ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

মুচলেকা নিয়ে বড় ছেলেকে দেয়া হলো সেই বৃদ্ধা মায়ের দায়িত্ব

জেলা প্রতিনিধি | জয়পুরহাট | প্রকাশিত: ০৩:৪২ পিএম, ২৬ মে ২০২০

৮৬ বছরের বৃদ্ধা সিরাতুন্নেছা মৃত নূর মোহাম্মদ মোল্লার স্ত্রী। জয়পুরহাট পৌর শহরের জানিয়ার বাগান এলাকার বাসিন্দা সিরাতুন্নেছা ঢাকায় নাভানা কোম্পানিতে স্টোর কিপার হিসেবে চাকরি করতেন। স্বামী মারা যান ১৮-১৯ বছর আগে। স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকেই জানিয়ার বাগান এলাকায় বসবাস শুরু করেন তিনি। পৈত্রিক সূত্রে সিরাতুন্নেছা ১৫ শতক জমি পান বাবার কাছ থেকে। যার মূল্য দুই কোটি টাকার ওপরে।

সিরাতুন্নেছার এই সম্পত্তি কৌশলে তার ছেলেরা লিখে নেওয়ার পর থেকেই চলে তার উপরে ভরণ-পোষণের অবহেলা, মানসিক নির্যাতন ও চরম অমানবিক আচরণ। এই নির্যাতন চরমে পৌঁছায় ঈদের দিন (২৫ মে)। অচল প্রায় বৃদ্ধা মাকে রাস্তায় ফেলে যায় ছেলেরা। বৃদ্ধার আহাজারি দেখে স্থানীয়রা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করেন। পরে পুলিশ অসহায় বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে সোমবার (২৫ মে) রাতে জয়পুরহাট কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সেফ হোমে রেখে আসেন সাময়িক সময়ের জন্য।

ওইদিন রাতেই বৃদ্ধার পক্ষে তার নাতবৌ শিল্পী আক্তার বাদী হয়ে তার শ্বশুর ও চাচা শ্বশুরদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে বৃদ্ধার তিন ছেলে আব্দুর রাজ্জাক, মোয়াজ্জেম হোসেন ও মোজাম্মেল হককে নিজ বাড়ি থেকে আটক করে পুলিশ।

মঙ্গলবার দুপুরে বড় ছেলে আব্দুর রাজ্জাক বৃদ্ধা মায়ের দায়িত্ব নেবেন ও অপর ছেলেরা সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে মুচলেকা দেয়ার পর তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।

জয়পুরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহরিয়ার খান জানান, আটকরা কৌশলে তাদের মায়ের নামের সব জমি লিখে নেন। এরপর থেকে ছেলেরা ৮৬ বছরের ওই বৃদ্ধা মায়ের ভরণপোষণে অবহেলা, গালমন্দ, মানসিক নির্যাতনসহ তার প্রতি চরম অমানবিক আচরণ করতে থাকেন। এরই এক পর্যায়ে মায়ের ভরণপোষণ কোনো ছেলেই আর গ্রহণ করবেন না বলে সোমবার সকালে জয়পুরহাট-আক্কেলপুর সড়কের পাশে বৃদ্ধা মা ছিরাতুন্নেছাকে ফেলে রেখে চলে যান তারা। পরে ৯৯৯ নম্বরে স্থানীয়দের সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে। পারিবারিক আইনে বৃদ্ধার মায়ের দায়িত্ব বড় ছেলে নিয়ে মুচলেকা দিলে তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়।

বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন জয়পুরহাট জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. আরাফাত হোসেন মুন বলেন, পিতা-মাতা ভরণপোষণ আইনে মামলা না করে যদি কোনো ছেলে ভরণপোষণের দায়িত্ব নেয় তাহলে ছেড়ে দেয়া যেতে পারে। এটা জয়পুরহাটের জন্য দৃষ্টান্ত হলো।

রাশেদুজ্জামান/এফএ/পিআর