কক্সবাজার
শহীদ মিনারে মুক্তিযুদ্ধের গ্রাফিতি মুছে আলপনা, সমালোচনায় তৎপর
১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস। এ উপলক্ষে কক্সবাজার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের দেয়ালগুলোতে আগে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণমূলক গ্রাফিতি থাকতো। কিন্তু এ বছরের বিজয় দিবস উপলক্ষে শহীদ মিনার সাজাতে দেওয়ালে থাকা পূর্বের মুক্তিযুদ্ধের আলপনা মুছে আলপনা আঁকা হয়েছে। আলপনাগুলো সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর চরম বিতর্ক তৈরি হয়। পরে সেটিও মুছে ফেলার পদক্ষেপ নেয় জেলা প্রশাসন।
নতুন আলপনাগুলো দেখতে ‘বিয়েবাড়ির’ আলপনার মতো হওয়ায় সবার নজরে পড়ে। মোবাইলে ধারণ করে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার পর জেলার সাংস্কৃতিক-সামাজিক অঙ্গনে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যার কিছু আগে স্থানীয় গণমাধ্যম ও সংস্কৃতিকর্মী মানিক বিষয়টি নিয়ে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি ভিডিও শেয়ার করেন।

ভিডিওতে তিনি বলেন, ‘কক্সবাজার শহীদ মিনারে বিজয় দিবসের প্রস্তুতি এরই মধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে। কিন্তু রং-তুলিতে যে গ্রাফিতি আঁকা হয়েছে সেখানে মুক্তিযুদ্ধের কোনো স্মৃতি নেই। এটি আসলে দুঃখজনক। আমরা এর আগে দেখেছি এখানে মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন স্মৃতি-বাণী রাখা হয়েছিল।’
ওই ভিডিওর মন্তব্যের ঘরে রোকসানা আক্তার রক্সি নামে একজন লিখেছেন, ‘মনে হচ্ছে বিয়ে বাড়ির কিংবা বৈশাখেরই আলপনা। কারা করেছে?’
কাব্য সৌরভ নামে আরেকজন মন্তব্য করেন, ‘এটা তো আলপনা মিনার হয়ে গেলো।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক জিনিয়া শারমিন রিয়া বলেন, ‘এখানে এমন না যে বিয়ে হচ্ছে বা নববর্ষ পালন করা হচ্ছে, যে এভাবে আলপনা আঁকতে হবে। মুক্তিযুদ্ধ আমাদের অহংকার, এখানে অবশ্যই প্রাসঙ্গিক কিছু থাকার দরকার ছিল।’
কক্সবাজার সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী নুরুল হাকিম বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস দেশের প্রতিটি প্রজন্মের কাছে গৌরবের। যারা এ সাজ-সজ্জায় জড়িত তাদের উচিত ছিল এখানে সেই ইতিহাসকে প্রাধান্য দেওয়া। কিন্তু তা হয়নি। উল্টো পরিবেশটাকে একরকম দৃষ্টিকটূ করে ফেলা হয়েছে।’
বিতর্কের পর সন্ধ্যা ৭টার দিকে শহীদ মিনার স্থল পরিদর্শনে এসে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক এম এ মান্নান আলপনাগুলো সরাতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন।
ডিসি গণমাধ্যমকে জানান, আলপনাগুলো মুছে ফেলতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রাত ৯টার দিকে প্রতিবেদন লেখার পূর্বে দেখা যায়, প্রশাসনের উদ্যোগে শহীদ মিনারের দেয়ালগুলো লাল-সাদা কাপড়ে ঢেকে রং দিয়ে আলপনা মুছে ফেলার কর্মতৎপরতা চলছে।
সায়ীদ আলমগীর/এফএ/জেআইএম