মোড়ে মোড়ে টোল আদায়, নাজেহাল ৫শ সিএনজি চালক
নরসিংদীর পলাশ উপজেলার রাস্তার মোড়ে মোড়ে গড়ে উঠেছে অবৈধ সিএনজি স্ট্যান্ড। এসব স্ট্যান্ড থেকে প্রতিদিন আদায় করা হচ্ছে লক্ষাধিক টাকার টোল চাঁদা। আর এসব অবৈধ টোল চাঁদা দিতে গিয়ে নাজেহাল হয়ে পড়েছে উপজেলার পাঁচশতাধিক সিএনজি চালক। ফলে নির্ধারিত ভাড়ার বদলে যাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া।
এছাড়া এসব স্ট্যান্ডে দীর্ঘসময় লাইনে বসিয়ে রাখার কারণে অনেক যাত্রীকে পড়তে হচ্ছে ভোগান্তিতে। এসবের প্রতিকারে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেনা প্রশাসন। তবে পৌর মেয়র বলছে, শুধুমাত্র একটি স্ট্যান্ড বৈধ। বাকিগুলে অবৈধ। টোল আদায়ও বৈধ নয়।
জানা যায়, পলাশ উপজেলায় প্রায় ১ কিলোমিটার দূরত্ব বজায় রেখে প্রতিটি মোড়ে মোড়ে গড়ে উঠা ইজারাবিহীন স্ট্যান্ডে ১০ থেকে ৭০ টাকা পর্যন্ত টোল আদায় করা হচ্ছে। এর মধ্যে ঘোড়াশালে মাত্র ১০০ গজের মধ্যে রয়েছে তিনটি সিএনজি স্ট্যান্ড। যা থেকে ৩০ টাকা করে ৯০ টাকা আদায় করা হচ্ছে।
এছাড়া পলাশ জামলাপুর ঘাট এলাকায় ৩০, ওয়াপদা এলাকায় ১০, বিএডিসি মোড় ১০, বিএডিসি বাসস্ট্যান্ড ৩০, চরসিন্দুর ৩০, তালতলি ১০, পারুলিয়া ২০, চরর্ণগর্দী বাজার ২০, পাঁচদোনায় ৭০ টাকা করে আদায় করা হচ্ছে।
এর মধ্যে দু-একটিতে রশিদের মাধ্যমে টোল আদায় করা হলে ও বাকিগুলোতে চলছে রশিদবিহীন চাঁদা আদায়ের মহাউৎসব। আর এসব আদায়কৃত অর্থ একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ভাগবাটোয়ারা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
উপজেলায় নিয়মিত সিএনজি চালক শাহাআলম, আমির হোসেন, সোহাগ মিয়া, আলী হোসেন (বাবু) ও আরিফুলসহ বেশ কয়েকজন অভিযোগ করে বলেন, প্রতিদিন একজন সিএনজি চালক ঘোড়াশাল পৌরসভার চাঁদাসহ আরও ১০ থেকে ১২টি স্ট্যান্ডে গাড়ি প্রতি দুইশ থেকে আড়াইশ টাকা দিতে হচ্ছে। টাকা না দিলে যাত্রী নামিয়ে দেয়, আবার অনেক সময় গাড়ির চাবিও রেখে দেয়। সরাদিন গাড়ি চালিয়ে যে কয় টাকা আয় করি তা থেকে গাড়ির জমা ও স্ট্যান্ড চাঁদা দিয়ে অনেক সময় বাজার-সদাইও করতে পারি না। এসব স্ট্যান্ডে চাঁদা দিতে গিয়ে অনেক সময় আমাদের যাত্রীদের থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করতে হচ্ছে।
এসব বিষয়ে স্ট্যান্ডগুলোর টোল আদায়কারী রফিক মিয়ার সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, তারা স্থানীয়দের সহযোগিতা নিয়ে স্ট্যান্ড স্থাপন করেছেন। স্ট্যান্ড পরিচালনা করার ও সিরিয়ালকারীর দৈনিক খোরাকির জন্য টোল আদায় করা হয়।
ঘোড়াশাল পৌর মেয়র শরিফুল হক শরিফ জানান, পৌরসভা থেকে শুধুমাত্র হাতেম নামে একজনকে একটি স্ট্যান্ড ইজারা দেয়া হয়েছে। যা থেকে রশিদের মাধ্যমে ২০ টাকা আদায় করবে। বাকিগুলোকে পৌরসভা থেকে অনুমতি দেয়া হয়নি।
এ ব্যাপারে পলাশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদা আক্তার জানান, অনুমতিবিহীন স্ট্যান্ড দিয়ে চাঁদা আদায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ। উপজেলার অবৈধ সিএনজি স্ট্যান্ডগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
সঞ্জিত সাহা/এমএএস/জেআইএম