সুগন্ধা-বিষখালীর ভাঙনে বিলীনের পথে তীরবর্তী এলাকা
উজান থেকে নেমে আসা বন্যার পানির স্রোত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভয়াবহ হয়ে উঠেছে ঝালকাঠির সুগন্ধা ও বিষখালী নদীর ভাঙন। এতে নদীতে বিলীন হয়ে কয়েকশ ঘরবাড়ি ও স্থাপনা। এরই মধ্যে বেশ কিছু গ্রাম নদীতে হারিয়ে গেছে। ফলে মূল মানচিত্র হারাতে বসেছে কয়েকটি ইউনিয়ন। অসহায় হয়ে পড়ছেন নদী তীরবর্তী হাজারও মানুষ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিষখালী নদীর ভাঙনে ২৪ আগস্ট ঝালকাঠির পশ্চিম দেউরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন শেল্টারের অর্ধেক নদীতে বিলীন হয়ে যায়। এ সময় ভাঙনের দৃশ্য ফেসবুকে লাইভ দিতে গিয়ে এক এসএসসি পরীক্ষার্থী নদীতে পড়ে নিখোঁজ হয়। ১০ দিনেও তাকে উদ্ধার করা যায়নি।

পেনাবালিয়া ইউনিয়নের নদী তীরবর্তী এলাকায় অব্যাহত ভাঙনের মধ্যেও অবৈধ বালু উত্তোলন থেমে নেই। অভিযোগ রয়েছে, প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতাদের ব্যবস্থা করেই অসাধু ব্যবসায়ীরা বালু উত্তোলন করে আসছে। এছাড়া ভাঙনকূল থেকে মাটি কেটে ইট ভাটায় নেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে।
অন্যদিকে, ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার মঠবাড়ী ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একাংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বিদ্যালয়ের বাকি অংশ ও বাদুরতলা বাজারের সম্পূর্ণ বিলীন হওয়ার আশংকা করছেন এলাকাবাসী। হুমকির মুখে রয়েছে বিষখালীর তীরবর্তী বড়ইয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, বড়ইয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মঠবাড়ী ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র, কয়েকটি বাজার, বেশকিছু বসতবাড়ি, মসজিদসহ অসংখ্য স্থাপনা ও ফসলি জমি।

নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, ঝালকাঠির সুগন্ধা ও বিষখালী নদীর ভাঙনে পৈতৃক ভিটামাটি হারিয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। ভাঙনে সব হারিয়ে কোনো সহায়তা না পেয়ে অন্যের বাড়িতে আশ্রিত হয়ে থাকতে হচ্ছে অনেককে।
ঝালকাঠি পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী (চলতি দায়িত্ব) মো. রাকিব হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, জেলায় মোট ১৫ কিলোমিটার নদী ভাঙন প্রবণ এলাকা রয়েছে। বেশ কিছু এলাকায় ভাঙনরোধে কাজ শুরু হয়েছে।

ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক মো. জোহর আলী জাগো নিউজকে বলেন, নদী ভাঙনরোধে স্থায়ী বাঁধ দিতে হবে। অস্থায়ী বাঁধ দিয়ে ভাঙনরোধ সম্ভব নয়। এসব বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে ঊর্ধ্ব কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হবে।
মো. আতিকুর রহমান/এসজে/জিকেএস