সুদানে হামলায় আহত মানিকগঞ্জের মেয়ে সেনাসদস্য চুমকি
আফ্রিকার দেশ সুদানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের একটি ঘাঁটিতে সন্ত্রাসীদের ড্রোন হামলার ঘটনায় আহত হয়েছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্য চুমকি আক্তার। তিনি মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার পেচারকান্দা এলাকার মেয়ে। চুমকি মাত্র ৪২ দিন আগে শান্তিরক্ষা মিশনে যোগ দেন।
এর আগে শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, ওই ড্রোন হামলায় ছয়জন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী নিহত এবং আটজন আহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন, কর্পোরাল মো. মাসুদ রানা (নাটোর), সৈনিক মো. মমিনুল ইসলাম (কুড়িগ্রাম), সৈনিক শামীম রেজা (রাজবাড়ী), সৈনিক শান্ত মন্ডল (কুড়িগ্রাম), মেস ওয়েটার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম (কিশোরগঞ্জ) ও লন্ড্রি কর্মচারী মো. সবুজ মিয়া (গাইবান্ধা)।
আহতদের মধ্যে রয়েছেন, লেফটেন্যান্ট কর্নেল খোন্দকার খালেকুজ্জামান, সার্জেন্ট মো. মোস্তাকিম হোসেন, কর্পোরাল আফরোজা পারভিন ইতি, ল্যান্স কর্পোরাল মহিবুল ইসলাম, সৈনিক মো. মেজবাউল কবির, মোসা. উম্মে হানি আক্তার, মো. মানাজির আহসান ও মানিকগঞ্জের চুমকি আক্তার।
চুমকির পারিবারিক সূত্র জানায়, বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র গোষ্ঠীর চালানো ওই হামলায় গ্রেনেডের একাধিক স্প্রিন্ট চুমকি আক্তারের ডান হাত ও ডান পায়ে বিদ্ধ হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে হেলিকপ্টারে করে প্রায় ৭০০ কিলোমিটার দূরের একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। বর্তমানে তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্য ও চুমকির স্বামী মো. ইকরামুল হোসেন বলেন, সে সব সময় বলতেন, মানুষের জন্য কিছু করতে চায়। আজ সেই দায়িত্ব পালন করতে গিয়েই গুরুতর আহত।
ঘিওরের পেচারকান্দা গ্রামে চুমকির মা জহুরা বেগম বলেন, আমার চার মেয়ের মধ্যে চুমকি সবার ছোট। সে দেশের বাইরে মানুষের জান বাঁচাতে গিয়ে নিজেই আহত হয়েছে। ডান হাত আর পায়ে আঘাত লেগেছে শুনে বুকটা ফেটে যায়। বিদেশে হাসপাতালে পড়ে আছে আমরা কিছুই করতে পারছি না।
তিনি আরও বলেন, আমার স্বামী কৃষিকাজ করেন। আমাদের কোনো ছেলে নেই। দুই বছরের একটি সন্তান আছে। তাকে আমার কাছেই রেখে গেছে চুমকি। ছোট্ট ছেলেটাকে দেখলেই বুকের ভেতরটা হাহাকার করে।
মো. সজল আলী/কেএইচকে/এএসএম