মেলায় ৮ কেজির এক বালিশ মিষ্টির দাম ৩ হাজার
৮ কেজি ওজনের বালিশ মিষ্টি
ফরিদপুরের বোয়ালমারীর ৩০০ বছরের পুরোনো ঐতিহ্যবাহী কাটাগড় মেলার বিশেষ আকর্ষণ বালিশ মিষ্টি। প্রায় ৮ কেজি ওজনের এক পিস মিষ্টির দাম ৩ হাজার টাকা। এ বছর মিষ্টির মধ্যে এটিই সর্বোচ্চ। সর্বনিম্ন ৪০০ গ্রাম ওজনের বালিশ মিষ্টির দাম ১০০ টাকা। এছাড়া ৮০০ গ্রামের দাম ২০০ টাকা, ২ কেজির দাম ৫০০ টাকা, ৩ কেজির দাম ১০০০ টাকা, ৪ কেজির দাম ১৫০০ টাকা, ৫ কেজির দাম ২০০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, মেলার মূল আকর্ষণ বালিশ মিষ্টি। সর্বনিম্ন ৪০০ গ্রাম সাইজের এক পিস বালিশ মিষ্টির দাম ১০০ টাকা। আর সর্বোচ্চ ৮ কেজি ওজনের এক পিসের দাম ৩ হাজার টাকা বিক্রি হচ্ছে। দাম যাইহোক মেলার প্রধান আকর্ষণ এ বালিশ মিষ্টি পরিবার-পরিজন ও বন্ধু-বান্ধব নিয়ে দোকানে বসে খাচ্ছেন, আবার অনেকেই নিয়ে যাচ্ছেন বাড়িতে।

মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার কদমবাড়ী বাজার থেকে আগত মিষ্টি ব্যবসায়ী মানিক বিশ্বাস জাগো নিউজকে বলেন, আমার প্রতিষ্ঠানের নাম নিউ রাজ মিষ্টান্ন ভান্ডার। এটি আমার দাদার আমলের মিষ্টির দোকান। প্রতিষ্ঠানের বয়স প্রায় ৫০ থেকে ৬০ বছর। কেনাবেচা মোটামুটি ভালোই হচ্ছে। তবে গতবারের তুলনায় এবার সবকিছুর দাম বাড়ায় মিষ্টির দামও একটু বেড়েছে।
এ ব্যবসায়ী আরও বলেন, আমাদের বিশেষ আয়োজন বালিশ মিষ্টি নিয়ে। প্রতি পিস বড় বালিশ মিষ্টি ৩ হাজার টাকা বিক্রি করছি, যার ওজন ৮ থেকে সাড়ে ৮ কেজি। লম্বায় প্রায় এক হাত। এছাড়া ওজন ভেদে প্রতি পিস ১০০ টাকা, ২০০ টাকা, ১৫০০ টাকা, ২০০০ টাকারও বালিশ মিষ্টি আছে। প্রতি দিন গড়ে ছোট-বড় মিলিয়ে ৪০০-৫০০ পিস বালিশ মিষ্টি বিক্রি হয়।

অন্য মিষ্টি নিয়ে মানিক বিশ্বাস বলেন, মোহনভোগ প্রতি পিস ১০০ টাকা, সীতাভোগের পিস ১০০ টাকা, সম্মানীভোগ ১০০ টাকা, পানি তাওয়া ৫০ টাকা ও রাজভোগের পিস ৫০ টাকা।
শ্রী কৃষ্ণ মিষ্টান্ন ভান্ডারের মালিক কৃষ্ণ জাগো নিউজকে বলে, দোকানে বিভিন্ন রকমের মিষ্টি রয়েছে। এর মধ্যে প্যাড়া সন্দেশ, সাগরভোগ, বালিশ মিষ্টি অন্যতম। প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৫০ হাজার টাকার মতো মিষ্টি বিক্রি হচ্ছে।

লাবণ্য মিষ্টান্ন ভান্ডার, কনা সুইটের মালিক বিশু ও অরুণ মোল্লা জাগো নিউজকে বলেন, দোকানের পেছনেই মিষ্টি তৈরি করা হচ্ছে। একেবারে গরম গরম মিষ্টি বিক্রি করছি আমরা। বিক্রিও বেশ ভালো হচ্ছে।
মেলায় আলফাডাঙ্গা উপজেলা থেকে আগত উবায়দুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, বহু বছর পরে ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে পুরাতন ঐতিহ্যবাহী কাটাগড়ের মেলায় এসেছি। মেলায় গিয়ে শৈশবের স্মৃতি মনে পড়লো। আমিও শৈশবে আব্বার হাত ধরে মেলায় যেতাম। আজ ছেলেকেও একটু পরিচয় করিয়ে গেলাম গ্রাম্য ঐতিহ্যের সঙ্গে। গরমে তেমন ঘোরাঘুরি করিনি। আকর্ষণীয় বালিশ মিষ্টি খেলাম। বড় দেখে বাড়ির জন্যও কিনে নিলাম।

রূপাপাত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান সোনা মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, এ বছর মেলার আয়তন বেশ বড় হয়েছে। প্রায় তিন থেকে সাড়ে তিন কিলোমিটার হবে। মেলায় বিভিন্ন পণ্যের পাঁচ থেকে ছয় হাজারের অধিক দোকানের পসরা বসেছে। মাটির খুঁটিতে সাজ, বাতাসা, কদমা কেনা মেলার পুরাতন ঐতিহ্য এখনো রয়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, মেলায় দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে লাখ লাখ মানুষের সমাগম হচ্ছে। মিষ্টির মধ্যে এবার মেলার বিশেষ আকর্ষণ বালিশ মিষ্টি।
এন কে বি নয়ন/এসজে/জেআইএম