ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

চুয়াডাঙ্গায় রাজার ভিটায় মিললো প্রাচীন নিদর্শন

প্রকাশিত: ১০:২৭ এএম, ২০ মে ২০১৭

চুয়াডাঙ্গায় ঐতিহাসিক নিদর্শন আবিষ্কারে অনুসন্ধান শুরু করেছে সরকার। চুয়াডাঙ্গার কালুপোল গ্রামে রাজার ভিটা নামক স্থানে শুরু হয়েছে খনন কাজ। বাংলাদেশ সরকারের প্রত্নতত্ত্ব মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে কাজ শুরু হয়েছে।

এদিকে সন্ধান মিলতে শুরু করেছে ঐতিহাসিক নিদর্শনের। পুরো নিদর্শন আবিষ্কার হলে চুয়াডাঙ্গার ইতিহাসে একটি নব্য অধ্যায়ের সংযোজন হবে বলে প্রত্নতত্ত্ববিদরা মনে করছেন।

ভূ-প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলায় ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে প্রত্নতত্ত্ব ও ঐতিহাসিক নিদর্শন আবিষ্কারে জরিপ শুরু হয়। এ জরিপে জেলার ৯৪ স্থানে অনুসন্ধান চালানো হয়।

এর মধ্যে ৩টি স্থানকে চূড়ান্তভাবে চিহ্নিত করা হয়। দামুড়হুদার চারুলিয়া, জীবননগরের দৌলতগঞ্জ এবং চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার কালুপোল রাজার ভিটা। ১ একর ৮ শতক জমির ওপর এ ভিটা অবস্থিত।

খুলনা প্রত্নতাত্ত্বিক অধিদফতরের আঞ্চলিক পরিচালক আফরোজা খান মিতার নেতৃত্বে সহকারী পরিচালক একেএম সাইদুর রহমানসহ ১২ জন অনুসন্ধান আবিষ্কারে ৯ এপ্রিল থেকে কাজ শুরু করেছেন।

এরই মধ্যে বেশ কিছু নমুনা আবিষ্কৃত হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে ধূপচি, লোহার বল্লম, মাটির হাঁড়ি, সরা, কড়ি, পশুর হাড়, মাটির পুতুল, প্রদীপ, সানকিসহ বেশ কিছু নিদর্শন।

Chuadanga

কাস্টোডিয়ান গোলাম ফেরদৌস বলেন, নমুনা দেখে মনে হচ্ছে এগুলো সুলতানি আমলের। সে সময়কার রাজারা তাদের বাড়িতে এ সমস্ত জিনিসপত্র ব্যবহার করতেন। ইটগুলো ২ ইঞ্চি পুরু এবং ১২-১৩ ইঞ্চি লম্বা। অনেকটাই বর্গাকৃতির। তবে এ ভিটায় হিন্দু-মুসলমানের বসবাস ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রাপ্ত নমুনায় এমন নিদর্শন মিলেছে।

তবে এলাকার মানুষের মধ্যে কুসংস্কার থাকায় খোঁড়াখুঁড়ির কাজে লোকবল পাওয়া কঠিন হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। স্থানীয়দের ধারণা এখানকার মাটি খুঁড়লে সমস্যা বা অমঙ্গল হবে।

এলাকার কয়েকজন প্রবীণ ব্যক্তি জানান, এক সময় গন্ধরাজা বা গোবিন্দ রাজা নামে এক রাজা বাস করতেন কালুপোলের এই ভিটায়। বিশাল এলাকাজুড়ে ছিল তার নিয়ন্ত্রণ। তার ছিল হাতি, ঘোড়া আর অনেক গরু। চলাচলের সুবিধার্থে রাজা চিত্রা নদীর তীরে এই নির্জন স্থানে তার রাজ প্রাসাদ গড়ে তোলেন। বিস্তৃত রাজ্য আর বিশাল সৈন্য সামন্ত নিয়ে রাজা গোবিন্দ দাপটের সঙ্গে রাজ্য পরিচালনা করতেন। সেই সময় এই অঞ্চলে ইসলাম ধর্ম প্রচার করতে আসেন সাধক খাজা মালিক উল গাউস (র.)। তিনি এসে পার্শ্ববর্তী গড়াইটুপি নামক স্থানে আস্তানা গাড়েন। রাজা গোবিন্দের কাছে এ খবর গেলে তিনি দূত মারফত খাজা মালিক উল গাউসকে ইসলাম প্রচার বন্ধ করে এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দেন।

কিন্তু খাজা মালিক-উল গাউস রাজার কথা অগ্রাহ্য করেন। পরে তাদের মধ্যে লড়াই হলে রাজা পরাজিত হয়ে অন্য এলাকায় চলে যান। সেই থেকে রাজার ভিটা পরিত্যক্ত হয়ে যায়।

সালাউদ্দীন কাজল/এএম/এমএস