বাঘের পর সুন্দরবনে হচ্ছে কুমির গণনার কাজ
সুন্দরবনে কুমির গণনার কাজ শুরু হয়েছে। বাঘের পর এবারই প্রথম শুরু হলো কুমির গণনা। ১ কোটি ২৪ লাখ টাকা ব্যয়ে এই কুমির গণনার কাজ চলবে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত। সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশের ছোট-বড় ৪৫০টি নদী ও খালে বিচরণরত কুমিরের সংখ্যা নির্ধারণের জন্য এ প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে।
বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তা (এসিএফ) কামাল উদ্দিন আহমেদ জাগো নিউজকে জানান, সুন্দরবনের কোন কোন এলাকায় কুমির বেশি অবস্থান করে তা জেনে সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে এই গণনার কাজ চালানো হচ্ছে। এছাড়া কুমিরের বংশ বিস্তার বা তার জীবন যাত্রার হুমকিগুলো সনাক্ত করার পর তা মোকাবিলায় সুন্দরবন বিভাগ ব্যবস্থা নেবে।
তিনি জানান, এক একটি মাদি কুমির বছরে ৬০/৭০টি ডিম পাড়ে। পুরুষ জাতের কুমিরের সঙ্গে স্ত্রী জাতের কুমিরের মিলন না হলে ওইসব ডিম থেকে বাচ্চা হয় না। এছাড়া সুন্দরবনের গুইসাপ ও শুকরসহ অন্যান্য বন্যপ্রাণি ডিমগুলো খেয়ে ফেলে। যে কারণে এর প্রজনন বিঘ্নিত হয়ে আসছে।
বন্যপ্রাণি ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ জিপিএস সিস্টেমের সাহায্যে সুন্দরবনে আজ থেকে কুমির গণনার কাজ শুরু হয়েছে। সুন্দরবন বিভাগের সহযোগিতায় ক্যারিনাম নামের একটি বেসরকারি সংস্থা ১ কোটি ২৪ লাখ টাকা ব্যয়ে এই কুমির গণনার কাজ করবে। কুমির গণনার কাজে প্রতিটি দলে ১০ জন করে নৌযানের মাধ্যমে সুন্দরবনের অভ্যন্তরের নদী-খালে ঘুরে ভাসমান কুমির ও নদী বা খালের তীরে থাকা কুমির গণনা করবেন। কুমিরের প্রজনন ও বংশ বিস্তারে কী কী হুমকি রয়েছে তা সনাক্ত করে সুপারিশমালা তৈরি করে সুন্দরবন বিভাগকে জানাবেন তারা। পাশাপাশি কুমিরের হুমকিগুলো মোকাবেলায় সুপারিশ করতে বলা হয়েছে।
জানা গেছে, সুন্দরবনের মধ্যে কুমির লবণাক্ত পানিতে থাকে। তবে ডিম পাড়ার সময় অপেক্ষাকৃত কম লোনা পানিতে চলে আসে। এই গণনার ফলাফলের পর কুমিরের সংখ্যা কোন অঞ্চলে বেশি বা কম ও প্রতি কিলোমিটারে কুমিরের ঘনত্বসহ বিভিন্ন বিষয় হালনাগাদ তথ্য উঠে আসবে।
বর্তমানে বাংলাদেশের সুন্দরবনে ১৫০ থেকে ২০০টি কুমির রয়েছে বলে ধারণা সুন্দরবন বিভাগের। বাংলাদেশ অংশে ৬ হাজার ১৭ বর্গ কিলোমিটারের সুন্দরবনে জল ভাগের পরিমাণ ১৮৭৪ বর্গ কিলোমিটার। যা সমগ্র সুন্দরবনের ৩১.১৫ ভাগ।
এই বিশাল জল ভাগের ছোট-বড় ৪৫০টি নদী ও খালে এই গণনার কাজ চালবে। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে কুমির গণনার কাজ শেষ হলে জানা যাবে সুন্দরবনে কুমিরের প্রকৃত সংখ্যা।
শওকত আলী বাবু /পিআর