ময়মনসিংহ-৩
বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তন চেয়ে ১৪৭ জনপ্রতিনিধির সংবাদ সম্মেলন
ময়মনসিংহ-৩ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী পরিবর্তন এবং নেতাকর্মীর বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন সাবেক-বর্তমান ১৪৭ জন জনপ্রতিনিধি।
বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) বিকেলে গৌরীপুর পৌর শহরের ধানমহাল এলাকার বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ দাবি জানানো হয়। একই সময় সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধিরা দলের চেয়ারপার্সন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দোয়া করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও পৌর বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক মো. আরিফুল ইসলাম ভূঁইয়া এনাম।
তিনি বলেন, গৌরীপুর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের সাবেক ও বর্তমান চেয়ারম্যান এবং ইউপি সদস্য এবং পৌর শহরের বর্তমান ও সাবেক কাউন্সিলরসহ ১৪৭ জনপ্রতিনিধি বিএনপি মনোনীত প্রার্থী পরিবর্তনসহ ২৪ নেতাকর্মীর বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার করার দাবি জানাচ্ছি। একই সঙ্গে বিগত আন্দোলন সংগ্রামের পরীক্ষিত নেতা আহাম্মদ তায়েবুর রহমান হিরণকে বিএনপি থেকে মনোনয়ন দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। অন্যথায় এ আসনটিতে দলের বিপর্যয় ঘটতে পারে।
সংবাদ সম্মেলনে ডৌহাখলা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আবুল হাসিম, গৌরীপুর পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিল জিয়াউর রহমান জিয়া, অচিন্তপুর ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক জায়েদুল ইসলাম, সাবেক ইউপি সদস্য রামগোপালপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. আব্দুস সামাদসহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
প্রথম ধাপে বিএনপি ঘোষিত প্রার্থী তালিকায় ময়মনসিংহ-৩ গৌরীপুর আসনে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এম ইকবাল হোসাইনকে দলের প্রাথমিক মনোনয়ন দেওয়া হয়। এতে মনোনয়নবঞ্চিত উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আহাম্মদ তায়েবুর রহমান হিরণের সমর্থকরা দলীয় মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবিতে কখনো রেলপথ অবরোধ, আবার কখনো বিক্ষোভ ও সমাবেশ করে লাগাতার আন্দোলন করা হয়।
গত ৯ নভেম্বর বিকেলে ধানের শীষের মনোনীত প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার এম ইকবাল হোসাইন ও মনোনয়নবঞ্চিত আহাম্মদ তায়েবুর রহমান হিরণ গ্রুপের মাঝে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এদিন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উপজেলা ও পৌর বিএনপির ৫ নেতাকর্মীকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।
তারা হলেন, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আহাম্মদ তায়েবুর রহমান হিরণ ও পৌর বিএনপির সদস্য সচিব সুজিত কুমার দাস, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক তাজুল ইসলাম খোকন, সদস্য মাসুদ পারভেজ কার্জন, গৌরীপুর পৌর বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান পলাশ।
পরদিন ১০ নভেম্বর ময়মনসিংহ উত্তর জেলা ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক মো. সাদ্দাম হোসেন তালুকদারের পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রাথমিক পদসহ সব পদ থেকে ছাত্রদলের ১৯ জন নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধেও শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে দলের অভ্যন্তরে হাঙ্গামা, সহিংসতা, রক্তপাতসহ সন্ত্রাসী কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়। বহিষ্কারের আদেশ অনুমোদন করেন ময়মনসিংহ উত্তর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি নুরুজ্জামান সোহেল ও সাধারণ সম্পাদক একেএম সুজা উদ্দিন।
বহিষ্কৃতরা হলেন, গৌরীপুর উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক মো. রিপন মিয়া, ছাত্রদল নেতা অন্তর সরকার, গৌরীপুর পৌর ছাত্রদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক মো. আরিফুল ইসলাম আল আমিন, যুগ্ম-আহ্বায়ক মো. কামরুল ইসলাম পিয়াস, যুগ্ম আহ্বায়ক মো. আরিফুল ইসলাম উদয়, শ্যামগঞ্জ ফাজিল মাদরাসা ছাত্রদলের সভাপতি উজ্জ্বল মিয়া, গৌরীপুর সদর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি সুমন মিয়া, সহ-সভাপতি রেজাউল ইসলাম, মইলাকান্দা ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি ইয়াসিন আরাফাত, অচিন্তপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি অলি উল্লাহ, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মোরছালিন, মাওহা ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি মো. শরীফ মিয়া, সাধারণ সম্পাদক মো. মোস্তাকিম ফকির, সহনাটি ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মো. শহিদুল্লাহ কায়সার, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম বোরহান, ভাংনামারি ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি মো. রিয়াদ হোসেন, সিধলা ইউনিয়ন ছাত্রদলের কর্মী মোহাম্মদ ফয়সাল তালুকদার, ছাত্রদল কর্মী এএইচ পিয়াস, রাহাত জাহান মুন।
কামরুজ্জামান মিন্টু/আরএইচ