ভূমধ্যসাগরে প্রাণ হারানো ৫ জনের বাড়ি মাদারীপুরে, চলছে শোকের মাতম
বাড়িতে স্বজনদের আহাজারি
লিবিয়া থেকে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপ যাওয়ার পথে ঠান্ডায় প্রাণ হারানো সাত বাংলাদেশির পাঁচজনের বাড়ি মাদারীপুরে। এদের মধ্যে চারজনের বাড়ির নাম-ঠিকানা মিললেও একজনের মেলেনি। মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর ওই চারজনের বাড়িতে এখন চলছে শোকের মাতম।
মৃতরা হলেন- মাদারীপুর সদর উপজেলার পেয়ারপুর ইউনিয়নের পশ্চিম পেয়ারপুর গ্রামের শাজাহান হাওলাদারের ছেলে ইমরান হোসেন (২২), মস্তফাপুর ইউনিয়নের চতুরপাড় গ্রামের শাহাজালালের ছেলে জহিরুল (২০), ঘটকচর এলাকার কাশেম মোল্লার ছেলে সাফায়েত (১৯), পেয়ারপুর ইউনিয়নের বড়াইলবাড়ি গ্রামের প্রেমানন্দ তালুকদারের ছেলে জয় তালুকদার রতন (২০) ও সদর উপজেলার বাপ্পী। তবে তার ঠিকানার সন্ধান পায়নি প্রশাসন।
মৃত জহিরুলের বাবা শাহাজালাল বলেন, আমার সন্তানের মারা যাওয়ার খবর আমরা সরকারি চিঠির মাধ্যমে জানতে পারলাম। প্রায় ১০-১২ দিন ধরে আমার ছেলের সঙ্গে ফোনে কথা হয় না। দালালরা আমাদের কাছে ফোন করে বলেছে জহিরুল হাসপাতালের আইসিইউতে আছে। যদি আমার সন্তান মারা যায় তাহলে তার মরদেহ যেন সরকার আমাদের কাছে এনে দেয়।
আরেকজন ইমরান হোসেনের বোন (নাম না প্রকাশ করার শর্তে) বলেন, গত ২১ জানুয়ারির আগে ভয়েস ম্যাসেজের মাধ্যমে ইমরানের কথা শুনি। তার পর থেকে আর কোনো যোগাযোগ নেই। আমার ভাই মারা যাওয়ার কথা সরকারি চিঠির মাধ্যমে জানতে পারলাম। আমার বাবা-মা এখন পর্যন্ত জানে না।
মৃত সাফায়েতের ভগ্নিপতি রাসেল বলেন, সাফায়েত মারা যাওয়ার কথা আমি শুনেছি। সাফায়েতের সঙ্গে যাওয়া বাড়ির পাশের দুজন জীবিত আছেন। তারা ফোন করে আমাদের বলেছে সাফায়েত মারা গেছে।

ইতালির রোমে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের চিঠিতে বলা হয়েছে, ২৫ জানুয়ারি লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার পথে অতিরিক্ত ঠান্ডায় মৃত্যুবরণকারী অভিবাসী প্রত্যাশী সাত বাংলাদেশির পরিচয় জানতে দূতাবাসের কাউন্সিলর ও শ্রমকল্যাণ মো. এরফানুল হকের নেতৃত্বে দুই সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি জীবিত উদ্ধার হওয়া অভিবাসী প্রত্যাশীদের সঙ্গে কথা বলে সাত জনের নাম জানতে পারে।
মৃতদের সরকারি খরচে দেশে আনার জন্য তাদের পরিবারের সদস্যদের জেলা প্রশাসক বা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন, যেসব অভিবাসী প্রত্যাশী মারা গেছে তাদের মরদেহ যাতে দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনা যায়, আমরা তার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
একে এম নাসিরুল হক/এসজে/জিকেএস