এবার মাগুরার কাত্যায়নী পূজায় জৌলুস নেই
মাগুরা ঐতিহ্যবাহী কাত্যায়নী পূজা শুরু হয়েছে। বুধবার (১০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় চণ্ডিপাঠ ও বোধনের মাধ্যমে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পাঁচ দিনব্যাপী এ পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।
এবছর ৬৮টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সারাদেশে মন্দিরে হামলা ও ভাঙচুরের প্রথম দিকে পূজা না করার সিদ্ধান্ত হলেও অবশেষে স্বল্প পরিসরে পূজার আয়োজন করা হয়েছে। প্রতিটি মণ্ডপে নিরাপদে পূজা সম্পন্ন করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য জেলাব্যাপী কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পূজা উপলক্ষে ১০ দিনব্যাপী মেলার আয়োজন করা হয়েছে।

মাগুরার নতুন বাজার আশ্রমের পুরোহিত সঞ্চালন্দ দাস জানান, বিগত প্রায় ৬০ বছর ধরে মাগুরায় ঐতিহ্যবাহী কাত্যায়নী পূজা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এর পটভূমি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভগবান শ্রীকৃষ্ণ আবির্ভূত হন কংসের বিনাসকারী রূপে। একদিন কৃষ্ণ ব্রজবাসিনীর ভালোবাসার পরীক্ষা নিতে উধাও হয়ে যান। এতে ব্রজবাসিনী ব্যাকুল হয়ে ওঠে। সেসময় মা যশোদা কৃষ্ণকে ফিরে পেতে আরাধনায় মগ্ন হন। হেমন্তের সময় যমুনার তীরে এক মাস ব্রত পালন করেন। ব্রতে সন্তষ্ট হয়ে কৃষ্ণ মা দুর্গার কোলে দেখা দেন। সেই থেকে মহামায়া দুর্গা কাত্যায়নী নামে পূজিত হয়ে আসছেন।
মাগুরার জনৈক সতীশ মাঝি ১৯৫০ সাল থেকে স্বপ্নাদেশ পেয়ে এ পূজা শুরু করেন শহরের পারনান্দুয়ালী গ্রামে নিজ বাড়িতে। এরই সূত্র ধরে ১৯৯০ সালের পর থেকে আড়ম্বরপূর্ণ আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। বর্তমানে শহরের ছানার বটতলা, নতুন বাজার, সাতদোয়া, তাঁতীপাড়া, জামরুলতলা, পারনান্দুয়ালীসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে প্রতিবছর এ পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক বাসুদেব কুন্ডু জানান, দুর্গাপূজার ঠিক এক মাস পর কার্তিক মাসে এ পূজা হয়। এটি মাগুরা জেলার সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান উৎসব হলেও অন্য ধর্মের মানুষ অংশ নেন। সুউচ্চ গেট, আধুনিক আলোকসজ্জা ও মিউজিকের তালে তালে প্রতিটি প্যান্ডেল উত্তাল হয়ে ওঠে। কিন্ত এবছর সব কিছুই ব্যতিক্রম। প্রশাসনের পাশাপাশি সবার সহযোগিতায় এবারের পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
মাগুরার পুলিশ সুপার জহিরুল ইসলাম বলেন, মাগুরার কাত্যায়নী পূজা একটি ঐতিহ্যবাহী পূজা। বিশেষ এ পূজাকে কেন্দ্র করে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রতিটা পূজামণ্ডপে পুলিশ থাকবে।
এসআর/এএসএম