ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

প্রবাসীর স্ত্রীসহ পুলিশের এসআই গ্রেফতার

প্রকাশিত: ০৩:৪০ পিএম, ১৯ ডিসেম্বর ২০১৬

নরসিংদীতে অপহরণ ও প্ররোচনা মামলায় পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) জিয়াউর রহমানকে (৩৮) মালয়েশিয়া প্রবাসীর স্ত্রীসহ গ্রেফতার করেছে সদর মডেল থানা পুলিশ।

সোমবার দুপুরে নরসিংদী পুলিশ লাইন থেকে এসআই জিয়াউর রহমানকে ও সদর উপজেলার শীলমান্দি ইউনিয়নের তুলশীপুর থেকে প্রবাসী মানিকের স্ত্রী পারভিন আক্তারকে (২৬) গ্রেফতার করে পুলিশ।

তাদেরকে বিকালে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। প্রবাসী মানিক মিয়ার স্ত্রী পারভীন নরসিংদীর চর এলাকা নিলক্ষার মৃত. মহরম আলীর ছেলের বউ। তার দুটি সন্তান রয়েছে। বর্তমানে এলাকাটিতে প্রশাসনের জারিকৃত ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে প্রতিদিনই ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নি-সংযোগের ঘটনা ঘটছে।

এলাকাটিতে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এর মধ্যে রায়পুরার দায়িত্বপ্রাপ্ত এসআই জিয়ার এ ধরনের নিকৃষ্ট ঘটনাটি পুলিশকে মারত্মকভাবে প্রশ্নের সম্মুখীন করে তোলেছে। এসআই জিয়াউর রহমানের বাড়ি বি-বাড়িয়া জেলার, কসবা উপজেলার বাউলগজ্ঞ গ্রামে।

গ্রেফতার জিয়াউর রহমান সর্বশেষ জেলার রায়পুরা থানায় কর্মরত ছিলেন। দ্বিতীয় বিবাহের অপরাধে এক সপ্তাহ পূর্বে তাকে রায়পুরা থানা থেকে ক্লোজড করে নরসিংদী পুলিশ লাইনে নেয়া হয়। সর্বশেষ দ্বিতীয় স্ত্রী পারভিনের সাবেক স্বামী মানিক মিয়া বাদী হয়ে আদালতে মামলা দায়ের করলে সোমবার সকালে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

পুলিশ ও আদালত সূত্রে জানা যায়, নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার নিলক্ষা গ্রামের মানিক মিয়া মালয়েশিয়া প্রবাসী ছিলেন। এক বছর আগে প্রবাসে তার কক্ষ থেকে নরসিংদীর এক প্রবাসী সাড়ে ৫ লাখ টাকা চুরি করে নিয়ে যায়।

এ ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে মালয়েশিয়ায় একটি মামলা করেন। ৬ মাস আগে সেই মামলাটি দেশে স্থানান্তরিত করা হয়। নরসিংদী সদর মডেল থানায় স্থানান্তরিত মামলার বাদী ছিলেন প্রবাসী মানিক মিয়ার স্ত্রী পারভিন আক্তার।

সেই মামলার তদন্তের সুযোগে দুই সন্তানের জননী পারভিনের সঙ্গে সখ্যতা হয় তৎকালীন নরসিংদী সদর মডেল থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) জিয়াউর রহমানের। এরই প্রেক্ষিতে চলতি মাসের ২ তারিখে এসআই জিয়া প্রবাসীর স্ত্রী পারভিন আক্তারকে বিয়ে করেন। এসআই জিয়ার স্ত্রী ও দুই সন্তান রয়েছে।

গত ২৯ নভেম্বর মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফিরেন প্রবাসী মানিক মিয়া। এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার প্রবাসী মানিক মিয়া বাদী হয়ে এসআই জিয়াউর রহমান ও স্ত্রী পারভিন আক্তারের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন।

মামলার এজাহারে গত ৬ ডিসেম্বর নরসিংদী রেল স্টেশন মার্কেট থেকে এসআই জিয়া বাদীর স্ত্রী পারভিনকে অপহরণ করেছে বলে দাবি করা হয়। পরে তাকে প্ররোচিত করে এসআই জিয়া বিয়ে করেছেন বলে অভিযোগ করা হয়।

মামলাটি আজ সোমবার নরসিংদী সদর মডেল থানায় নথিভুক্ত করা হয়। এরই প্রেক্ষিতে সোমবার দুপুরে নরসিংদী পুলিশ লাইন থেকে এসআই জিয়াউর রহমানকে ও সদর উপজেলার শীলমান্দি ইউনিয়নের তুলশীপুর থেকে স্ত্রী পারভিন আক্তারকে (২৬) গ্রেফতার করে পুলিশ।

মামলার বাদী মানিক মিয়া বলেন, নিলক্ষা গ্রামে দুই পক্ষের টেঁটা ও বন্দুক যুদ্ধে সব কিছু প্রায় শেষ। এর মধ্যে পুলিশ এমন কাজ করে আমাদের সাজানো সংসার ভেঙে দিলো। এসআই জিয়ার কারণে আজ আমার দুই সন্তান মা হারা হয়েছে। প্রবাসে কষ্টার্জিত সমস্ত কামাই রোজগার নিয়ে আমাকে পথের ভিখারি করেছে।

অভিযোগ অস্বীকার করে গ্রেফতার এসআই জিয়াউর রহমান বলেছেন, আইন অনুযায়ী পারভিন তার স্বামীকে তালাক দেয়ার পর আমি বিয়ে করেছি। মামলায় অপহরণের যে তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে সেদিন আমি নিলক্ষায় সহিংসতার ঘটনার দায়িত্ব পালন করেছি।

নরসিংদী সদর মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সালাউদ্দিন মিয়া বলেন, অপহরণ ও প্ররোচনা মামলায় দাবিকৃত স্ত্রীসহ এসআই জিয়াকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের বিকেলে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

সঞ্জিত সাহা/এএম