জয়পুরহাটে আলু বীজের তীব্র সঙ্কট
চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় জয়পুরহাটে দেখা দিয়েছে মানসম্পন্ন আলু বীজের তীব্র সঙ্কট। ডিলারদের কাছে টাকা জমা দিয়েও সময়মতো বীজ সংগ্রহ করতে পারছেন না কৃষকেরা।
সঙ্কটের অজুহাতে ডিলারদের বিরুদ্ধে বীজের দাম বেশি নেয়ারও অভিযোগ কৃষকদের। তবে সরবরাহ কম হলেও এবার বীজের সঙ্কট হবে না বলে জানিয়েছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের এক কর্মকর্তা।
আলু উৎপাদনে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম জেলা জয়পুরহাটে এবার এক লাখ একর জমিতে আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে জেলা কৃষি বিভাগ, যার বিপরীতে প্রয়োজন সাড়ে ১৫ হাজার মেট্রিক টন আলু বীজ। কিন্তু চাহিদা থাকা সত্ত্বেও বিএডিসি এবার জেলায় আলু বীজ সরবরাহ করেছে মাত্র ৮০০ মেট্রিক টন। যেখান থেকে ৫ টন করে বরাদ্দ পেয়েছেন জয়পুরহাট বিএডিসির ১১৪ জন বীজ ডিলার।
এছাড়া ব্র্যাকসহ বেসরকারি কিছু কোম্পানিও আমদানি করেছে উন্নত জাতের আলু বীজ। তারপরও চাহিদা মিটছে না কৃষকদের। ফলে সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়েও বেশি দামে আলু বীজ সংগ্রহ করতে বাধ্য হচ্ছেন কৃষকেরা।
জয়পুরহাট সদর উপজেলার হালুট্রি গ্রামের বেলাল মিয়া, পাঁচবিবি উপজেলার ধরঞ্জি গ্রামের মাহমুদ হোসেন, কালাই উপজেলার হাতিয়র গ্রামের শামিম হোসেনসহ অনেক কৃষক জানান, চাহিদার তুলনায় বীজ পাওয়া যাচ্ছে না, পাওয়া গেলে ডিলাররা বিভিন্ন জাতের আলুর বীজের দাম ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত বেশি নিচ্ছে।
ক্ষেতলাল উপজেলার ইটাখোলা গ্রামের কৃষক খলিল আহম্মেদ জানান, গত বছর গ্রানুলা আলুর বীজ ১ হাজার থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা মণ কিনেছি, এবার সেই আলুর বীজ ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকা মণ কিনতে হচ্ছে।
জয়পুরহাট আলু বীজের সাব-ডিলার সদরের বড়ইতলী এলাকার কামরুল ও ক্ষেতলাল উপজেলার আযম এবং কালাই উপজেলার আল-মামুন জানান, চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ কম থাকায় বর্তমান বাজারে আলু বীজের সঙ্কট দেখা দিয়েছে।
এছাড়া কৃষকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত মূল্য আদায়ের বিষয়টি স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে অস্বীকার করে জানান, আমরা কোম্পানির নির্ধারিত তালিকা অনুযায়ী আলুর বীজ বিক্রয় করছি, অতিরিক্ত দাম নেয়ার প্রশ্নই আসে না।
জয়পুরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (শস্য) মো. আবু হোসেন জানান, চাহিদার তুলনায় বিএডিসির বরাদ্দ কম হলেও বেসরকারি কোম্পানির সরবরাহ করা আলু বীজের মাধ্যমে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব। এছাড়া কৃষকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের বিষয়টি কড়া নজদারির মধ্যে রাখা হয়েছে বলেও জানান কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের এই কর্মকর্তা।
মানসম্মত আলু বীজের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি আলুর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে আন্তরিক হবেন সংশ্লিষ্টরা- এমন প্রত্যাশাই কৃষকদের।
রাশেদুজ্জামান/এফএ/এনএইচ/পিআর