ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

‘কাঁকড়া’ আতঙ্কে গাইবান্ধাবাসী!

প্রকাশিত: ০৪:১০ পিএম, ১৩ এপ্রিল ২০১৫

‘কাকড়া’। চলন ফেরন ঠিক দানবের মতোই। সব সময় ভয়ঙ্কর শব্দ করে গাইবান্ধার গ্রাম-শহর দাঁপিয়ে বেড়ায়। কাকড়ার ভয়ঙ্কর শব্দ শুনলেই অনেক দূরের মানুষও আতঙ্কিত হয়ে ওঠেন। সামনে ইঞ্জিন, পেছনে বডি আর বড় বড় চাকা দেখলেই মনে হয় এই বুঝি যমদূত তেড়ে আসছে।

ইঞ্জিনসহ সামনের অংশটি মূলত জমি চাষ করার জন্য ব্যবহার করা হয়। যার নাম পাওয়ার টিলার। পাওয়ার টিলারের পেছনে একটি মালবাহী বডি যুক্ত করে অদ্ভূত এই পরিবহনটি গাইবান্ধার মানুষের কাছে কাকড়া নামেই পরিচিত। খুব দ্রুত চলাচল করায় প্রায়ই এই যানবাহনটির নীচে চাপা পড়ে প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে।

কোনো প্রকার ফিটনেস বা অনুমোদনহীন এই যানবাহনটি চলাচল করলেও স্থানীয় প্রশাসনের নজরে আসে না। সচেতন মহলের দাবি পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে ম্যানেজ করেই অবৈধ এই পরিবহনটি চলাচল করছে। যার ফলে একের পর এক দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটলেও প্রশাসনের টনক নড়ছে না। এমনকি একাধিকবার জেলা আইন-শৃঙ্খলা মিটিংয়ে আলোচনার পরও কোনো উদ্যোগ চোখে পড়েনি।

কাকড়া নামের এই পরিবহনটি প্রথমদিকে মূলত মাটি ও বালু পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত হতো। এখন ইটভাটাগুলোর ইট, কয়লার পাশাপাশি বিভিন্ন পণ্য পরিবহন করছে।

গাইবান্ধা নাগরিক পরিষদের আহ্ববায়ক অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম বাবু জাগো নিউজকে বলেন, শুধু দুর্ঘটনা আর প্রাণহানি নয় গাইবান্ধা শহরে দীর্ঘ যানজটেরও অন্যতম কারণ এই পরিবহনটি। এমনিতেই ছোট্ট শহর, সরু রাস্তা-ঘাট তার উপর বড় আকারের এই পরিবহন ঢুকে পড়লে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।

গাইবান্ধা নাগরিক আন্দোলনের আহ্ববায়ক ও রামচন্দ্রপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মির্জা হাসান জাগো নিউজকে বলেন, এই যানবাহনের কারণে গ্রামগঞ্জের রাস্তাঘাটগুলো এখন একেবারে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বারবার সংস্কার করা হলেও কাকড়ার অবাধ চলাচলের কারণে লাখ লাখ টাকা খরচ করেও রাস্তাগুলো ঠিক রাখা সম্ভব হচ্ছে না।

জাতীয় যুব জোটের সাধারণ সম্পাদক সুজন প্রসাদ বলেন, গাইবান্ধা শহরের ডেভিডকোম্পানী পাড়া, সরকার পাড়া, পলাশপাড়া প্রাইমারি স্কুলের রাস্তা, ভি-এইড রোড, গাইবান্ধা-বালাসিঘাট, গাইবান্ধা-পলাশবাড়ি সড়ক, স্টেডিয়াম সংলগ্ন সড়ক, ব্রীজ রোড, গাইবান্ধা-সাদুল্যাপুর সড়ক এবং গাইবান্ধা-কলেজ রোড, নাকাইহাট সড়ক দিন দিন কাকড়ার দখলে চলে যাচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, এই যানবাহনগুলোর চালকদেরও কোনো প্রশিক্ষণ নেই। অল্প বয়সের ছোটছোট ছেলেদেরকে দিয়ে এই যানবাহনগুলো চালানো হয়।

কাকড়ার চলাচল দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় শিশুদের স্কুলে পাঠিয়ে অভিভাবকরা সব সময় উদ্বিগ্ন থাকেন। এমনকি জেলা শহরের প্রাণকেন্দ্র স্টেশন রোড, ডিবি রোড, পিকে বিশ্বাস রোড, সার্কুলার রোডে কাকড়ার অবাধ বিচরণ লক্ষ্যণীয়।

স্থানীয় আহম্মদ উদ্দিন শাহ শিশু নিকেতনের অভিভাবক আন্না বেগম বলেন, স্কুল ভ্যানে সন্তানকে পাঠিয়ে কাকড়ার ভয়ে অস্থির থাকতে হয়।  

গাইবান্ধা ট্রাফিক ইন্সপেক্টর মো. সাদাকাতুল বারী জাগো নিউজকে বলেন, এসব অবৈধ যানবাহন চলাচল বন্ধের জন্য তাদের কঠোর নজরদারি রয়েছে।

এমজেড/একে/আরআইপি