ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

রামুতে ভারী অস্ত্রের ম্যাগজিন রাখার বিপুল সরঞ্জাম জব্দ, আটক ৩

সায়ীদ আলমগীর | কক্সবাজার | প্রকাশিত: ০৫:৩২ পিএম, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫

কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের রামু-নাইক্যংছড়ি সড়ক দিয়ে মিয়ানমার সীমান্ত এলাকায় নেওয়ার পথে বিপুল পরিমাণ ভারী আগ্নেয়াস্ত্রের ম্যাগজিন রাখার সরঞ্জাম জব্দ করা হয়েছে। এসময় তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) ভোররাতে রামু-নাইক্যংছড়ি সড়কের মাথায় চেকপোস্ট বসিয়ে এসব মালামাল জব্দ করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ভুঁইয়া।

এসময় গ্রেফতারকৃতরা হলেন, বান্দরবানে নাইক্যংছড়ির সদর ইউপির ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কম্বনিয়া এলাকার নুরুল আলমের ছেলে শাহজাহান (২৫),একই ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের আশারতলীর বদিউজ্জামানের ছেলে মো. ইলিয়াছ (১৯) ও ২ নম্বর ওয়ার্ডের ঘিলাতলীর এম এ সামাদের ছেলে আতিকুর রহমান (২৫)।

পুলিশ জানায়, মিয়ানমার সীমান্তবর্তী এলাকায় অবস্থানরত সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর জন্য আগ্নেয়াস্ত্রের সরঞ্জাম বহনের পণ্য নিয়ে রামু হয়ে নাইক্ষংছড়ির দিকে কিছু লোক যাচ্ছে। এটা জানার পর রামু থানার ওসি মনিরুল ইসলাম ভুঁইয়ার নেতৃত্বে এসআই মোহাম্মদ আনোয়ার ফোর্সসহ কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের রামুর জোয়ারিয়ানালা চাবাগানস্থ নাইক্ষ্যংছড়ি রাস্তার মাথায় অস্থায়ী চেকপোস্ট বসান। ভোর রাত ২টা দিকে একটি মিনি ট্রাক চেকপোস্ট অতিক্রম করার সময় দাঁড়াতে সিগন্যাল দেওয়া হয়। গাড়ীটি থামিয়ে চালক ও সঙ্গে থাকারা দৌঁড়ে পালানোর চেষ্টা করে। এসময় ধাওয়া দিয়ে তিনজনকে আটক করা হয়।

তারা জানায়, এরপর গাড়ীটি তল্লাশি করে গাড়িতে থাকা ৩২টি প্লাস্টিকের সাদা বস্তায় রক্ষিত এক হাজার ৬০০ পিস বাউন্ডলি (সামরিক বাহিনীর পোশাকে ব্যবহৃত অস্ত্রের ম্যাগজিন রাখার বেল্ট) পাওয়া যায়।

ওসি মনিরুল ইসলাম ভুঁইয়া জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটকরা জানায়-বাউন্ডলিগুলো সীমান্তবর্তী এলাকায় অবস্থানরত মিয়ানমারের সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর জন্য মিনি ট্রাক যোগে বহন করে নিয়ে যাচ্ছিল। গ্রেফতারকৃতসহ অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা জব্দকৃত ভারী অস্ত্রের বাউন্ডলি সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর কাছে সরবরাহ করে বাংলাদেশের জননিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন, জনসাধারণের মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টি, সরকারকে অস্থিতিশীল করাসহ দেশের অভ্যন্তরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির গোপন ষড়যন্ত্র অংশ হিসেবে গণ্য করে রামু থানায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে মামলা করা হয়েছে।

ওসি আরও জানান, সেনাবাহিনীর ব্যবহৃত কাপড় না হলেও একই আদলের কাপড়ে এসব বাউন্ডলি কোনো সশস্ত্র গোষ্ঠীর জন্য নেওয়া হচ্ছিল বলে আমাদের ধারণা। আবার সামনের নির্বাচনে ব্যবহার করার জন্যও এসব মজুত করা হচ্ছিল, এমনটিও সন্দেহের বাইরে নয়। আমরা অতিগুরুত্বের সঙ্গে বিষয়টি তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছি।

স্থানীয়রা বলছেন, সম্প্রতি কক্সবাজার টার্মিনালের দক্ষিণ-পশ্চিমে বাইপাস এলাকায় সড়কে দুজনকে প্রকাশ্যে গুলি করার ঘটনা প্রচার পাবার পর এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছিল। এরই মাঝে রামু থানা পুলিশের অভিযানে ১৬শ’ পিস বাউন্ডলি পাওয়ার ঘটনা আরো শঙ্কিত করে তুলেছে। রামুর কচ্ছপিয়া, গর্জনিয়া, নাইক্যংছড়ির দোছড়ি, ঘুমধুম এলাকা মায়ানমার সীমান্ত ঘেঁষা। এসব এলাকা আবার পাহাড়বেষ্টিত। ফলে, এখানে উগ্রবাদী সংগঠনের সশস্ত্র সদস্যদের অবস্থান থাকা অস্বাভাবিক কিছু নয়। এসব বাউন্ডলী হয় তাদের জন্য নেয়া হচ্ছিল না হয় আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অপরাধ কর্মকাণ্ড ঘটাতে জড়ো করছে।

কক্সবাজার পুলিশ সুপার এ.এন.এম সাজেদুর রহমান বলেন, এত বিপুল পরিমাণ বাউন্ডলি কোথায় নেওয়া হচ্ছিল, কারা এর সঙ্গে জড়িত তা শনাক্ত করতে গুরুত্ব সহকারে কাজ করছে পুলিশ। আশা করছি, শিগ্‌গিরই তা শনাক্ত হবে এবং সংযুক্তদের আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে।

সায়ীদ আলমগীর/কেএইচকে/এএসএম