ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

লিচুর বাজারজাতকরণ ও ন্যায্যমূল্য নিয়ে শঙ্কিত গুরুদাসপুরের চাষিরা

জেলা প্রতিনিধি | নাটোর | প্রকাশিত: ০৭:৪০ পিএম, ০৬ মে ২০২১

দরজায় কড়া নাড়ছে মধুমাস জ্যৈষ্ঠ। এরই মধ্যে রং বদলাতে শুরু করেছে নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার ৫৭০টি লিচু বাগান। আর মাত্র ১০ দিনের মধ্যেই এসব বাগানের পরিপূর্ণ রসালো লিচু বাজারজাতকরণের উপযোগী হয়ে উঠবে। প্রতি বছর এমন সময় দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে মহাজন, ব্যাপারী ও ফড়িয়ারা লিচুর বাগান দেখতে আসেন। তবে এবার করোনা মহামারির কারণে তারা আসতে পারছেন না। উপরন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে লিচুর ফলনও কম হয়েছে। ফলে লিচুর বাজারজাতকরণ ও ন্যায্যমূল্য নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে লিচু চাষিদের মনে।

উপজেলার লিচু বাগানগুলোর সোনালি মুকুল এখন দানা বেঁধে সবুজ গুটি থেকে হলুদাভ রং ধারণ করতে শুরু করেছে। চাষিদের পরিচর্যায় ধীরে ধীরে পরিপূর্ণ আকার ধারণ করছে লিচু। এখানকার ‘মোজাফফর’ ও ‘বোম্বাই’ জাতের লিচু দেশসেরা। এছাড়া উপজেলায় ‘চায়না থ্রি’ জাতেরও স্বল্পসংখ্যক লিচু বাগান রয়েছে।
উপজেলার বেড়গঙ্গারামপুর ও মামুদপুর এলাকা থেকে প্রতি বছর এসব লিচু ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, বরিশাল, সিলেট, খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় সরবরাহ করা হয়ে থাকে।

jagonews24

চাষিরা বলছেন, অনাবৃষ্টি ও অতি খরার কারণে এবার রোদে পুড়ে ঝরে যাচ্ছে লিচু। এ কারণে সরবরাহ কমে যাওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে লোকসানের মুখে পড়তে পারেন বাগান মালিকরা।

এ বিষয়ে উপজেলার বেড়গঙ্গারামপুর লিচু আড়ৎদার মালিক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘ভরা মৌসুমে উপজেলা থেকে প্রতিদিন ১০০ থেকে ১২০ ট্রাক করে লিচু দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু এ বছর প্রখর রোদে পুড়ে লিচু ঝরে পড়ায় সরবরাহ অনেক কম হবে। আগে প্রতি ট্রাকে গড়ে ৪ থেকে ৫ লাখ টাকার লিচু থাকত। এবার ট্রাকপ্রতি সর্বোচ্চ দেড় লাখ টাকার লিচু থাকতে পারে। সেই হিসেবে তিন সপ্তাহের এই মৌসুমী লিচুর বাজারে ২৫ কোটি টাকার বেশি লিচু বিক্রি হবে না। নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও লাভবান হওয়ার আশায় বুক বেঁধে লিচুর পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন চাষিরা।’

jagonews24

বেড়গঙ্গারামপুরের লিচু চাষি সেলিম মোল্লা বলেন, ‘আমার বাগানে ৭০টি গাছ আছে। লিচু ঝরে পড়া ঠেকাতে পানি সেচ দিচ্ছি। কাঠবিড়ালী ও বাদুড় তাড়াতে গাছে জাল টানিয়ে দেয়া হয়েছে। এবার ফলন কম হওয়ার পাশাপাশি লিচুর আকারও ছোট হয়েছে। তাছাড়া শিলাবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি ও পশ্চিমা বাতাসের কারণে গত মৌসুমের তুলনায় ফলন অনেক কম হয়েছে। একই কারণে লিচুর আকার ও স্বাদেরও পরিবর্তন হয়েছে। ফল পাকা ও হলুদ রং ধারণের আগেই ফেটে যাচ্ছে।’

তবে বিপরীত মন্তব্য শোনা গেছে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হারুনর রশিদের কাছে। লিচুর অবস্থা ভালো আছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘এ বছর ৫৭০টি ছোট-বড় বাগান মিলে লিচু চাষিরা ৪১০ হেক্টর জমিতে লিচু উৎপাদন করছেন। বর্তমানে লিচুর অবস্থা ভালো আছে। কিছু কিছু জায়গায় খরার কারণে সমস্যা হয়েছে। আমরা কৃষকদেরকে সেচ এবং পানি ছিটিয়ে দেয়ার পরামর্শ দিচ্ছি। আশা করছি কৃষকরা ভালো ফলন এবং বাজারমূল্য পাবেন।’

রেজাউল করিম রেজা/এসএস/জিকেএস