ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

ঠাকুরগাঁওয়ে এক বাগানে লিচু ও মৌ চাষ

প্রকাশিত: ০৫:০৭ এএম, ২১ মার্চ ২০১৫

ঠাকুরগাঁওয়ের  মৌ চাষীরা এবার লিচু বাগানে মৌ মাছির বাক্স বসিয়ে মধু আহরণ করছেন।এর ফলে একদিকে যেমন মৌ চাষীরা মধু সংগ্রহ করে লাভবান হচ্ছেন, অন্যদিকে মৌ মাছির মাধ্যমে মুকুলে মুকুলে পরাগায়ন ঘটায় লিচু বাগান মালিকরা বাম্পার ফলনের আশা করছেন।

বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাস আম, কাঁঠাল ও লিচুর মৌসুম। এ সময় আম ও লিচুর বাগানে মৌমাছির বাক্স রেখে মধু সংগ্রহ করেন তারা। তাদের পালিত মৌমাছির দল কখনো বাগান, কখনো খেত, আবার কখনো বিল-ঝিলে ফুটে থাকা ফুল থেকে মধু আহরণ করে। যেখানে ফুল, সেখানে মধু ও মৌমাছির চাষ করেন মৌ চাষিরা।

ঠাকুরগাঁও জেলায় বেশ কিছু লিচু বাগান গড়ে উঠেছে। প্রতিবছর খরচবিহীন অল্প পরিচর্যায় মোটা অংকের আয় হয় বলে অনেকে লিচুর বাগান করেছেন। চলতি বছর ঠাকুরগাঁওয়ের ৫ উপজেলায় ৭০০ হেক্টর জমিতে প্রায় তিন হাজার বাগানে লিচু চাষ হয়েছে। বর্তমানে লিচুর বাগানগুলো মুকুলে ছেয়ে গেছে।

পঞ্চগড় এলাকার মনির খান ও রংপুরে ওয়াজেদ আলী নামে দুই মৌ চাষী বাগানে ছোট-বড় বিভিন্ন আকৃতির মৌমাছির বাক্স বসিয়ে বৈজ্ঞানিক উপায়ে মৌ চাষ করে মধু সংগ্রহ করছেন।

মৌ চাষী মনির জানান, প্রশিকা এনজিও ১৯৯৮ সালে অস্ট্রেলিয়া থেকে এপিচ মেইলিফ্রা জাতের মৌ মাছি বাংলাদেশে আনে এবং চাষীদের প্রশিক্ষণ দেয়। প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত হয়ে তারাও মধু সংগ্রহ শুরু করে। ওই বাগানে তারা শতাধিক ব্র্যান্ড ও নিউক্লিয়াস নামের ছোট-বড় কাঠের বাক্স স্থাপন করেছেন। প্রতিটি বাক্সে একটি রাণী মৌমাছি, একটি পুরুষ মৌমাছি ও অসংখ্য কর্মী মৌমাছি রয়েছে। কর্মী মৌমাছিরা ঝাঁকে ঝাঁকে লিচুর মুকুলে ছুটে যায়। পরে মুকুল-থেকে মধু সংগ্রহ করে মৌমাছিরা নিজ নিজ মৌচাকে এনে জমা করছে। ১০-১৫ দিন পরপর প্রতিটি বাক্স থেকে চাষীরা ৬-৭ মণ মধু সংগ্রহ করছেন। শুধু স্থানীয়ভাবে নয়, বিভিন্ন কোম্পানির কাছেও তারা মধু সরবরাহ করছেন।

যে লিচু গাছে মৌমাছির আগমন বেশি হয় সে গাছের মুকুলে পরাগায়ন ভালো হয়। ফলে ওই গাছে বা বাগানে লিচুর বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা থাকে বলে জানালেন বাগানের বার্ষিক চুক্তিভিত্তিক মালিক সাদেকুল ইসলাম। কাঠের তৈরি শত শত বিশেষ বাক্সের মাধ্যমে মৌ চাষ করে মধু সংগ্রহ করার দৃশ্য দেখে এলাকাবাসী মধু কেনার জন্য লিচু বাগানে ছুটে যাচ্ছেন।

ক্রেতারা জানান, বাজারে খাঁটি মধু পাওয়া যায় না। এখান থেকে নির্ভেজাল মধু সংগ্রহ করতে পেরে তারা খুশি।  

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক আরশেদ আলী জানান, এবার প্রতিটি বাগানে ভাল মুকুল এসেছে। বিভিন্ন বাগানে মৌ চাষ করায় পরাগায়ন বেশী হয়েছে তাই লিচুর ভাল ফলন হবে বলে তিনি আশা করছেন। তিনি আরও জানান, বাগানে মৌ চাষ করলে পরাগায়ন বহুল পরিমাণে বৃদ্ধি পায় ফলে ফলনও ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। এতে কৃষক ও মৌচাষী উভয়েরই লাভবান হবে।

এসএইচএ/এমএস