ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

নরসিংদীতে পুলিশের দুই কর্মকর্তাসহ ৭ জন গ্রেফতার

জেলা প্রতিনিধি | নরসিংদী | প্রকাশিত: ০৯:২১ পিএম, ৩১ জানুয়ারি ২০১৮

নরসিংদীতে প্রবাসীর গাড়িতে স্বর্ণ ও নগদ টাকা ডাকাতির অভিযোগে রায়পুরা থানা পুলিশের দুই এসআই, দুই কনস্টেবলসহ ৭ জনকে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।

বুধবার দিনভর জেলার বিভিন্নস্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে ডাকাতির স্বর্ণের বার, নগদ টাকা ও একটি প্রাইভেটকার জব্দ করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন, রায়পুরা থানা পুলিশের এসআই সাখাওয়াত হোসেন ও আজহারুল ইসলাম, কনস্টেবল মাইনুল ইসলাম ও সাইদুল ইসলাম। অন্যরা হলেন, নুরুজ্জামান মোল্লা, সাদেক মিয়া ও গাড়ি চালক নূর মোহাম্মদ।

এর আগে রায়পুরা থানা পুলিশের এসআই সাখাওয়াত হোসেনের বিরুদ্ধে ৭০ লক্ষ টাকা ডাকাতির অভিযোগ উঠে। যা তদন্তাধীন। জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) সাইদুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

অভিযোগে জানা গেছে, নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার হাইরমারা গ্রামের বাসিন্দা মালয়েশিয়া প্রবাসী সোহেল মিয়া গত শুক্রবার সন্ধ্যায় এয়ারপোর্ট থেকে একটি ভাড়া করা গাড়িতে করে স্বজন আব্দুল্লাহসহ বাড়ি ফিরছিলেন। পথে নরসিংদী সদর উপজেলার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সাহেপ্রতাব এলাকার একটি সিএনজিতে পাম্পে গ্যাস নেয়ার জন্য চালক গাড়ি থামায়।

এসময় অপর একটি প্রাইভেটকারযোগে আসা রায়পুরা থানা পুলিশের এসআই সাখাওয়াত ও আজহার আলীসহ সঙ্গীয় ফোর্স ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে তাদের আটক করে নিয়ে যায়। পরে পুরানপাড়া ব্রিজ এলাকায় নিয়ে প্রবাসী সোহেলের কাছে থাকা দুইটি স্বর্ণের বার, মোবাইল সেট ও নগদ টাকা লুট করে নেয়। বিষয়টি জানাজানি হলে তাদের গ্রেফতার করা হবে এমন ভয় দেখিয়ে তাদের ছেড়ে দেয়।

পরে প্রবাসী সোহেলের আত্মীয় মো. শাহজাহান নরসিংদীর পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পরে পুলিশ সুপারের নির্দেশে গোয়েন্দা পুলিশের ওসি সাইদুর রহমান, এসআই আব্দুল গাফ্ফার ও রুপম সরকার তদন্তে নামে। পরে তারা সিএনজি স্টেশনের সিসিটিভির ফুটেজে ডাকাতির সত্যতা পায়। ওই সময় সিসিটিভির ফুটেজে দেখা যায় রায়পুরা থানার এসআই সাখাওয়াত হোসেন ও আজহারুল ইসলাম এবং কনস্টেবল মাইনুল ইসলাম, সাইদুল ইসলামসহ অন্য তিন জন প্রবাসীদের আটক করে নিয়ে যায়। এরই ধারাবাহিকতায় প্রথমে এসআই সাখাওয়াত হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে এসআই আজহারুল ইসলাম, কনস্টেবল মাইনুল ইসলাম ও সাইদুল ইসলামকে আটক করা হয়।

ওই সময় সাখাওয়াতের কাছ থেকে ডাকাতির ১৮ হাজার টাকা, এসআই আজহারুল ইসলাম এর ট্রাঙ্ক থেকে স্বর্ণের বার ও সাদেক মিয়ার কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল উদ্ধার করা হয়।

মামলার বাদী শাহজাহান জানান, সোহেলকে নিয়ে বিমানবন্দর থেকে বাড়ি ফেরার পথে পুলিশ এ ঘটনা ঘটায়। প্রবাসী সোহেলের কাছে অন্যান্য প্রবাসীরা মালামাল দিয়েছিল। পুলিশ সদস্যরা ওইসব মালামাল ছিনিয়ে নেয়। কাউকে জানালে ডাকাতি মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়ার ভয় দেখায়।

সম্প্রতি রায়পুরা থানার পুলিশ আওয়ামী লীগ নেতা গুম, গরু লুট, ডাকাতি, অর্থের বিনিময়ে টেটাযুদ্ধের ইন্ধন যোগানসহ নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়ে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে কোরবানি ঈদের আগে এসআই সাখাওয়াতের নেতৃত্বে মেঘনা নদীতে গরু ব্যাবসায়ীদের জিম্মি করে প্রায় ৭০ লাখ টাকা লুট করে নেয়ার অভিযোগ উঠে। ওই ঘটনায় রায়পুরা থানা পুলিশের ওসি দেলোয়ার হোসেন প্রায় ৯ লাভ টাকা ও ২৫টি গরু জব্দের কথা স্বীকার করেছেন।

বিষয়টি গণমাধ্যমে উঠে আসলে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকতারা তদন্তে নামে। এর কয়েক মাসের মধ্যেই পুনারায় তাদের বিরুদ্ধে তথ্য প্রমাণসহ ডাকাতির ঘটনায় পুলিশ সদস্যদের গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ।

গোয়েন্দা পুলিশের ওসি সাইদুর রহমান বলেন, সিসি টিভির ফুটেজ দেখে আমরা নিশ্চিত হয়েছি ডাকাতির সঙ্গে রায়পুরা থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক সাখাওয়াত হোসেন, উপ-পরিদর্শক আজহারুল ইসলাম, কনস্টেবল মাইনুল ইসলাম ও সাইদুল ইসলাম জড়িত। পরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তাদের গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়।

সঞ্জিত সাহা/এমএএস/আইআই

আরও পড়ুন