ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

আন্তর্জাতিক শিশু শান্তি পুরস্কার পাওয়ায় সাদাতকে মাশরাফির অভিনন্দন

জেলা প্রতিনিধি | নড়াইল | প্রকাশিত: ০৫:৫৫ পিএম, ১৪ নভেম্বর ২০২০

আন্তর্জাতিক শিশু শান্তি পুরস্কার লাভ করায় নড়াইলের কিশোর সাদাত রহমানকে অভিনন্দন জানিয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মর্তুজা।

অভিনন্দন জানিয়ে মাশরাফি তার ফেসবুকে দেয়া স্ট্যাটাসে লিখেন, শিশুদের অধিকারের প্রচার এবং দুর্বল শিশুদের সুরক্ষায় জড়িত একটি শিশুকে প্রতি বছর ‘কিডস রাইটস ইন্টারন্যাশনাল চিলড্রেনস পিস প্রাইজ’ দেয়া হয়। সাদাত ‘সাইবার টিন্স’ নামে একটি অ্যাপ্লিকেশন চালু করেছিলেন, যেখানে সাইবার বুলিংয়ের শিকার ব্যক্তিরা তাদের মামলার রিপোর্ট করতে এবং সহায়তা পেতে পারেন। তার কাজের স্বীকৃতি হিসেবে এ বছর নড়াইলের ১৭ বছর বয়সী সাদাত রহমানকে বিজয়ী করা হয়েছে। সাদাতের এ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি নড়াইলের প্রতিটি মানুষের জন্য গর্বের এবং আনন্দের।

এর আগে শুক্রবার (১৩ নভেম্বর) নেদারল্যান্ডসে চূড়ান্ত পর্বে বিজয়ী হিসেবে সাদাতের নাম ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। এরপর নোবেলজয়ী পাকিস্তানের মালালা ইউসুফজাই সাদাত রহমানের হাতে ভার্চুয়াল কনফারেন্সের মাধ্যমে পুরস্কার তুলে দেন।

jagonews24

সাদাতের সঙ্গে চূড়ান্ত তালিকায় স্থান পাওয়া অন্য দুজন প্রতিযোগী ছিলেন মেক্সিকোর ইভান্না ওরতেজা সেরেট এবং আয়ারল্যান্ডের সিয়েনা ক্যাস্টেলন। ৪২টি দেশের ১৪২ শিশুর মনোনয়নের মধ্য দিয়ে এই প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছিল।

২০০৫ সালে রোমে অনুষ্ঠিত নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ীদের এক শীর্ষ সম্মেলন থেকে এ পুরস্কার চালু করে ‘কিডস-রাইটস’ নামের একটি সংগঠন। শিশুদের অধিকার উন্নয়ন ও নিরাপত্তায় অসাধারণ অবদানের জন্য প্রতি বছর আন্তর্জাতিক শিশু শান্তি পুরস্কার দেয় সংগঠনটি। ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সীরা ওই পুরস্কার পাওয়ার যোগ্য। গত বছর সুইডেনের শিশু পরিবেশকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ ও ক্যামেরুনের ডিভিনা মালম যৌথভাবে মর্যাদাপূর্ণ ওই পুরস্কারে ভূষিত হয়।

নড়াইল আবদুল হাই সিটি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র ১৭ বছর বয়সী সাদাত রহমান। সাদাত ও তার দল সাইবার বুলিং ও সাইবার ক্রাইম থেকে শিশু-কিশোরদের রক্ষায় নানা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।

সাদাত সম্পর্কে কিডস রাইটসের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, সাদাত একজন ‘তরুণ চেঞ্জমেকার’ ও সমাজসংস্কারক। সাইবার বুলিংয়ের শিকার হয়ে এক কিশোরীর (১৫) আত্মহত্যার পর কাজে নামে সাদাত। সে তার বন্ধুদের সহায়তায় ‘নড়াইল ভলেন্টিয়ারস’ নামের একটি সামাজিক সংগঠন প্রতিষ্ঠা করে। সংগঠনটি বেসরকারি সংস্থা অ্যাকশনএইডের ‘ইয়ুথ ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ–২০১৯’ এ বিজয়ী হয়ে তহবিল পায়।

jagonews24

এ তহবিলের মাধ্যমে তারা ‘সাইবার টিন্স’ মোবাইল অ্যাপ তৈরি করে। এই অ্যাপের মাধ্যমে কিশোর-কিশোরীরা জানতে পারে কীভাবে ইন্টারনেট দুনিয়ায় সুরক্ষিত থাকতে পারে। এই অ্যাপের মাধ্যেম ৬০টির বেশি অভিযোগের মীমাংসা হয়েছে এবং আটজন সাইবার অপরাধীর শাস্তি নিশ্চিত হয়েছে।

বর্তমানে সাদাত ‘সেফ ইন্টারনেট, সেফ টিনএজার’ নামের একটি কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। তিনি এবং তার বন্ধুরা ইন্টারনেট নিরাপত্তা নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে স্কুলে স্কুলে সেমিনার–কর্মশালা করছে। প্রতিটি স্কুলে ‘ডিজিটাল সাক্ষরতা ক্লাব’ প্রতিষ্ঠায় কাজ করছেন।

এদিকে আন্তর্জাতিক শিশু শান্তি পুরস্কার লাভ করায় নড়াইলসহ দেশব্যাপী আনন্দের জোয়ারে ভাসছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকসহ বিভিন্নভাবে অভিনন্দনের জোয়ারে ভাসছে।

হাফিজুল নিলু/এএইচ/জেআইএম