গুম হবার ৫ বছর পর উদ্ধার
গুম হবার ৫ বছর পর পুলিশের হাতে ধরা পড়লো আহাদ শেখ নামের এক যুবক। বুধবার দুপুরে কোতয়ালি থানা পুলিশ গোপন সংবাদের ভিক্তিতে শহরের কোট চত্বর এলাকা থেকে তাকে উদ্ধার করে। আহাদ শেখ নিখোঁজ হবার পর তার বাবা-মা বাদী হয়ে প্রতিপেক্ষর নামে গুমসহ তিনটি মামলা করেছিল। বর্তমানে মামলাটি বিচারাধীন।
নিখোঁজ আহাদ শেখ উদ্ধার হওয়ায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে এ মামলার আসামিরা। পুলিশ জানিয়েছে, প্রতিপক্ষকে হয়রানি করতেই আহাদ শেখ এতদিন পালিয়ে ছিল।
মামলা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ফরিদপুর শহরের গোয়ালচামট এলাকার জনৈক রমজান আলীর রিকশা গ্যারেজে কাজ করতো রাজবাড়ি জেলার উদয়পুর গ্রামের ওহাব শেখের ছেলে আহাদ শেখ। বিগত ২০১০ সালের ২৫ জুলাই আহাদ নিখোঁজ হয় এমন দাবি করেন তার পরিবারের সদস্যরা। পরবর্তীতে আহাদের বাবা ওহাব শেখ গ্যারেজ মালিক রমজান, তার স্ত্রী আলেয়া বেগমকে আসামি করে একটি গুম মামলা দায়ের করে। পরবর্তীতে আহাদ শেখের মা আসমা বেগম বাদী হয়ে রাজবাড়ী ১নং আমলী আদালতে আরেকটি মামলা করেন।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, রমজানের গ্যারেজে কাজ করার সময় মালিকের মেয়ের সাথে সর্ম্পকে জড়িয়ে পড়ে আহাদ। সে সর্ম্পকের কথা জানতে পেরে গ্যারেজ মালিক ও তার স্ত্রী আহাদকে হত্যা করে গুম করে। নিখোঁজ আহাদের বাবা-মা তাদের ছেলেকে মেরে ফেলে গুম করা হয়েছে এমন কথা বলে আসামিদের কাছ থেকে বেশকিছু আর্থিক সুবিধাও নিয়েছেন বিভিন্ন সময়। মামলার পর থেকে দীর্ঘদিন ধরে আসামিরা নিখোঁজ আহাদকে খুঁজে বের করার চেষ্টায় ছিল।
মামলার আসামি রমজান আলী জানান, আহাদ শেখের বাবা-মা লোভী প্রকৃতির। তারা ছেলেকে বিভিন্ন স্থানে লুকিয়ে রেখে আমাদের সহায় সম্বল হাতিয়ে নেবার চেষ্টায় ছিল। পুলিশ আহাদকে খুঁজে না পেলে তারা সারা জীবন জেলেই পঁচে মরতেন। গুম মামলা হবার পর এখন আমি পথের ফকির হয়ে গেছি। সহায় সম্বল যা ছিল সবকিছুই বিক্রি করে মামলা চালাতে হয়েছে।
কোতয়ালি থানা পুলিশের এসআই বিপুল চন্দ্র দে জানান, আহাদ শেখ ফরিদপুরে একটি চুরির মামলায় হাজিরা দিতে আসে। পরে গোপন সংবাদের ভিক্তিতে আহাদকে উদ্ধার করা হয়। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আহাদ জানায়, বাবা-মায়ের কথা মতো সে ৫ বছর চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, কক্সবাজার জেলায় ছিল। সাজানো গুম হয়ে সে প্রতিনিয়ত তার বাবা-মায়ের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করতো বলে পুলিশকে জানিয়েছে।
প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে আহাদ শেখ ও তার বাবা-মা যে কৌশল অবলম্বন করেছে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন কোতয়ালি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ মোহসিনুল হক।
এমএএস/আরআই