পাউবোর প্রকৌশলীকে মারধরের ঘটনায় এমপি শিমুলের ভাগনে গ্রেফতার
নাফিউল ইসলাম অন্তর
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী আবু রায়হানকে লাঞ্ছনা ও মারধরের ঘটনায় করা মামলায় নাটোরের স্থানীয় সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুলের ভাগনে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা নাফিউল ইসলাম অন্তরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (২৫ মে) বিকেলে বড়গাছা ব্রোকার বাড়ির পাশ থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। নাটোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নাফিউল ইসলাম অন্তর পাউবোর ঠিকাদার ও নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ মীর আমিরুল ইসলাম জাহানের ছেলে।নাফিউল ইসলাম অন্তর পাউবোর ঠিকাদার ও নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ মীর আমিরুল ইসলাম জাহানের ছেলে।
পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলীর করা মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, সোমবার (২৪ মে) বিকেলে সিংড়ার পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডাকবাংলো মেরামত ও সংস্কার কাজের টাইলস নিয়ে আলোচনার জন্য ঠিকাদার মীর আমিরুল ইসলাম জাহান তার ম্যানেজার ও ছেলে অন্তরকে নিয়ে পাউবোর অফিসে যান।
এ সময় টাইলস শিডিউল অনুযায়ী দেয়ার বিষয় নিয়ে জাহানের সঙ্গে প্রকৌশলীর বাক্য বিনিময়কালে প্রকৌশলীর ওপর চড়াও হন আমিরুল ইসলাম ও তার ছেলে অন্তর। এক পর্যায়ে প্রকৌশলী আবু রায়হানের গলা চেপে ধরে হত্যাচেষ্টা ও কিল-ঘুষি মারেন অন্তর।
চিৎকারে সহকর্মীরা এগিয়ে এসে রায়হানকে উদ্ধার করে নাটোর সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে রাতেই অন্তরকে আসামি করে সরকারি কাজে বাধা এবং কর্মকর্তাকে মারধরের অভিযোগে নাটোর থানায় মামলা করেন ওই প্রকৌশলী।
ভুক্তভোগী নির্বাহী প্রকৌশলী আবু রায়হান বলেন, ‘পানি উন্নয়ন বোর্ডের ভবনের টাইলস লাগানোর কাজ করছেন ঠিকাদার আমিরুল ইসলাম জাহান। সেখানে শিডিউল মোতাবেক ভালো মানের টাইলস লাগাতে বললে ঠিকাদার তাতে অস্বীকৃতি জানান। সোমবার এসব বিষয়ে অফিসে এসে কথা বলতে চান ঠিকাদার। এ সময় অকথ্য ভাষায় আমাকে গালিগালাজ করেন ঠিকাদার আমিরুল ইসলাম।’
তিনি আরও বলেন, ‘গালিগালাজ না করে ভদ্রভাবে কথা বলতে বললে ঠিকাদারের ছেলে নাফিউল ইসলাম অন্তর উত্তেজিত হয়ে আমাকে কিল-ঘুষি মারতে থাকে। এতে আমার ঠোঁট কেটে যায় এবং হাত, মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত লাগে।’
অন্তরের বাবা মীর আমিরুল ইসলাম জাহান বলেন, ‘পাউবো কর্তৃপক্ষ টেন্ডার নিয়ে অনেক সমস্যা করত। এর থেকে বাঁচার জন্য তারাই আমার ছেলেকে ডেকে নিয়ে যায়। সে যাওয়ার পর থেকে আর কোনো সমস্যা হয়নি। আমার ছেলেকে তারা বিভিন্ন সময় কাজ দেয়ার কথা বলেও নির্বাহী প্রকৌশলীর যোগসাজশে অন্যদের কাজ দিয়েছে। গতকালও কাজের কথা নিয়েই এক পর্যায়ে বাগবিতণ্ডা ও ধস্তাধস্তি হয়। এ সময় নির্বাহী প্রকৌশলী ও আমার ছেলে দুজনই চেয়ার থেকে পড়ে যায়। সেখানে কোনো মারামারির ঘটনা ঘটেনি।’
নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা বলেন, ‘কর্তব্যরত অবস্থায় সরকারি কর্মকর্তার ওপর হামলায় কোনো ছাড় দেয়া হবে না। সরকারি কাজে বাধা ও মারধরের কথা উল্লেখ করে প্রকৌশলী আবু রায়হান মামলা করেছেন। আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’
রেজাউল করিম রেজা/এসজে