে বিএনপির ৫ নেতাসহ অজ্ঞাতপরিচয় ১০০-১২০ জন নেতাকর্মীরা প্রবেশ করে। একপর্যায়ে পৌর বিএনপির সভাপতি খালিদ হাসান উথান উপজেলা নির্বাচন অফিসারকে জিজ্ঞেস করেন, কেন তাদের মূল্যায়ন করা হয় না ও কেন তাদের কথা মতো কাজ করা হয় না। এসময় তারা আওয়ামী লীগের অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে, এমন অপবাদ দিয়ে নির্বাচন অফিসারকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। একপর্যায়ে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে উপজেলা নির্বাচন অফিসারকে মারপিট করে ও ফোন কেড়ে নেয়। এই ঘটনা শুরু থেকে গোপালপুর উপজেলা নির্বাচন অফিসের স্ক্যানিং অপারেটর সুমন রানা মোবাইল ফোনে ভিডিও করে থাকে। বিষয়টি টের পেয়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা সুমন রানাকে এলোপাথাড়ি চড়-থাপ্পড়, কিল-ঘুসি দেয় ও মোবাইল কেড়ে নেয়।
আরও পড়ুন:
টাঙ্গাইলে নির্বাচন অফিসে হামলা-ভাঙচুর, কর্মকর্তাসহ আহত ৩
এসময় অফিসের ডাটা এন্ট্রি অপারেটর আমজাদ হোসেন স্ক্যানিং অপারেটর সুমন রানাকে রক্ষা করার চেষ্টা করলে তাকেও লোহার রড দিয়ে এলোপাতারী মারপিট করে। অফিসের সার্ভার রুমের গ্লাস ভাঙচুর করে। এসময় সহকারী উপজেলা নির্বাচন অফিসার আবু রায়হান তাদের রক্ষা করার চেষ্টা করলে তাকেও এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি লাথি মারে। এসময় বিএনপির লোকজন অফিসের অন্যান কক্ষের থাই গ্লাস, বারান্দায় রাখা ফুলের টবসহ অন্যান্য আসবাবপত্র ভাঙচুর করে ও হেল্পডেস্কে থাকা গুরুত্বপূর্ণ ফাইলপত্র ছিঁড়ে নষ্ট করে। আহত ডাটা এন্ট্রি অপারেটর আমজাদ হোসেনকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়ার পথে পৌর ছাত্রদলের সভাপতি পুনরায় হামলা করে।
এ ঘটনার পর দুপুরে জেলা নির্বাচন অফিসার ও পুলিশ সুপারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
এ বিষয়ে জেলা নির্বাচন অফিসের সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসার মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, এ ঘটনায় মামলা করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে নির্বাচন অফিসগুলো নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছে। আগামী সংসদ নির্বাচনে প্রতিটি নির্বাচন অফিসে নিরাপত্তা জোরদারের দাবি করছি।
গোপালপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মামুন ভূইয়া জাগো নিউজকে বলেন, এ ঘটনায় মামলা করা হয়েছে। মামলার পর আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
আব্দুল্লাহ আল নোমান/এমএন/জেআইএম