প্রধান শিক্ষকের পিটুনিতে ১২ শিক্ষার্থী অসুস্থ
নওগাঁর আত্রাই উপজেলার খাস খামার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আসাদুল ইসলামের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের বেধড়ক মারপিটের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার পর ১২ শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের অভিভাবকরা ওই শিক্ষককে অন্যত্র বদলির দাবিতে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে বিদ্যালয় চত্বরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে।
বুধবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার বিষা ইউনিয়নের খাস খামার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের মারপিটের ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বুধবার বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় তলায় পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের শ্রেণি কক্ষের জানালায় থুতু ফেলা ছিল। থুতু পরিষ্কার করার জন্য প্রধান শিক্ষক আসাদুল ইসলাম পাঁচ মিনিটের মধ্যে শিক্ষার্থীদের নির্দেশ দেন এবং কে থুতু ফেলেছে তা জানতে চান। শিক্ষার্থীরা জানে না বলে জানিয়ে দেয়।
প্রধান শিক্ষক পাঁচ মিনিট পরে এসে দেখেন থুতু পরিষ্কার হয়নি। রাগের বসে তিনি বেত (লাঠি) দিয়ে পঞ্চম শ্রেণির বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে বেধড়ক পিটান। এতে মাহমুদ হাসান, জিসান আলী, আরিফুল ইসলাম, রেদোয়ান হক, লামইয়া, রিতি খাতুন, ফাতেমা খাতুন, বিথি খাতুন, রুমা খাতুন, যুথি খাতুনসহ ১২ জন শিক্ষার্থী আহত হয়।
স্কুল ছুটির পর তারা বাড়িতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে তাদের অভিভাবকদের ঘটনাটি খুলে বলে। এরপর অভিভবাকরা পল্লী চিকিৎসক দিয়ে তাদের চিকিৎসা করান। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে আহত শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা ওই শিক্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও অন্যত্র বদলির দাবিতে বিদ্যালয় চত্বরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। ইতোপূর্বে ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে পঞ্চম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর শ্লীলতহানির অভিযোগ রয়েছে।
আহত শিক্ষার্থীরা বলছে, আমাদের মধ্য থেকে কেউ জানালায় থুতু ফেলেনি। আর ফেললে তো আমরা আগেই স্যারকে বলে দিতাম। কিন্তু তারপরও স্যার আমাদের পিটিয়েছে।
আহত শিক্ষার্থী মাহমুদ হাসানের বাবা আবু মন্ডল বলেন, ছেলেটাকে এভাবে নির্যাতন করা মোটেও ঠিক হয়নি। বাড়িতে যাওয়ার পর সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। আমরা এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি। সেই সঙ্গে তাকে অন্যত্র বদলি করা হোক।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আসাদুল ইসলাম বলেন, বাচ্চারা জানালায় ময়লা ফেলেছিল। বলার পরও তারা পরিষ্কার করেনি। এজন্য একটু শাসন করা হয়েছে। তবে বুধবার স্থানীয় চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান বিষয়টি মীমাংসা করে দেন।
আত্রাই উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান বলেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের নির্যাতনের সত্যতা পাওয়া গেছে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে তদন্তে রিপোর্ট করার জন্য স্বাক্ষর নেয়া হয়েছে। এটা বিভাগীয় পর্যায়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করে পাঠানো হবে।
আব্বাস আলী/আরএআর/জেআইএম