গাইবান্ধায় আদম ব্যবসায়ী গ্রেফতার
গাইবান্ধা সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের পাবর্তীপুর কালিতলা গ্রাম থেকে আদম ব্যবসায়ী রেজাউল করিমকে (৫০) পুলিশ গত সোমবার রাতে তার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেছে। এসময় তার ছেলে আদম ব্যবসায়ী লাভলু মিয়া (৩০) পালিয়ে যান। তাদের দু`জনসহ অজ্ঞাত পরিচয় আরো ২-৩ জনের বিরুদ্ধে মালয়েশিয়ায় মানব পাচারের অভিযোগে থানায় মামলা রয়েছে। রেজাউল করিম ওই গ্রামের মৃত কছির উদ্দিনের ছেলে।
মামলা সূত্র ও পুলিশ জানায়, রেজাউল করিম ও তার ছেলে লাভলু মিয়া পার্শ্ববর্তী তিনদহ পূর্বপাড়া গ্রামের ইউপি সদস্য মজিবুর রহমানের ছেলে মাহমুদুল হাসান নয়নকে মালয়েশিয়ায় চাকরি দেয়ার কথা বলে ৪ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। তাকে বাড়ি থেকে মালয়েশিয়ায় পাঠানোর কথা বলে গত ফেব্রুয়ারি মাসে নিয়ে যান। দু`মাস পর মাহবুব হাসান নয়ন মালয়েশিয়া থেকে বাবা মজিবুর রহমানকে মোবাইল ফোনে জানান, তাকে মারপিট করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এরপর থেকে তার সঙ্গে পরিবারের আর কোন যোগাযোগ হয়নি। এরপর মজিবুর রহমান লাভলু মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করলে ছেলেকে ফিরিয়ে দেয়ার জন্য আরও ৪০ হাজার টাকা দাবি করেন তিনি।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে মজিবর রহমান গাইবান্ধা সদর থানায় ছেলেকে উদ্ধারের জন্য একটি মামলা দায়ের করলে পুলিশ ওই অভিযান চালায়। মজিবর রহমান জানান, তার ছেলে পোল্ট্রি ফার্ম ও গরু পালন করে প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত ছিল। কিন্তু লাভলু মিয়া বিভিন্ন সময় তাকে বিলাসবহুল জীবন যাপনের স্বপ্ন দেখিয়ে চাকরি দেয়ার কথা বলে চার লাখ টাকার বিনিময়ে মালয়েশিয়া পাঠান। কিন্তু সেখানে গিয়ে কোন কাজকর্ম না পেয়ে সে মানবেতর জীবন যাপন করতে থাকে। এসব বিষয়ে কথা বললে তাকে বেদম মারপিট করে হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এ ব্যাপারে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মো. ওসমান আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। এদিকে সন্তানের কোন সন্ধান না পেয়ে নয়নের বাবা মজিবর রহমান ও মা নুরুন্নাহার বেগম এখন পাগল প্রায়।
এলাকাবাসী জানান, রেজাউল করিমের ছেলে আদম ব্যবসায়ী লাভলু মিয়া গাইবান্ধা জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আরও ২০/২৫ জন যুবকের কাছ থেকে মালয়েশিয়ায় পাঠানোর কথা বলে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
অমিত দাশ/এমজেড/আরআই