ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

প্রধানমন্ত্রীর কাছে যুবকের খোলা চিঠি

জেলা প্রতিনিধি | নওগাঁ | প্রকাশিত: ০৭:০৬ পিএম, ২৪ এপ্রিল ২০২০

নওগাঁর মান্দা উপজেলার অনন্ত কুমার নামে এক যুবক করোনা ভাইরাসের এই দুর্যোগ মুহূর্তে দেশের সেবায় নিজেকে স্বেচ্ছায় বিলিয়ে দিতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে খোলা চিঠি লিখেছেন। বৃহস্পতিবার ফেসবুকে তার নিজের আইডিতে ওই চিঠিটি পোস্ট করেন তিনি।

বরাবর,
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার।
স্যার, আমার ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।

স্যার, আমি একজন কলেজছাত্র অনার্স প্রথমবর্ষ বাংলা বিভাগের। জীবনে অনেক কষ্ট করে পড়াশোনায় এতদূর আসতে পেরেছি স্যার। আমি খুব নিম্নবিত্ত পরিবারের ছেলে।

স্যার ছোটবেলা থেকে আমার স্বপ্ন ছিল সামরিক বাহিনীতে চাকরি করব কিন্তু শত চেষ্টার পরও সফল হতে পারিনি। কিন্তু দেশে এখন কোভিড-১৯ এর কারণে আমাদের দেশ বিপদগ্রস্ত, তাই আমার পরিবারের সহমত নিয়ে নিজ ইচ্ছায় আমি করোনাভাইরাস মোকাবেলা করার জন্য এই সময় দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতা করতে চাই। স্যার আমার এই অনুরোধটি গ্রহণ করলে আমি খুব খুশি হবো এবং দেশ সেবাই নিজেকে ধন্য মনে করব স্যার।

সবার কাছে দোয়া চাই। আমার এই অনুপ্রেরণা আর পোস্টটিতে কেউ বাজে কমেন্ট করবেন না। আপনাদের সহযোগিতার কারণে আমার মনের ইচ্ছাটা পূরণ হতে পারে।

নাম: অনন্ত কুমার
গ্রাম: পাঁজরভাঙ্গা
পোস্ট: পাঁজরভাঙ্গা
থানা: মান্দা
জেলা: নওগাঁ
মোবাইল: +৮৮০১৭৬০২৬৫০৮৫

জানা গেছে, অনন্ত কুমারের বাড়ি জেলার মান্দা উপজেলার পাঁজরভাঙ্গা গ্রামে। বাবা রাজকুমার ছোটবেলায় মারা গেছেন। দুই ভাই ও মাকে নিয়ে তাদের সংসার। বড় ভাই আনন্দ কুমার চাচা পেনলাল মাঝির চায়ের দোকানে কাজ করেন। মাঝে মধ্যে তিনিও চায়ের দোকানে ভাইকে সহযোগিতা করেন। আর মা জামিনি বালা ছাগল ও হাঁস-মুরগি পালন করে সংসার চালান। ২০১৭ সালে এসএসসিতে মানবিক বিভাগে ৪ দশমিক ৯১ এবং এইচএসসিতে ২০১৯ সালে ব্যবসা শাখা থেকে ৪ দশমিক ৫০ পেয়ে উত্তীর্ণ হন অনন্ত। দরিদ্র পরিবারে বেড়ে ওঠা এ যুবক বাংলা বিষয়ে নওগাঁ সরকারি কলেজে অনার্স প্রথম বর্ষে পড়াশোনা করছেন। দারিদ্র্যতার কারণে শহরে না থেকে বাড়ি থেকে সপ্তাহে ২/৩ দিন এসে ক্লাস করতে হয়।

এ ব্যাপারে অনন্ত কুমার বলেন, যখন বুঝতে শিখেছি তখন থেকেই সেনাবাহিনীতে চাকরি করার ইচ্ছা ছিল। চাকরি করে দেশের সেবা করবো এমনটাই চিন্তা চেতনা ছিল। কিন্তু তা আর হয়ে ওঠেনি। ইতোমধ্যে সেনাবাহিনীতে চারবার, বিমান বাহিনীতে চারবার, নৌবাহিনীতে একবার, বিজিবিতে একবার ও পুলিশে চাকরির জন্য একবার দাঁড়িয়েছি। প্রাথমিকভাবে পরীক্ষায় টিকতে পারলেও পরে ফিটনেসে আর হয় না। আর ২/৩ বার হয়ত দাঁড়াতে পারতাম। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে হয়ত সম্ভব হবে না। তখন বয়সও হয়ত শেষ হয়ে যাবে।

তিনি বলেন, যেহেতু সেনাবাহিনীর চাকরি হয়নি, দেশের এ দুর্যোগ মুহূর্তে দেশের জন্য সেনাবাহিনীর সঙ্গে যদি কাজ করতে পারতাম তাহলে কি যে খুশি হতাম বলে প্রকাশ করার মতো না।

আব্বাস আলী/এফএ/পিআর