স্কুলছাত্র হত্যা মামলায় ৫ জনের ফাঁসি
নরসিংদীতে চাঞ্চল্যকর শিশু অয়ন হত্যা মামলায় পাঁচজনকে ফাঁসি আদেশ দিয়েছের আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেক আসামিকে আরো এক লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড করা হয়। বুধবার দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক শামীম আহাম্মেদ এ আদেশ দেন।
নিহত স্কুলছাত্র মো. হাসিবুল হাসান অয়ন (৬) ভেলানগর এলাকার সোহরাব হোসেনের ছেলে। সে নরসিংদী ব্রাহ্মন্দী কে কে এম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির ছাত্র।
সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলো- ইয়াসিন খানের ছেলে সজীব খান (২২), খোরশেদ আলমের ছেলে শাকীল মিয়া (১৮), হযরত আলীমের ছেলে ইমরান (২০), আফতাব উদ্দিন ভূঁইয়ার ছেলে শাশীম ওসমান (১৯), রুহুল আমিন মিয়ার ছেলে রুমেল মিয়া (১৮)। আসামিরা সবাই সদর উপজেলার হাজিপুর ইউনিয়নের বদরপুর গ্রামের বাসিন্দা। এদের মধ্যে ইমরান (২০) পলাতক। তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ব্রাহ্মন্দী কে কে এম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির ছাত্র অয়ন ২০১৩ সালের ২৬ মে বিকেলে বাসার সামনে খেলতে বের হয়। এরপর থেকে তার কোনো সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না। ঘটনার একদিন পর রুবেল নামে এক ব্যক্তি ফোন করে অয়নকে অপহরণ করা হয়েছে বলে তার পরিবারকে জানায়।
অপহরণকারীরা মুক্তিপণ হিসেবে তার পরিবারের কাছ থেকে দুই লাখ টাকা দাবি করে। অন্যথায় তাকে হত্য করা হবে বলেও হুমকি দেয় দুর্বৃত্তরা।
পরে বিষয়টি পুলিশকে জানিয়ে সদর মডেল থানায় অপহরণ মামলা দায়ের করেন অপহৃত শিশুর বাবা সোহরাব হোসেন। এরই মধ্যে অপহরণের চারদিন পর ঘোড়াশাল শীতলক্ষ্যা নদীর ব্রিজের নিচ থেকে শিশু অয়নের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।
দীর্ঘ তদন্ত শেষে পুলিশ পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ১৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০-এর ৮ তৎ ৩০২/২০১/৩৪ ধারা মোতাবেক আসামিদের দোষী সাব্যস্ত করে পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করেন। একই সঙ্গে প্রত্যেক আসামিকে আরো এক লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড করা হয়।
রাষ্টপক্ষের আইনজীবী ছিলেন এপিপি অলিউল্লাহ, অ্যাড. এ কে এম মনির। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী শওকত আলী পাঠান।
রায় পেয়ে খুশি নিহত স্কুলছাত্র আয়নের বাবা সোহরাব হেসেন। তিনি বলেন, ছেলেকে ফিরে না পেলেও সকলের সহযোগিতায় ছেলে হত্যার বিচারের রায় পেয়েছি। এখন সরকারের কাছে আমার একটাই দাবি, এসব খুনিদের দ্রুত ফাঁসির রায় কার্যকর করা হোক।
সঞ্জিত সাহা/এআরএ/এমএস