ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

কারাগারে আজহারের সঙ্গে দেখা করলেন আইনজীবীরা

জেলা প্রতিনিধি | গাজীপুর | প্রকাশিত: ০৬:০২ পিএম, ০১ নভেম্বর ২০১৯

মানবতাবিরোধী অপরাধে জামায়াতে ইসলামীর সাবেক ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকার রায় আসার পর কারাগারে এসে তার সঙ্গে দেখা করে গেলেন আইনজীবীরা।

শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে এসে আজহারের সঙ্গে দেখা করেন পাঁচজন আইনজীবীর একটি দল। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারের জেলার বিকাশ রায়হান।

তিনি বলেন, সকাল ১০টার দিকে পাঁচজন আইনজীবীর একটি দল কারাগারে এসে আজহারের সঙ্গে দেখা করেন। ১৫ মিনিটের মতো ছিলেন পাঁচ আইনজীবী। আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ করার বিষয়ে তাদের কথা হয়েছে এবং আজহারুল ইসলাম তাতে সম্মতি দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা। তবে পরিবারের কেউ রায়ের পর এই জামায়াত নেতার সঙ্গে দেখা করতে আসেননি।

একাত্তর সালে হত্যা, গণহত্যা, লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোসহ তিন অভিযোগে ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামকে ফাঁসির দণ্ড দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।

ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন আজহার। আপিলের ওপর উভয়পক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষ হয় গত ১০ জুলাই। মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখেন আপিল বিভাগ। তার বিরুদ্ধে আনা প্রসিকিউশনের ছয়টি মানবতাবিরোধী অপরাধের মধ্যে পাঁচটি এবং পরিকল্পনা-ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে সুপিরিয়র রেসপনসিবিলিটি (ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বের দায়) প্রমাণিত হয়।

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে রংপুর অঞ্চলে ১ হাজার ২৫৬ ব্যক্তিকে গণহত্যা-হত্যা, ১৭ জনকে অপহরণ, একজনকে ধর্ষণ, ১৩ জনকে আটক, নির্যাতন ও গুরুতর জখম এবং শতশত বাড়ি-ঘরে লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগের মতো নয় ধরনের ছয়টি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয় এ টি এম আজহারের বিরুদ্ধে।

এসব অভিযোগের মধ্যে ১ নম্বর বাদে বাকি পাঁচটি অভিযোগই প্রমাণিত হয় ট্রাইব্যুনালের রায়ে। সুপিরিয়র রেসপনসিবিলিটির (ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বের দায়) অভিযোগ ছাড়াও তিনি যে আলবদর কমান্ডার ছিলেন তার প্রমাণ হয়েছে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়।

২০১৫ সালের ২৯ জানুয়ারি খালাস চেয়ে আপিল করেন আজহারুল ইসলাম। সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেন অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড জয়নুল আবেদীন তুহিন। ১১৩ যুক্তিতে আজহারকে সম্পূর্ণ নির্দোষ দাবি করে তার দণ্ড থেকে খালাস চেয়ে আপিল করেন তুহিন। আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় ৯০ পৃষ্ঠার মূল আপিলসহ ২৩৪০ পৃষ্ঠার আপিল দাখিল করা হয়।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ের পর দণ্ড থেকে খালাস চেয়ে রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আসা দশম আপিল আবেদন এটি। ২০১৭ সালের ১৩ আগস্ট এক আদেশে আপিল বিভাগ আসামিপক্ষকে আপিলের সার-সংক্ষেপ দাখিলের নির্দেশ দেন।

১৯৬৮ সালে রংপুর জিলা স্কুল থেকে মেট্রিক পাস করে পরের বছর রংপুর কারামাইকেল কলেজে ভর্তি হন আজহার। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘের জেলা কমিটির সভাপতি ও আলবদর বাহিনীর রংপুর শাখার কমান্ডার ছিলেন।

১৯৯১ সালে তিনি ঢাকা মহানগর জামায়াতের আমিরের দায়িত্ব পান এবং ২০০৫ সালে কেন্দ্রীয় কমিটির সেক্রেটারি জেনারেল হন। ২০১২ সালের ১৫ এপ্রিল আজহারের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেন সংস্থার কর্মকর্তা এস এম ইদ্রিস আলী। ওই বছরের ২২ আগস্ট মগবাজারের বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের আনা ছয়টি অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে ২০১৩ সালের ১২ নভেম্বর আজহারের বিচার শুরু করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

মো. আমিনুল ইসলাম/এএম/এমকেএইচ