এইদিনে ভোলা থেকে পালিয়ে যায় হানাদার বাহিনী
আজ ১০ ডিসেম্বর। ভোলা মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এ দিনে দীর্ঘ ৯ মাসের সশস্ত্র সংগ্রাম ও যুদ্ধের পর পাক-হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা ভোলার মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধের মুখে ভোলা থেকে পালিয়ে যায়। আর ভোলা হয় পাক-হানাদার মুক্ত।
ভোলা জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা দোস্ত মাহামুদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা এম হাবিবুর রহমান জানান, ১৯৭১ সালে ভোলার সরকারি স্কুল মাঠ, বাংলা স্কুল, টাউন স্কুল ও ভোলা কলেজের মাঠের কিছু অংশে মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ শুরু হয়।
পরে মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে পাক-হানাদারবাহিনীর সম্মুখ যুদ্ধ হয় ভোলার ঘুইংঘারহাট, দৌলতখান, বাংলাবাজার, বোরহানউদ্দিনের দেউলা ও চরফ্যাশন বাজারে।
স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে ভোলা ওয়াপদা ভবনে ক্যাম্প করে অবস্থান নেয় পাক-হানাদারবাহিনী। ওই ভবনের দুইটি কক্ষকে টর্চার সেল বানিয়ে নিরীহ মানুষকে ধরে এনে নির্যাতনের পর হত্যা করা হতো। ওয়াপদা ভবনের পাশেই রয়েছে বধ্যভূমি যেখানে শতশত মানুষকে হত্যা করে মাটি চাপা দেয়া হয়েছিল। ভোলার খেয়াঘাট এলাকায় মুক্তিযোদ্ধারের ধরে এনে হত্যা করে তেঁতুলিয়া নদীতে ফেলে দেয়া হতো। মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ মানুষের রক্তে রঞ্জিত হতো তেঁতুলিয়ার পানি।
তারা আরও জানান, ১০ ডিসেম্বর সকালে পাকবাহিনী ভোলা লঞ্চঘাট হয়ে কার্গো লঞ্চ করে পালিয়ে যায়। এ সময় তারা চারদিকে গুলি বর্ষণ করতে করতে যায়। পরে অবশ্য চাঁদপুরের ডাকাতিয়া নদীতে মিত্রবাহিনীর বিমান হামলায় লঞ্চটি ডুবে গেলে তাদের সকল সদস্য নিহত হয়।
সকালে পাক বাহিনীর পালিয়ে যাওয়ার খবর পেয়ে হাজার হাজার মুক্তিকামী মানুষ ভোলার রাজপথে নেমে আসে ‘জয় বাংলা’, ‘তোমার নেতা, আমার নেতা’, ‘শেখ মুজিব, শেখ মুজিব’- স্লোগানে মুখরিত হয় চারদিক।
জুয়েল সাহা বিকাশ/এসএমএম/জেআইএম