পানি সংকটে কর্ণফুলী বিদ্যুৎকেন্দ্র, উৎপাদন নেমেছে ৪৬ মেগাওয়াটে
রাঙ্গামাটির কাপ্তাই হ্রদে পানির স্তর মারাত্মকভাবে কমে গেছে। এর ফলে দেশের একমাত্র জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র কর্ণফুলীর বিদ্যুৎ উৎপাদন তলানিতে ঠেকেছে। এই কেন্দ্রের পাঁচটি ইউনিট থেকে দৈনিক ২৪২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা থাকলেও বর্তমানে মাত্র একটি ইউনিট থেকে ৪৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে।
কর্ণফুলী জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের তথ্য মতে, হ্রদের রুল কার্ভ অনুযায়ী, এ সময়ে হ্রদে পানির স্তর ১০৫ ফুট থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে রয়েছে ৯৮ দশমিক ৭ ফুট। যা রুল কার্ভ অনুযায়ী প্রায় ৭ ফুট কম রয়েছে।
এদিকে, এর আগে চলতি বছরের মে মাসেও কাপ্তাই লেকের পানি কমতে থাকায় বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পাঁচটি ইউনিটের মধ্যে একটি ইউনিটে বিদুৎ উৎপাদন করা হয়েছিল। যা একটি ইউনিটে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়েছিল বলে জানান কর্ণফুলী জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কর্তৃপক্ষ।

জল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তথ্য মতে, কাপ্তাই লেকে সর্বোচ্চ পানির ধারণ সক্ষমতা রয়েছে ১০৯ ফুট। কিন্তু লেকের পানি ১০৭ হতে ১০৮ ফুটের কাছাকাছি হলে কাপ্তাই বাঁধের ১৬ টি স্লুইস গেইট দিয়ে কর্ণফুলী নদীতে পানি নিষ্কাশন করা হয়। ১৯৬০ সালে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য রাঙ্গামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীতে বাঁধ দিয়ে নির্মাণ করা হয় কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র। দেশের একমাত্র পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ৫টি ইউনিট হতে সর্বমোট ২৪২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়, যা জাতীয় গ্রিডে সঞ্চালন করা হয়।
কাপ্তাই লেকে বাঁধ দেওয়া অংশে ১২ দশমিক ২ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১১ দশমিক ৩ মিটার প্রস্থের ১৬টি জলকপাট বা স্লুইস গেট রয়েছে। এগুলো একসঙ্গে প্রতি সেকেন্ডে ৫ লাখ ২৫ হাজার কিউসেক পানি নির্গমন করতে পারে।

কর্ণফুলী জল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক মাহমুদ হাসান জাগো নিউজকে বলেন, ডিসেম্বর মাস থেকে হ্রদের পানি কমতে থাকায় বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পাঁচটি ইউনিটের মধ্যে এখন শুধু ৪ নাম্বার ইউনিটটি চালু রয়েছে। বর্তমানে এই একটি ইউনিটে ৪৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে।
ব্যবস্থাপক আরও বলেন, বিদুৎ উৎপাদন বাড়া বা কমা এটা সম্পূর্ণ হ্রদের পানির ওপর নির্ভর করে। হ্রদে পানি বাড়লে অনেক সময় দুইটি ইউনিটও চালু হয়। প্রতি বছর বিশেষ করে শুষ্ক মৌসুমে এই সমস্যাটা কম বেশি একটু দেখা দেয় বলে জানান তিনি।
আরমান খান/কেএইচকে/এমএস