অবহেলায় নষ্ট হচ্ছে মোস্তফা আজিজের ছবি
ঝিনাইদহ জেলার শৈলকূপা থানার সন্নিকটে মনোহরপুর গ্রামে শিল্পী মোস্তফা আজিজের নিবাস। দেশবরেণ্য এই চিত্র শিল্পীর মনোহরপুরের বাড়ির টিনের ঘরে ঝুলানো আছে অসংখ্য চিত্রকর্ম। যেগুলো অনাদরে অবহেলায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
মোস্তফা আজিজ সারা জীবন মানুষের ছবি এঁকেছেন। তার জন্ম ১৯২৩ সালের ১ এপ্রিল। বরেণ্য কবি মরহুম গোলাম মোস্তফার দ্বিতীয় ছেলে শিল্পী মোস্তফা আজিজ। মোস্তফা আজিজের ছোট ভাই দেশের স্বনামধন্য পাপেট শিল্পী মোস্তফা মনোয়ার।
মোস্তফা আজিজ ১৯৪৩ সালে কলকাতার বালীগঞ্জের টি. মিত্র হাই স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাশ করার পর তিনি কলকাতা বঙ্গবাসী কলেজে এক বছর পড়েন। এরপর তিনি কলকাতা কলেজ অব আর্টস অ্যান্ড ক্রাফট এ ভর্তি হন। ১৯৫৩ সালে ছয় বছরের পরিবর্তে দশ বছরে সেখান থেকে ‘কমার্শিয়াল আর্টস’ এ ডিপ্লোমা ডিগ্রি অর্জন করেন।
শিল্পী মোস্তফা আজিজ, মুহূর্তেই এঁকে ফেলতেন মানুষের ছবি। পথের মানুষের ছবি যেমন এঁকেছেন, তেমনি দেশবরেণ্যের প্রতিকৃতিও স্থান পেয়েছে তার ক্যানভাসে।
এমন অসংখ্য শিল্পকর্ম রেখে এই শিল্পী মারা যান ১৯৯৫ সালে। দীর্ঘদিনের অবহেলা আর অযত্নে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে দুর্লভ সেসব ছবি। কবি গোলাম মোস্তফার বাড়ি ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার মনোহরপুর গ্রামে। কবির মেজো ছেলে মোস্তফা আজিজের বেড়ে ওঠা এ গ্রামেই। পথের মানুষের আনন্দে তিনি খুঁজে পেতেন জীবনের রং। মুহুর্তেই পেন্সিল দিয়ে ছবি এঁকে অবাক করে দিতেন সবাইকে।
হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, শের-ই-বাংলা এ কে ফজলুল হক, মাওলানা ভাষানীসহ দেশ-বিদেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের ছবি এঁকেছেন তিনি। তবে ভালোবাসতেন খেঁটে খাওয়া মানুষের ছবি আঁকতে। এঁকেছেন পশুপাখির ছবিও।
মৃত্যুর আগ পর্যন্ত স্বপ্ন ছিল নিজ গ্রামে শিশুদের জন্য একটি আর্ট স্কুল গড়ার। তবে পূরণ হয়নি তাঁর সে স্বপ্ন। বরেণ্য এ শিল্পীর সকল চিত্রকর্ম সংরক্ষণ করা হোক এ দাবি এলাকাবাসীর।
এমজেড/বিএ/পিআর