ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

বাবুই পাখির ছানা মারার ঘটনায় মামলা করবে বন্যপ্রাণি অপরাধ ইউনিট

জেলা প্রতিনিধি | ঝালকাঠি | প্রকাশিত: ০৩:৪৩ পিএম, ১৪ এপ্রিল ২০২১

ঝালকাঠির নলছিটিতে বাবুই পাখির বাসায় আগুন দিয়ে ছানা পুড়িয়ে মারার ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রূম্পা সিকদার অপরাধীকে ক্ষমা করে দিলেও ছাড় দেবেন না ঢাকা বন বিভাগের বন্যপ্রাণি অপরাধ দমন ইউনিট। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই মামলা করা হবে বলে জানা গেছে।

বুধবার (১৪ এপ্রিল) ঢাকা বন বিভাগের বন্যপ্রাণি অপরাধ দমন ইউনিটের পরিচালক জহির আকন সাংবাদিকদের জানান, করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে সরেজমিন পরিদর্শন করে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে, প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে মামলা করার উদ্যোগ নেয়া হবে।

এদিকে, ঘটনার প্রতিবাদকারী যুবক আবদুল্লাহ আল শিপন নিজের নিরাপত্তা চেয়ে সাধারণ ডায়রি (জিডি) করেছেন। আর এ ঘটনার কথা উল্লেখ করে আরেকটি জিডি করেছেন নলছিটির বন কর্মকর্তা কার্তিক চন্দ্র মন্ডল।

নলছিটি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আলী আহমেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, রোববার করা জিডির বিষয়ে তদন্ত করে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

জিডির বিষয়ে যুবক আব্দুল্লাহ আল শিপন বলেন, ‘আমি সেদিন পাখিদের ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদ করেছি। নিজের বিবেকের তাড়নায় ওদের জন্য সামাজিক মাধ্যমে ছবি পোস্ট করে সামাজিকভাবেও প্রতিবাদ করেছি। কিন্তু তারপর দেখলাম আমার জীবন হুমকির মুখে। যদিও অনেক সংবাদ মিডিয়া, প্রশাসন, বনবিভাগ আমার পাশে আছে। কিন্তু সর্বশেষ গত ১১ এপ্রিল ঝালকাঠির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এলে তার উপস্থিতিতেই পাখি পোড়ানো জালাল সিকদার আমাকে অপমান করে। এছাড়া তিনি ও তার স্বজনরা বিভিন্ন ভাবে হুমকি-ধমকি ভয়ভীতি দেখিয়েছে। তাই নিজের নিরাপত্তা চেয়ে নলছিটি থানায় জিডি করেছি।’

স্থানীয়রা জানান, ক্ষেতের ধান নষ্ট ও কিচিরমিচির শব্দ করায় আক্রোশ মেটাতে আগুন দেয়া হয় বাবুই পাখির বাসায়। আর এতে পুড়ে মারা যায় বাসায় থাকা অন্তত ৩৩ বাবুই ছানা। ৯ এপ্রিল ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলা ভৈরবপাশা ইউনিয়নের ঈশ্বরকাঠি গ্রামে এই নৃশংস ঘটনা ঘটিয়েছে ওই গ্রামের ওয়াজেদ আলী সিকদারের ছেলে জালাল সিকদার।

জালাল সিকদার বলেন, বাবুইপাখি আমার ক্ষেতের প্রচুর ধান নষ্ট করে প্রতিদিন। এ ছাড়া পাখির কিচিরমিচির শব্দে আমি অতিষ্ঠ। এ কারণে এ ঘটনা ঘটালেও পরে বুঝতে পেরেছি এটা আমার ভুল হয়েছে। শনিবার রাতে ইউএনও আমাকে ডেকেছিলেন, তার কাছে ক্ষমা চাইলে তিনি আমাকে মাফ করে দেন।

ইউএনও রূম্পা সিকদার বলেন, পাখির বাসায় আগুন দেয়া বা ছানা পুড়িয়ে মারার কোনো সাক্ষ্যপ্রমাণ নেই। পাশাপাশি পাখির বাসা পিটিয়ে ভেঙে ফেলার কথা স্বীকার করে জালাল সিকদার অনুতপ্ত হয়ে ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চাওয়ায় তাকে ক্ষমা করে দেয়া হয়েছে। জালাল সিকদার আমাকে বলেছে, তার প্রচুর ধান খেয়ে ফেলায় মাথা গরম হওয়ায় তিনি ঘটনা ঘটিয়েছেন। বিষয়টি ক্ষমার যোগ্য মনে করায় জালাল সিকদারকে ক্ষমা করা হয়েছে।

ঝালকাঠির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. হাবিবুল্লাহ জানান, বাবুই পাখির বাসায় আগুনের ঘটনায় নলছিটি থানার ওসিকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, কেউ থানায় অভিযোগ নিয়ে এলে তা গ্রহণ করে আদালতে পাঠিয়ে দিতে।

মো. আতিকুর রহমান/এসজে/এমএস