স্ত্রী হত্যায় আর্মড পুলিশ সদস্যের গ্রেফতার দাবি
স্ত্রী হত্যার অভিযোগে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) সদস্য ওমর ফারুক ও তার সহযোগীদের গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (০৩ মার্চ) দুপুরে পঞ্চগড়-ঢাকা মহাসড়কসংলগ্ন শহীদ মিনারের সামনে পরিবারের সদস্য, স্বজন ও এলাকাবাসী এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। মানববন্ধন শেষে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে গিয়ে স্মারকলিপি দেন তারা। পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাঈমুল হাসান তাদের স্মারকলিপি গ্রহণ করেন।
এর আগে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধনে স্থানীয় এনজিও পরস্পরের নির্বাহী পরিচালক আকতারুন নাহার সাকী, পঞ্চগড় প্রেস ক্লাবের সভাপতি সফিকুল আলম, নিহত ছন্দার বাবা মো. নূর ছালাম, মা ছকিনা বেগম, চাচা নজরুল ইসলাম ও আব্দুস সাত্তার এবং নিহতের ফুপু নাসিমা বেগম বক্তব্য রাখেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালে বোদা উপজেলার ডাবরভাঙ্গা গ্রামের আলতাফুর রহমানের ছেলে এপিবিএন সদস্য ওমর ফারুকের সঙ্গে ঠাকুরগাঁওয়ের শুখান পুকুরির নুর ছালামের মেয়ে সাবিনা ইয়াসমিন ছন্দার বিয়ে হয়।
পাঁচ লাখ টাকা এবং দুই ভরি স্বর্ণালঙ্কার যৌতুক নিয়ে বিয়ে হলেও বিয়ের পর পরকীয়ার কারণে ছন্দার ওপর নানাভাবে নির্যাতনসহ আবারও পাঁচ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন ওমর ফারুক। গত ১৭ জানুয়ারি তেঁতুলিয়ায় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ইত্যাদির শ্যুটিং দেখতে যাওয়ার কথা বললে ছন্দাকে মারপিট করা হয়। মারপিটে গুরুতর অসুস্থ হলে তার মুখে কীটনাশক ঢেলে দেয়া হয়। পরে হাসপাতালে নিলে তার মৃত্যু হয়।
ঘটনার পরদিন ১৮ জানুয়ারি ওমর ফারুক, তার বাবা আলতাফুর রহমান, মা শিরিনা আক্তার, বোন তিশা আক্তার ও দিশা আক্তারকে আসামি করে বোদা থানায় মামলা করা হয়। দেড় মাস পেরিয়ে গেলেও আসামিদের গ্রেফতার করেনি পুলিশ।
নিহতের বাবা নুর ছালাম বলেন, যৌতুক নিয়ে বিয়ের পরও আরও পাঁচ লাখ টাকা দাবি করে আমার মেয়েকে নির্যাতন করত ফারুক। মারপিটর করে তার মুখে কীটনাশক দিয়ে আত্মহত্যা বলে প্রচারণা চালানো হয়। মামলার দেড় মাসেও পুলিশে চাকরির প্রভাবে আসামিদের গ্রেফতার করা হয়নি। আমি ফারুকে উপযুক্ত বিচার চাই।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বোদা থানা পুলিশের পরিদর্শক অশ্বিনী কুমার বর্মণ বলেন, মামলার প্রধান আসামি বাদে অন্যরা জামিনে রয়েছেন। প্রধান আসামি এপিবিএন সদস্য ওমর ফারুককে বরখাস্ত করা হয়েছে। তাকে গ্রেফতরের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। অনুমোমদন পেলে তাকে গ্রেফতার করা হবে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অ্যাডমিন) মো. নাঈমুল হাছান বলেন, মামলাটি আইনি প্রক্রিয়ায় চলছে। একজন তদন্ত কর্মকর্তা মামলা তদন্ত করছেন। আইন অনুযায়ী সব কিছুই করা হচ্ছে। পুলিশ সদস্য অপরাধী হলে আইনের আওতায় আনা হবে।
সফিকুল আলম/এএম/পিআর