ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

যশোরে শীতের দাপট, বিপর্যস্ত জনজীবন

জেলা প্রতিনিধি | যশোর | প্রকাশিত: ০২:৩৫ পিএম, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫

টানা শীতের দাপটে নাকাল যশোর। গত ক’দিনের হাড় কাঁপানো শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। গত দুদিন তাপমাত্রা হলেও শীত কমেনি। সূর্যের দেখা না মেলায় কুয়াশা আর উত্তরের বাতাসে বেড়েছে শীতের তীব্রতা।

সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) যশোর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

এর আগে শনিবার যশোরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি ও শুক্রবার এ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দুদিন দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল যশোরে। জেলায় গত কয়েকদিনের শৈত্যপ্রবাহের পর তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে উঠেছে। কিন্তু মেঘলা আকাশ, কুয়াশা ও বাতাসের কারণে শীত অনুভূত হচ্ছে তীব্র আকারে। এখন শেষ রাত থেকে শুরু করে ভোর দিকে ঘন কুয়াশার সৃষ্টি হচ্ছে। বেলা বাড়লে মাত্রা অনেকটা কমে আসলেও হালকা ধরনের কুয়াশা চোখে পড়ছে। এছাড়া সূর্য মেঘের আড়ালে থাকায় বেড়েছে ঠান্ডার দাপট।

আবহাওয়া অফিস সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, যশোরাঞ্চলে পৌষের দ্বিতীয় সপ্তাহে ব্যারোমিটারের পারদ নেমে গেছে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে। শুরু হয়েছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। আর সেই সঙ্গে গত কয়েকদিন ধরে বিরাজ করছে কুয়াশা ও বাতাসের দাপট। দুইয়ে মিলে কাঁপন লেগেছে হাঁড়ে।
যশোরের তাপমাত্রা নেমে আসে ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এটি দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। এর আগে শুক্রবারও দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল যশোরে। রোববার তাপমাত্রা কিছুটা বেড়ে ১১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।

সোমবার এ তাপমাত্রা ছিল ১৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কিন্তু গত দুদিনে দিনভর সূর্যের দেখা না মেলায় কুয়াশা আর উত্তরের বাতাসে হাড়ে কাঁপন অব্যাহত রয়েছে।

এদিকে গায়ে কাঁপন ধরানো ঠান্ডায় মানুষের পাশাপাশি প্রাণিকূলেরও জবুথবু অবস্থা। তীব্র রকমের শীতে মানুষের পাশাপাশি পশুপাখিরাও নাকাল হয়ে পড়ছে। শীতের দাপটে সবচেয়ে কষ্ট পাচ্ছেন শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষ। জীবন জীবিকার তাগিদে শীত উপেক্ষা করে তাদের রুটি রুজির সন্ধানে ঘরের বাইরে বের হতে হচ্ছে। হাড় কাঁপানো ঠান্ডার মধ্যে ভোরের আলো ফুটতেই কাজের জন্য বাড়ির বাইরে বেরিয়ে পড়ছেন।

শহরের দড়াটানায় রিকশাচালক আমিরুল জানালেন, কুয়াশা আর উত্তরের বাতাসের কারণে শহরে লোকজন কম, যাত্রীও মিলছে না। শীতের জন্য রিকশায় কেউ উঠতে চায় না। তবুও জীবিকার তাগিদে প্রতিদিন ঘর ছেড়ে বের হতে হচ্ছে।

যশোরে শীতের দাপট, বিপর্যস্ত জনজীবন

তীব্র ঠান্ডার কারণে কৃষকরা বোরের বীজতলা ক্ষতিগ্রস্তের আশঙ্কাও করছেন। প্রচন্ড এ ঠান্ডা আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকলে বীজতলা ‘কোল্ড স্ট্রোকে’ বিনষ্টের দুশ্চিন্তা করছেন। আলু ও সরিষার যারা আবাদ করেছেন তারাও ঠান্ডা ও কুয়াশায় চারা নষ্টের আশংকা করছেন।

জেলা কৃষি অফিস জানিয়েছে, মৃদু শৈত্যপ্রবাহের কারণে জেলায় রবি ফসল, বোরো ধানের বীজতলা এবং মৌ খামারিদের মধু সংগ্রহে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। জেলার আট উপজেলার মাঠে সরিষা, ভুট্টা, পেঁয়াজ, রসুনসহ বিভিন্ন মৌসুমি ফসল এবং বোরো ধানের বীজতলা রয়েছে।

যশোর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোশাররফ হোসেন বলেন, শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে ফসলের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। কৃষিকাজ ব্যাহত হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে কৃষকদের ফসল সুরক্ষায় আগাম সতর্কতা ও করণীয় সম্পর্কে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। মাঠ পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তারা নিয়মিত ফসলের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছেন। যাতে কোনো ক্ষতি হলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া যায়।’

মিলন রহমান/আরএইচ/জেআইএম