অবশেষে চলে গেল নরসিংদীর সেই মাদরাসা শিক্ষার্থী
অবশেষে না ফেরার দেশে চলে গেল প্রতিবেশী বখাটের হামলার শিকার মাদরাসা শিক্ষার্থী তাজিমুল ইসলাম তাজিম (১৬)। গত বৃহস্পতিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় সে।
তাজিম নরসিংদী সদর থানার আলোকবালী ইউনিয়নের সাতপাড়া গ্রামের কৃষক মোরশেদ আলমের ছেলে এবং ওই এলাকার চরমাধাবপুর মদিনাতুল উলুম দাখিল মাদরাসার ৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
স্থানীয়রা জানান, কিছুদিন আগে একই গ্রামের ইবরাহিম মিয়ার ছেলে বখাটে নাদিম মিয়া (২৩) তাজিমকে করলার বস্তা তার মাথায় তুলে দিতে বলে। তবে তাজিমের মাথায় ঘাসের বস্তা থাকায় সে তা তুলে দিতে অস্বীকৃতি জানায়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে নাদিম ইট দিয়ে তাজিমের ওপর হামলা চালায় এবং তাকে গুরুতর আহত করে ফেলে রেখে চলে যায়।
পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। তবে তার অবস্থার অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) স্থানান্তর করা করা হয়। সেখানে তার সুস্থ্যতার জন্য অস্ত্রোপাচারও করেন চিকিৎসকরা। তবে সে সময় সে পুরোপরি সুস্থ্য না হলেও বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয় তাকে।
এদিকে ঘটনার পর স্থানীয় সালিশের মাধ্যমে ক্ষতিপূরণ হিসেবে চিকিৎসা বাবদ ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় হামলাকারীকে। এছাড়া তাজিম পুরোপুরি সুস্থ্য না হওয়া পর্যন্ত সকল খরচ বহনের দায়িত্ব দেয়া হামলাকারী নাদিমের পরিবারকে। কিন্তু নাদিমের পরিবার আর কোনো টাকা না দিয়ে কৌশলে নাদিমকে মালয়েশিয়া পাঠিয়ে দেয়।
তাজিমের বাবা জানান, ঢাকা মেডিকেল হাসপাতাল কলেজ থেকে বাড়িতে নিয়ে আসার কিছু দিন পর স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটলে তাকে নরসিংদী সদর হাসপাতাল, শহরের প্রাইম মেডিকেল অ্যান্ড ডায়াগনিস্টক সেন্টার, নূরজাহান মেডিকেল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, মিতা নার্সিং অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারসহ কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়।
তারপরও সুস্থ্য না হওয়ায় কয়েক দফায় আবারো ঢামেকে ভর্তি করানো হয়। সর্বশেষ ঢামেকে দ্বিতীয়বার অস্ত্রোপাচার করার পর গত বৃহস্পতিবার সকালে মারা যায় তাজিম।
ঢাকা মেডিকেল সূত্রে জানা গেছে, তাজিমকে প্রচণ্ড প্রহার করায় পাকস্থলি, পায়ূপথ, লিভার, অন্ত্র ও কোষ নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। যার কারণে তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
এদিকে তাজিমের বাবা মোরশেদ মিয়া বলেন, আমার ছয় সন্তান। এই ছেলেই সবার বড় ছিল। তার চিকিৎসা করাতে গিয়ে আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি। এখন যেহেতু ছেলেকে ফিরে পাব না, তাই অন্তত তার হত্যার বিচার আমি চাই।
এফএইচ/এসকেডি