ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

সুদানে শান্তিরক্ষা মিশনে হামলা

হামার একটাই ছোল, তোমরা হামার ছোলক আনে দেও

জেলা প্রতিনিধি | গাইবান্ধা | প্রকাশিত: ০৯:৩৭ পিএম, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫

‌‘বুকভরা স্বপ্ন নিয়ে ছোলক (ছেলেকে) বাহিনীতে ডুকাই দিছুনু। হামার এতিম ছোলটা যেনো কষ্ট না পায়। কষ্ট করে লেখাপড়া হামি (আমি) করাইছি, মরার আগ পর্যন্ত হামাক (আমাকে) দেখপে। সেই ছোলক ওরা মারছে। তোমরা হামাক, হামার ছোলক আনে দেও। হামার ময়নাটা কি হলো রে, হামার একটাই খাটনেআলা ছোল।’

এভাবে আহাজারি করছেন সুদানের আবেই এলাকায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের আওতাধীন কাদুগলি লজিস্টিক বেসে সন্ত্রাসী ড্রোন হামলায় নিহত সবুজ মিয়ার মা ছকিনা বেগম।

রোববার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার মহদীপুর ইউনিয়নের আমলাগাছি (ছোট ভবনপুর) গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, সবুজ মিয়ার বাড়ি লোকজন দিয়ে ভর্তি। মা ছকিনা বেগম ছেলের মৃত্যুর শোকে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন।

নিহতের স্ত্রী নূপুর আক্তার কান্না করতে করতে বলেন, ‘বিয়ের মাত্র এক বছর আট মাস, তাতেই স্বামীকে হারালাম। আমার জীবনটাই শেষ হয়ে গেলো। আমার সব শেষ হয়ে গেলো।’

শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) সুদানের আবেই এলাকায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের আওতাধীন কাদুগলি লজিস্টিক বেসে সন্ত্রাসী ড্রোন হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ছয়জন শান্তিরক্ষী নিহত এবং আটজন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে গাইবান্ধার পলাশবাড়ীর সবুজ মিয়া রয়েছেন। তিনি মিশনের লন্ড্রি কর্মচারীর দায়িত্ব পালন করছিলেন।

নিহত সবুজ মিয়া উপজেলার মহদীপুর ইউনিয়নের আমলাগাছি (ছোট ভবনপুর) গ্রামের মৃত হাবিদুল ইসলামের ও ছকিনা বেগম দম্পতির ছেলে। ছোটবেলায় বাবাকে হারান সবুজ।

বিষয়টি নিশ্চিত করে মহদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও স্থানীয় বাসিন্দা ফিরোজ আকন্দ জানান, ৭–৮ বছর আগে সবুজ মিয়া বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে লন্ড্রি কর্মচারী হিসেবে যোগদান করেন। এক ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন ছোট। বড় বোনের বিয়ে হয়েছে। তিনি এক বছর আগে নাটোরে বিয়ে করেন। তার স্ত্রী ও মা বর্তমানে বাড়িতে অবস্থান করছেন। তিন মাস আগে ছুটিতে বাড়িতে এসে পুনরায় কর্মস্থলে যোগ দেন সবুজ।

এ বিষয়ে পলাশবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ জাবের আহমেদ বলেন, নিহতের বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহের কাজ চলছে। দ্রুত এ বিষয়ে পরে বিস্তারিত জানানো হবে।

আনোয়ার আল শামীম/এসআর/এএসএম