মেলেনি বিধবা ভাতা, কুঁড়েঘরে রাত কাটে জেরিনার

১০ বছর আগে স্বামী মারা যায় জেরিনা বেগমের (৪৮)। এরপর থেকে এক ছেলে ও দুই মেয়ে নিয়ে কুঁড়েঘরে অতিকষ্টে দিনযাপন করছেন তিনি। অভাব-অনটনে একপর্যায়ে বাধ্য হন ভিক্ষাবৃত্তিতে জড়াতে। বিধবা কার্ডের জন্য সংরক্ষিত ওয়ার্ড সদস্যের কাছে ধরনা দিয়েও মেলেনি কার্ড।
ঘটনাটি ঘটেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার কানসাট ইউনিয়নের শিবনারায়ণপুর গ্রামে। স্থানীয়রা জানান, মাত্র দেড়কাঠা জমিতে কুঁড়েঘরে বসবাস করে আসছেন জেরিনা।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
জেরিনা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমার স্বামী লালন রিকশা চালিয়ে রোজগার করে সংসার চালিয়ে আসছিলেন। হঠাৎ তিনি মারা গেলে সংসারে আয়-উপার্জনের সব পথ বন্ধ হয়ে যায়। তারপরেও অন্যের বাড়িতে কাজকাম করে কোনো রকমে সংসার চলছিল। হঠাৎ বড় মেয়ের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটলে সংসারে বেড়ে যায় আরও দুর্ভোগ।’
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
জেরিনা বেগমের অভিযোগ, বিধবা ভাতার কার্ড করে দেয়ার নাম করে স্থানীয় সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য (মেম্বার) কুস্তরি বেগম তার কাছ থেকে দুই হাজার টাকা নিয়েছেন। তবে তিন বছরেও তার কার্ড করে দেননি। দীর্ঘদিন পর ৫০০ টাকা ফেরত দিলেও বাকি ১৫০০ টাকা এখনও পাননি।
তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘কুঁড়েঘরে দুই মেয়ে, এক ছেলে ও তিন ছাগল সঙ্গে নিয়েই কোনোরকমে রাত পার করে আসছি। শুনেছি যাদের জমি ও ঘর নেই, তাদেরকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাকাঘর করে দিচ্ছেন। আমার তো দেড় কাঠা জমি আছে। আমি কি পাকাঘর পাব বাপু? শেখ হাসিনা দয়া করে আমাকে একটি পাকাঘর দিলে ছেলেমেয়েদের নিয়ে বাকি জীবনটা সুখে কাটাতে পারতাম।’
বিজ্ঞাপন
অন্যদিকে, কানসাট ইউনিয়ন পরিষদের ৪, ৫ ও ৬ সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য কুস্তরি বেগম টাকা নেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, অল্প কয়েকদিনের মধ্যে জেরিনাকে টাকা ফেরত দেয়া হবে। তিনি রিপোর্টটি প্রকাশ না করার জন্য অনুরোধ করেন এবং জাগো নিউজের প্রতিনিধিকে ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন।
জানতে চাইলে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা কাঞ্চন কুমার দাস জানান, জেরিনা বেগম বিধবা ভাতা পাওয়ার যোগ্য। তবে বর্তমানে বরাদ্দ নেই। বরাদ্দ পেলে কার্ড করে দেয়া হবে। তিনি সাবেক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে টাকা নেয়ার বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথাও জানান।
বিজ্ঞাপন
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম জানান, জেরিনার নামে যদি জমি থাকে, তাহলে অবশ্যই জমি আছে ঘর নেই প্রকল্পের আওতায় তাকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
এসআর/এমএস
বিজ্ঞাপন