সেই প্রতিবন্ধী মিজানুরের পাশে দাঁড়ালেন ইউএনও
কপাল খুলল নাটোরের গুরুদাসপুরের এক পা ও এক হাত না থাকা প্রতিবন্ধী মিজানুর রহমানের। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে দেয়া হয়েছে দুই মাসের খাবার। একটি ঘর করে দেয়া হবে বলেও আশ্বাস পেয়েছেন তিনি।
শুক্রবার (৩০ এপ্রিল) বিকেলে উপজেলার বিয়াঘাট ইউনিয়নের সাবগাড়ী এলাকায় বসবাস করা প্রতিবন্ধী মিজানুর রহমানের বাড়িতে গিয়ে দুই মাসের খাদ্যসামগ্রী তার হাতে তুলে দেন উপজেলা র্নিবাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তমাল হোসেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশানর (ভূমি) মো. আবু রাসেল।
এর আগে শুক্রবার দুপুরে ‘নেই একটি পা ও হাত, তবু হার মানেননি মিজানুর’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কম-এ।
প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়, ঘোড়ার গাড়িতে অন্যের জমি থেকে ধান বহন করে সংসার চালান নাটোরের মিজানুর রহমান (৫০)। ৩৩ বছর আগে বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনায় তার বাম হাত ও বাম পা কাটা পরে। শত চেষ্টায়ও পঙ্গুত্ব থেকে রক্ষা পাননি তিনি। তবুও থেমে নেই জীবন।

একসময় ভাঙ্গুরা উপজেলায় ঘোড়ার গাড়ি চালাতেন মিজানুর। এখন নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার বিয়াঘাট ইউনিয়নের সাবগাড়ী গ্রামে ঘোড়ার গাড়িতে ধান বহন করে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করছেন। স্ত্রী ও তিন ছেলে এবং একটি প্রতিবন্ধী মেয়েকে নিয়ে অন্যের জমিতে ঝুপড়ি ঘর করে বসবাস করছেন তিনি।
সংবাদটি নজরে আসে গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তমাল হোসেনের। এরপরই তিনি বিকেলে প্রতিবন্ধী মিজানুর রহমানের বাড়িতে গিয়ে তাকে দুই মাসের খাদ্যসামগ্রী প্রদান করেন ও একটি ঘর দেয়ার আশ্বাস দেন।
ইউএনও তমাল হোসেন জানান, গণমাধ্যমে সংবাদটি দেখার পরপরই আমি তার ঠিকানা সংগ্রহ করি। প্রতিবন্ধী মিজানুর রহমানের বাড়িতে গিয়ে তার হাতে খাদ্যসামগ্রী তুলে দিই।
তিনি আরও বলেন, মিজানুর রহমানের গ্রামের বাড়ি পাবনা জেলার ভাঙ্গুড়া উপজেলায়। তারপরও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে তাকে একটি প্রধানমন্ত্রীর ঘর উপহার দেয়ার জন্য গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে।
প্রতিবন্ধী মিজানুর রহমান বলেন, তার এক হাত ও এক পা না থাকা সত্ত্বেও তিনি পরিশ্রম করে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করছেন। তিন ছেলে, এক মেয়ে ও স্ত্রী নিয়ে তার সংসার। অভাব-অনটনে দিন কাটে। এই দুঃসময়ে তাকে সহযোগিতা করার জন্য ইউএনওর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন জীবনযুদ্ধে হার না মানা এই যোদ্ধা।
রেজাউল করিম রেজা/এসআর/এএসএম